Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

বাড়ছে পাওনাদারদের তালিকা, কোটি টাকার খুচরো পাওনা! 'খুশি' রানা সরকার

Bengali Television Payment Issues, Rana Sarkar: যত সময় এগোচ্ছে ততই প্রযোজক রানা সরকারের পাওনাদারদের তালিকা ক্রমশই বাড়তে থাকছে। সম্প্রতি একটি ইমেলের উত্তরে তিনি লেখেন যে এই তালিকা যত বাড়বে ততই ভাল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Rana Sarkar freelancers due 1 crore

ছবি টুইটার ও পিক্সাবে থেকে সংগৃহীত

Bengali Television Payment Issues, Rana Sarkar: বাংলা টেলিভিশনের পেমেন্ট সংক্রান্ত সমস্য়া আরও ঘনীভূত হচ্ছে। একদিকে দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র পাঁচটি ধারাবাহিকের ইউনিটের শিল্পী-টেকনিসিয়ানরা গড়ে প্রায় চার মাস অপেক্ষা করে রয়েছেন তাঁদের বকেয়া পারিশ্রমিকের জন্য়, অন্যদিকে সুব্রত রায় প্রোডাকশন্স-এর করুণাময়ী রাণী রাসমণি, দেবী চৌধুরাণী-সহ বিভিন্ন ইউনিটে টেকনিসিয়ানরা আংশিক ধর্মঘট করছেন মাঝেমধ্যেই। এরই মধ্য়ে ক্রমশই বেড়ে চলেছে প্রযোজক রানা সরকারের পাওনাদারদের তালিকা। সম্প্রতি রানা সরকারের বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করেছেন অথচ টেকনিসিয়ান্স গিল্ড বা আর্টিস্টস ফোরামের সদস্য নন, এমন পেশাদারেরা সমবেত ভাবে একটি ইমেল মারফত প্রযোজকের কাছে তাঁদের প্রাপ্য় টাকার দাবি জানিয়েছেন এবং এতে বেশ খুশি হয়েছেন প্রযোজক, এমনটাই রয়েছে তাঁর ইমেল বার্তায়। কেন খুশি তার কারণটাও অবশ্য় জানিয়েছেন।

Advertisment

শুধুমাত্র আর্টিস্টস ফোরামের সদস্য শিল্পী ও ফেডারেশনের সদস্য টেকনিসিয়ানরা ছাড়াও আরও বহু পেশাদারেরা রয়েছেন যাঁরা নানা ভাবে যুক্ত ছিলেন দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র বিভিন্ন ধারাবাহিকের সঙ্গে। এর মধ্য়ে রয়েছেন ফ্রিলান্সার কস্টিউম ডিজাইনার, প্রপস সাপ্লায়ার, ফ্লোরিস্ট, কোরিওগ্রাফাররা। আবার নামী সঙ্গীত পরিচালক, অভিজ্ঞ গ্রাফিক্স ডিজাইনার ও দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র অফিসে কর্মরত ছিলেন এমনও মানুষও রয়েছেন। যেহেতু তাঁরা ফোরাম বা ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত নন, তাই এতদিন তাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগেই মূলত প্রাপ্য টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু তাতে খুব একটা ফল পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: Bengali Television Payment Issues: রানা সরকারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিলেন স্বরূপ বিশ্বাস

আর্টিস্টস ফোরাম যেন তাঁদের কথাও মাথায় রাখেন বকেয়া টাকা উদ্ধারের এই আন্দোলনে, সেই আর্জি জানিয়ে সম্প্রতি তাঁরা একজোট হয়ে ইমেল করেছেন ফোরামকে এবং পাশাপাশি প্রাপ্য় টাকার দাবিতে মেল করেছেন প্রযোজক রানা সরকারকে। সেই ইমেলের উত্তরে প্রথমে রানা সরকার জানান যে তিনি বকেয়া টাকা দিয়ে দেবেন সেকথা আগেও জানিয়েছেন কিন্তু চ্যানেলের থেকে এখনও কোনও টাকা পাননি তাই তিনি পেমেন্ট করতে পারছেন না। ওই মেলটি মার্ক করা ছিল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্য়ায়-সহ তিনটি চ্য়ানেলের উচ্চপদস্থ কর্তাদের। প্রযোজক ওই মেলের উত্তরে এও অভিযোগ করেন যে প্রাপ্য় টাকার জন্য় আবেদনকারীরা তাঁর নামে কুৎসা করতে চাইছেন।

Rana Sarkar Mails বাঁদিকে আবেদনকারীদের মেলের অংশ ডানদিকে রানা সরকারের উত্তরের অংশবিশেষ।

প্রযোজকের মেলের উত্তরে আবারও একটি মেল করেন প্রাপ্য় টাকার আবেদনকারীরা। তাঁরা সেখানে বলেন যে কুৎসা করার কোনও অভিপ্রায় তাঁদের নেই। তাঁরা শুধু বকেয়া টাকার জন্য়ই আবারও আবেদন জানাচ্ছেন। দ্বিতীয় এই মেলের উত্তরে প্রযোজক লেখেন, প্রাপ্য় টাকার দাবিতে তাঁরা যে একজোট হয়ে মেল করছেন তাতে তিনি খুশি কারণ এর ফলে চ্য়ানেলের থেকে তাঁর নিজের প্রাপ্য, বকেয়া টাকা পেতে সুবিধা হবে।

আরও পড়ুন: পেমেন্ট নিয়ে অসন্তোষে ব্যাহত ‘দেবী চৌধুরাণী’-র শুটিং

এই প্রসঙ্গে আবেদনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁদের অনেকেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানিয়েছেন যে বকেয়া টাকা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বেগের মধ্য়ে রয়েছেন তাঁরা। অনেকেই তাঁদের প্রাপ্য় টাকার পরিমাণও জানালেন। দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার পাঁচটি প্রজেক্টের কোরিওগ্রাফার গৌরব ঘোষাল ১ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা পান। জুনিয়র আর্টিস্টস সাপ্লায়ার নির্মল কুমার সর্দার পাঁচটি প্রজেক্টের জন্য় ২৪ লক্ষ টাকা পাবেন। দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার গ্রাফিক্স টিম-এর সব মিলিয়ে বাকি রয়েছে প্রায় ৫-৬ লক্ষ টাকা। পেশাদারদের এই তালিকায় রয়েছেন সঙ্গীত পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, দেবজিৎ রায় এবং বিখ্য়াত কোরিওগ্রাফার সুদর্শন চক্রবর্তীও।

ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের প্রায় ৪ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা বাকি রয়েছে। এর মধ্যে ৬৯ হাজার শুধুমাত্র জিএসটি-বাবদ। দেবজিৎ রায়ের বাকি রয়েছে প্রায় ১৪ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। গত বছর স্টার জলসা-য় সম্প্রচারিত মহালয়া অনুষ্ঠানের প্রযোজনার দায়িত্বে ছিল দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া। ওই অনুষ্ঠানের কোরিওগ্রাফি করেন সুদর্শন চক্রবর্তী। তাঁর পারিশ্রমিক বাবদ ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা তিনি এখনও পাননি।

এছাড়া রয়েছেন খাবার সরবরাহকারী, জল সরবরাহকারী থেকে শুরু করে আরও অনেকেই, যাঁরা দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার বিভিন্ন প্রজেক্টের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত ছিলেন, কিন্তু ফোরাম বা ফেডারেশনের সদস্য নন। এছাড়া অদিতি রায় ও অরিন্দম পাল, যাঁরা রানা সরকারে সংস্থায় ডিরেক্টর পদে ছিলেন তাঁদেরও বহু লক্ষ টাকা বাকি রয়েছে, এমনটাই জানা গিয়েছে। আমি সিরাজের বেগম-এর কস্টিউম ডিজাইনার নন্দিনী সেনগুপ্তের ৮৭,৫০০ টাকা বকেয়া রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘সিরিয়ালের কলটাইম অনেকটা অফিস যাওয়ার মতো’: অদ্রিজা রায়

এই তালিকা ক্রমশই দীর্ঘ হচ্ছে এবং এখনও পর্যন্ত যা তথ্য় হাতে এসেছে, সেই অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে যে শিল্পী ও টেকনিসিয়ানদের বকেয়া বাদ দিলে অসংগঠিত এই পেশাদার ও সাপ্লায়ারদের বকেয়া টাকার পরিমাণ প্রায় ১ কোটির কাছাকাছি। রানা সরকার ওই আবেদনকারীদের মেলের উত্তরে বার বার উল্লেখ করেছেন যে এই বিপুল পরিমাণ টাকা বাকি রাখার কারণ, তিনি সংশ্লিষ্ট চ্য়ানেলগুলির থেকে এখনও টাকা পাননি।

শিল্পী ও টেকনিসিয়ানদের বকেয়া টাকার পেমেন্ট চ্য়ানেল সরাসরি করবে তাই নো অবজেকশন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন। রানা সরকার এখনও পর্যন্ত সেই এনওসি জমা দেননি, ফোরাম সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। কিন্তু উপরোক্ত এই পেশাদারদের প্রাপ্য় টাকা প্রযোজকের সরাসরি মেটানোর কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও রানা সরকার বলছেন, চ্যানেল টাকা দিচ্ছে না বলেই তিনি পেমেন্ট করতে পারছেন না।

প্রশ্ন হল, শিল্পী ও টেকনিসিয়ানদের প্রাপ্য় বাদে বাকি টাকা তবে কীভাবে উদ্ধার হবে এবং শিল্পী-টেকনিসিয়ানদের পেমেন্টের জন্য় প্রয়োজনীয় এনওসি যদি জমা না দেওয়া হয়, তবে কি সংশ্লিষ্ট চ্য়ানেলগুলি প্রযোজকের বাকি পাওনাগুলি মেটাবে না? তবে কি এই বকেয়া পেমেন্টের সমগ্র বিষয়টি একটি দুষ্টচক্রের মতোই আবর্তিত হতে থাকবে? আর কিছু মানুষ তাঁদের প্রাপ্য টাকার জন্য় আবেদন-নিবেদন করেই যাবেন অনির্দিষ্টকাল ধরে?

Bengali Serial Bengali Television
Advertisment