Rani Rashmoni actress Mishor Bose: নাম সোহিনী হলেও টেলিজগতে মূলত মিশর নামেই পরিচিত। সম্প্রতি 'করুণাময়ী রাণী রাসমণি' ধারাবাহিকে দিগম্বর মিত্রের স্ত্রীর ভূমিকায় এসেছেন। অভিনয় তাঁর প্রথম প্যাশন হলেও পরিবারের ঠিক ইচ্ছে ছিল না যে তিনি এই পেশা বেছে নেন। তাই প্রাথমিকভাবে তাঁকে চাকরিই করতে হয় বেশ কিছু বছর। কিন্তু কিছুটা অভিনয়ের প্রতি টান ও কিছুটা পরিস্থিতির কারণে শেষ পর্যন্ত এই জগতেই ফিরে আসেন সোহিনী।
''২০০৬-এ আমি একটা টেলিফিল্ম করেছিলাম, কিন্তু তখন আমার বাড়ি থেকে ঠিক এই ব্যাপারে এগোনোর উৎসাহ বা অনুমতি ছিল না। তাই আমি পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করতে শুরু করলাম। টুরিজম ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করেছি আমি'', বলেন মিশর, ''তার পরে চাকরি পেলাম এয়ার ইন্ডিয়া-র গ্রাউন্ড স্টাফ হিসেবে। কিন্তু ছোট থেকেই নাচ শিখতাম, কোহিনূর সেন বরাটের সঙ্গে অনেকদিন কাজ করেছি, সেই সূত্রেই কিছু কনট্যাক্টস বাড়তে লাগল কিন্তু পুরোপুরি এই পেশায় এসেছি ২০১৭ সালে।''
আরও পড়ুন: ডিজনি-র হোস্ট থেকে বলিউড নায়িকা! এক নজরে তারার কেরিয়ারগ্রাফ
মিশর ওরফে সোহিনী জানালেন যে তাঁর এই প্রত্যাবর্তনটা পুরোপুরি পরিকল্পিত ছিল না। পরিস্থিতি কিছুটা তাঁকে বাধ্য করেছিল। কিন্তু যখন চাকরি ছেড়ে অন্য কিছু কী করা যায়, সেই নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন, তখন প্রথমেই অভিনয় জগতে ফিরে যাওয়ার কথাই ভাবেন তিনি। ২০১৫ সালে তিনি চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন অসুস্থতার কারণে। সুস্থ হয়ে ওঠার পরে তিনি নতুন করে শুরু করেন অভিনয় চর্চা। পুরোপুরি পেশাদার হিসেবে অভিনয়ে আসেন ২০১৭ সাল থেকে, এমনটাই জানালেন তিনি।
প্রাথমিকভাবে থিয়েটার দিয়ে শুরু, তার পরে ধারাবাহিকের পার্শ্বচরিত্রের সুযোগ আসতে থাকে। দুটি ছবিও করেছেন মিশর ইতিমধ্যে-- একটি বাংলা ও একটি কন্নড় ছবি। ''আমি প্রিয়াঙ্কা (ত্রিবেদী) উপেন্দ্রর সঙ্গে একটি কন্নড় ছবি করেছি-- দেবকী। ওখানে একজন ইনভেস্টিগেটরের চরিত্র ছিল যে প্রস্টিটিউট সেজে মূল চরিত্রর হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। সেকেন্ড হাফের পরে অনেকটাই ছিল আমার অংশ। আর একটা বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছি যেটা এখনও রিলিজ হয়নি-- 'স্বর্ণমুদ্রা'। নেপালে শুট হয়েছিল ২০১৪ সালে। রিলিজ হলে বাংলায় প্রথম মহিলা ডিটেকটিভ ছবি ওটাই হতো'', বলেন মিশর।
তাঁর এই স্ক্রিন নামটি বেশ অদ্ভুত। সোহিনী জানালেন যে অভিনয়ের একদম গোড়ার দিকে মিশর নামে একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। পরে ওই নামটিই বেশি প্রচলিত হয়ে যায় টেলিপাড়ায়। সোশাল মিডিয়াতেও মিশর নামেই পরিচিত তিনি। সান বাংলা-র 'গ্যাংস্টার গঙ্গা' ধারাবাহিকের পরে আকাশ ৮-এর 'ওঁ গুরবে নমঃ'-তে আনন্দময়ী মায়ের গল্পটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে সুযোগ আসে। কালারস বাংলা-র 'কনক-কাঁকন' ধারাবাহিকে মিশর-অভিনীত টুসি চরিত্রটিও বেশ সাড়া ফেলেছিল। তবে টেলিদর্শকের কাছে তিনি এই মুহূর্তে বিশেষভাবে পরিচিত 'করুণাময়ী রাণী রাসমণি'-র চরিত্রের জন্য।
আরও পড়ুন: সোনাগাছির মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন লীনা
ওই ধারাবাহিকে মাসখানেক হল শুরু হয়েছে রামকৃষ্ণদেবের পরিণত বয়সের ট্র্যাকটি। শ্রীরামকৃষ্ণের অত্যন্ত ভক্ত ছিলেন ঝামাপুকুরের দিগম্বর মিত্র। তাঁর বাড়িতে দীর্ঘদিন বসবাস করেছিলেন তিনি। দিগম্বর মিত্র ও তাঁর স্ত্রী দুজনেই তাঁর আধ্যাত্মিক উপদেশ অনুসরণ করতেন। ধারাবাহিকে দিগম্বর মিত্রের স্ত্রীকে গিন্নিমা বলেই সম্বোধন করা হয় সংলাপে। তবে আগামী বছর একটি বড় ব্রেক পেতে চলেছেন ওয়েবে। একটি বড় বলিউড প্রযোজনা সংস্থার হিন্দি ওয়েবসিরিজে দেখা যাবে তাঁকে যেটির স্ট্রিমিং হবে নেটফ্লিক্সে। এখনই ওই প্রজেক্ট নিয়ে কিছু বলার অনুমতি নেই অভিনেত্রীর, এমনটাই জানালেন।
''আমি মুম্বইয়ের একটি কাস্টিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। ওই এজেন্সি থেকেই অডিশন টিম এসেছিল কলকাতায়। সেখানে আমি সিলেক্ট হই। এই প্রজেক্টের নাম বা প্রযোজনা সংস্থার নাম, কোনও কিছু নিয়েই কথা বলা বারণ এখন কিন্তু আমার কাছে খুবই বড় সুযোগ ছিল ওটা যা সম্ভবত আগামী বছরই দেখতে পাবেন সবাই'', জানালেন মিশর।