Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

নগরকীর্তন থেকে প্রেম, কী বললেন ঋদ্ধি?

"চার পাতার চিঠি লিখে, প্রচন্ড ভয়ে ভয়ে ওর বাড়িতে একটা বই দেওয়ার নাম করে গিয়ে বইয়ের ফাঁকে চিঠিটা ঢুকিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। উত্তরের অপেক্ষায় ছিলাম।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় কি গল্পচোর? বিতর্কে ইতি টানলেন স্বপ্নময়

নগরকীর্তন ছবিতে ঋদ্ধি সেন।

'নগরকীর্তনে' অভিনয় করার সময় বারবার 'ড্যানিশ গার্ল' দেখেছেন ঋদ্ধি। প্রয়োজনে শটের যাওয়ার আগে ছবির সিনও দেখে নিয়েছেন। এই ছবির জন্যই জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ঋদ্ধি সেন। 'নগরকীর্তন' মুক্তি পাওয়ার আগে আড্ডা হল সিনেমা থেকে প্রেম নিয়ে:

Advertisment

জাতীয় পুরস্কারের খবর প্রথম কে দিয়েছিলেন?

(একটু ভেবে) মা! অনেকেই জানিয়েছিলেন। প্রথমে জানতে পেরেছিলাম, বেস্ট মেকআপ আর কস্টিউম পেয়েছে। পরে জুরি, সেটা মা জানায়।

আর আপনি প্রথম কাকে খবর দিয়েছিলেন?

আমি কৌশিক কাকুকেই (পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলি) প্রথম ফোনটা করি। যদিও ততক্ষণে কৌশিক কাকু জেনে গিয়েছেন। তারপরে বান্ধবী অর্থাৎ সুরঙ্গনাকে ফোন করি।

কী বললেন সুরঙ্গনা?

ও তো প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেনি। পনেরো-কুড়ি মিনিট একা বসে ছিল গাড়িতে, তারপর বুঝেছে। মজার ব্যাপার হলো, সেদিন সবাই সেলিব্রেট করেছে - মা, বাবা। সুরঙ্গনা বাড়িতে কেক বানিয়েছে। আর আমি সেদিনও শুটিং করেছি, তার পরের দু'দিনও শুটিং করেছি।

সেলিব্রেট করতে ইচ্ছে তো করছিল নিশ্চয়ই...

আমি বাড়ি যাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। তবে আমার মনে হয় এর থেকে ভাল উদযাপন আর হতে পারত না, যে কাজের জন্য পুরস্কার পাওয়া, ১০ মিনিটের বিরতির পর সেই কাজেই ফেরৎ যাওয়া। তবে আফশোসও আছে। আমার দুই দাদু (শ্যামল সেন ও দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায়) পুরস্কারটা দেখে যেতে পারলেন না।

riddhi sen নগরকীর্তন ছবিতে পুঁটির চরিত্রে ঋদ্ধি সেন

আপনার বয়সে এই সাফল্য তো ঈর্ষনীয়,শুধু জাতীয় পুরস্কারের কথা নয় কিন্তু...

না না, আমি বুঝতে পারছি। আপনি বলতে চাইছেন ২১ বছর বয়সে আমি যে ধরণের চরিত্রগুলো পেয়েছি তো!

২০১৩ থেকে কাজ শুরু করেছি, এখন ২০১৯। এই বয়সে সকলেই একটা ট্রানজিশনের মধ্যে দিয়ে যায়, কণ্ঠস্বর বদলে যায়, চেহারা পাল্টে যায়। এই বয়সে এমনিই চরিত্র কম পাওয়া যায়। সেখানে 'চৌরঙ্গা', 'পার্চড' কিংবা 'চিল্ড্রেন অফ ওয়ার' হোক ...আবার 'ওপেনটি বায়োস্কোপ', 'লোডশেডিং', 'ভূমি', 'হেলিকপ্টার ইলা', 'নগরকীর্তন'... প্রত্যেকটা চরিত্রই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড কতটা সাহায্য করেছে?

জিরো। কারণ আমার প্রথম ছবি ছিল (সুজয় ঘোষের) 'কাহানি'। ছবিটাতে আমাকে নেওয়ার কথা বলেন শান্তিকাকু (শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়) ও খরাজ কাকু (খরাজ মুখোপাধ্যায়)। বাবা-মা নয় কিন্তু।

আরও পড়ুন: বীরেন্দ্রকৃষ্ণের বদলে উত্তম, প্রকাশ্যে ‘মহালয়া’র ট্রেলার

শান্তিলাল বা খরাজ আপনাকে কৌশিক এবং রেশমির ছেলে হিসেবেই জানেন। সেভাবেই বলেছেন নিশ্চয়ই।

হ্যাঁ! ঋদ্ধি থিয়েটার করে একথা তাঁরা জানতেন। মজার ব্যাপার হলো, বাবাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ও কী পারিশ্রমিক নেবে। বাবার বক্তব্য ছিল, ক্লাস এইটে আবার পারিশ্রমিক কীসের? 'কাহানির' জন্য কোনও টাকা নিইনি। হিন্দির যোগাযোগগুলো চেন রিঅ্যাকশনের মতো এসেছিল। 'চিলড্রেন অফ ওয়ার' দেখে 'চৌরঙ্গা' আসে। সেটা দেখে 'পার্চড', 'ভূমি'। প্রদীপ সরকার আমার সঙ্গে একটা বিজ্ঞাপন করেছিলেন। সেখানে তাঁর ভাল লাগে বলে 'ইলা'...এভাবেই।

riddhi sen ছবির একটি দৃশ্যে শঙ্করীর সঙ্গে ঋদ্ধি 

বাংলা ছবিতে?

কামিং টু কলকাতা, ইন টপিক নেপোটিজম। সারা ভারতে প্রযোজক-পরিচালকরা নিজেদের ছেলে বা মেয়েকে লঞ্চ করেছেন। কিন্তু বিষয়টা হলো, কারও একটা ছবিতেই শেষ হয়ে গিয়েছে, আবার রণবীর কাপুর, আলিয়া ভাটও বেরিয়ে এসেছে। তবে এই চেনাশোনাটা সুবিধের থেকে অনেক বেশি সমস্যা তৈরি করে।

পি আর (জনসংযোগ) কতটা করলেন?

জিরো! পি আর আমি পারি না করতে। যারা আমার পরিবারকে চেনেন তাঁরা জানেন, দু'জনে পি আর করার চেষ্টা করেন নি। 'ওপেনটি বায়োস্কোপের' পর থেকে সোশাল মিডিয়া শুরু করি, তার আগে চারটে ছবি করা হয়ে গিয়েছে। আমার অনেক চেনা পরিচিতদের দেখেছি, তাঁদের কাছে ফেসবুকটা চাকরি। প্রচন্ড পি আর করেন, কিন্তু বছরের শেষে কিচ্ছু দাঁড়ায় না।

ঋত্বিকের মতো অভিনেতা বিপরীতে থাকাটা কতটা চাপ বাড়িয়ে দেয়?

প্রথমত, আমি ঋত্বিকদার সাংঘাতিক ফ্যান। ভীষণ উত্তেজিত ছিলাম কাজটা করব বলে। আসলে ভাল অভিনেতার বড় গুণ হচ্ছে ভাল সহ অভিনেতা হতে পারা। আর ঋত্বিকদা এমন এক জন সহ অভিনেতা যে পুরো ছবিটা নিয়ে ভাবে। কোনও দিন বসিয়ে বলেনি শোন, এই কাজটা তুই এভাবে কর। তবে মধু আর পুঁটির প্রেমের দৃশ্য অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রেমের দৃশ্য হয়ে থেকে যাবে। সেগুলো হতে পেরেছে কারণ আমরা চিত্রনাট্যটাতে বিশ্বাস করেছি।

আরও পড়ুন: ‘নগরকীর্তন’ নিয়ে আলাপচারিতায় কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ও ঋত্বিক

এতটা সাফ্যলের পরও মাটিতে পা রাখার মন্ত্রটা কী?

মন্ত্র একটাই। আসলে ২০১৯ এ পৃথিবীতে যত রকমের জিনিস ঘটে চলেছে, তাতে মানুষ ঠিক ততটা তাড়াতাড়ি মনে রেখেছেন ততটাই তাড়াতাড়ি ভুলে যেতে পারেন। এই প্রফেশনটাই তো ভীষণ ইনসিকিওর। সেখানে আমার পরিবার একটা বড় জোরের জায়গা। আর দ্বিতীয়ত, অভিনয়টা আমার প্রচন্ড ভাল লাগার জায়গা। কোনও মূর্খ হলেই এই জায়গাটা নষ্ট করবে। বাবা মা তো সেই কারণেই প্রথাগত পড়াশোনার বাইরে রেখে বলেছে অভিনয়টাই তোমার বিষয়। প্রাইভেটে এগারো, বারো পড়ো।

riddhi surangana ঋদ্ধি ও সুরঙ্গনা। ফোটো- ঋদ্ধির ফেসবুক সৌজন্যে

আর প্রেম?

সুরঙ্গনা। আমার তো ওপেন রিলেশনশিপ।

প্রথম প্রেম?

না না! আমার এর আগে দুটো সম্পর্ক ছিল। একটা ক্লাস এইটে। আর একটা পরে 'ওপেন টি'...র সময়ে ছিল। এটাই মানুষ ভুল করে যে সুরঙ্গনার সঙ্গে আমার সম্পর্ক পরে হয়। তখন ওরও একজন বয়ফ্রেন্ড ছিল। এখন তো চার বছর হয়ে গিয়েছে।

প্রপোজটা কে করেছিল?

আমি আমি। চার পাতার চিঠি লিখে, প্রচন্ড ভয়ে ভয়ে ওর বাড়িতে একটা বই দেওয়ার নাম করে গিয়ে বইয়ের ফাঁকে চিঠিটা ঢুকিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। উত্তরের অপেক্ষায় ছিলাম (হাসি)। একটু পরে ওকে দেখতে পাবেন, আমরা এক জায়গায় যাব।

tollywood riddhi sen
Advertisment