সামাজিক দ্বন্দ্ব, সাম্প্রদায়িক বিভেদের বিষ এখন সিনেপর্দায়! আর সেই বাস্তব প্লট রুপোলি পর্দায় সিনেম্যাটিক মোড়কে ফোটাতে গিয়েই বিপাকে পড়েছেন টলিপাড়ার পরিচালক-প্রযোজকরা। এমনিতেই অতিমারী উত্তরপর্বে বাংলা সিনেমার বাজার মন্দা! তারওপর আবার বয়কটের ডাক যেন 'গোদের ওপর বিষফোঁড়া'! এক সপ্তাহ আগেই রাজ চক্রবর্তীর ধর্মযুদ্ধ নিয়ে নেটপাড়ায় ধুন্ধমার কাণ্ড। এবার সপ্তাহ ঘুরতেই রোষানলে পড়ল 'বিসমিল্লা'।
মুসলিম বাঁশিওয়ালা 'বিসমিল্লা' আর তার প্রেমিকা ফাতিমাকে কেন রাধা-কৃষ্ণের মতো দেখানো হয়েছে? সেই প্রশ্নে জেরবার ছবির নির্মাতারা। কটাক্ষ-সমালোচনা ধেয়ে আসছে অহরহ। বাঁশি, সানাইয়ের সুরে প্রেম-ভালবাসা, হিংসা, অন্তর্দন্দ্বের গল্প দেখানো হয়েছে সিনেমায়। আর দুই ধর্মের এমন অন্তর্মিল দেখাতে গিয়ে রোষানলে পড়তে হল 'বিসমিল্লা' পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তকে।
নেটপাড়া-জুড়ে ইন্দ্রদীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক বিশেষ সম্প্রদায়ের তোষণকারী 'বিসমিল্লা' সিনেমাটি। ভাইরাল এক পোস্ট নিয়েও ধুন্ধুমার। সেই পোস্টের সারমর্ম - 'দক্ষিণ ভারতের সিনেইন্ডাস্ট্রিতে যখন বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠ বন্দেমাতরম স্লোগান উঠেছে, তখন টলিউডের দাবি- বিসমিল্লা বলতেই হবে।' সেই পোস্টের ধার করে একাংশের মত, 'বঙ্কিমচন্দ্রের বাঙালি, বিবেকানন্দের বাঙালি, রবীন্দ্রনাথের বাঙালি, সুভাষচন্দ্রের বাঙালি, অরবিন্দের বাঙালি, এক হাতে গীতা আর এক হাতে তরোয়াল নিয়ে স্বাধীনতার শপথ নেওয়া বাঙালি, বন্দেমাতরম মন্ত্রে দীক্ষিত বাঙালি। বলে কিনা- বলতেই হবে বিসমিল্লা!'
ব্যস ওমনি ওই পোস্ট ভাইরাল। আর সেই থেকেই সূত্রপাত ঋদ্ধি সেন, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় অভিনীত 'বিসমিল্লা' বয়কটের দাবির। নেটপাড়ার একাংশ তো আবার এও অভিযোগ তুলেছে যে, 'বিসমিল্লার মতো সিনেমা হিন্দুবিরোধী।' বয়কট সংস্কৃতি নিয়ে ঋদ্ধি-শুভশ্রীরা সেভাবে মুখ খোলেননি বটে! তবে 'বিশেষ সম্প্রদায়ের তোষণকারী' অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের মন্তব্য, "আমি কৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষিত। প্রত্যহ গুরুমন্ত্র জপ করি। এরপরও যদি কারো কিছু বলার থাকে বলুক।"
<আরও পড়ুন: অনুরাগ কাশ্যপের ‘দোবারা’তে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে, তবুও স্ক্রিনিং থেকে ‘ব্রাত্য’ শাশ্বত!>
প্রসঙ্গত, 'বিসমিল্লা' নিয়ে এত শোরগোলের মাঝেই শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, "শৈশবে প্রতি শুক্রবার আমার ঠাকুমা মাজারে নিয়ে যেতেন ধূপ-মোমবাতি জ্বালাতে। এরকম পরিবেশে তো বড় হইনি আমরা। সিনেমাটা না দেখেই কেন মানুষ বয়কটের দাবি তুলছেন? আর এসব তো আলোচনার বিষয়ই হওয়া উচিত নয়।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন