পর্দায় মিসেস সেনকে আমরা দেখেছি, এবার রিয়েল টু রিল ম্যাডাম সেনগুপ্ত...
ঋতুপর্ণা: আমার কাছে যখন সিনেমার স্ক্রিপ্টটা আসে নিজেও খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তবে বেশ মজা লেগেছিল। টাইটেলটা দেখে তো আমি প্রথমে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এটা কোনও বায়োপিক? তখন বলেছিল না না, এটি আদ্যোপান্ত একটি থ্রিলার মুভি। মিসেস সেন-এ অভিনয় করেছিলাম, যার টইটেল কার্ডটাও বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল। তবে পর্দায় ম্যাডাম সেনগুপ্ত প্রথমবার (ফোনের ওপার প্রাণখোলা হাসি)।
কাছের মানুষদের কাছে তো ঋতুদি, এখন কোন ডাকটা বেশি ভাল লাগছে ঋতুদি নাকি ম্যাডাম সেনগুপ্ত?
ঋতুপর্ণা: ম্যাডাম সেনগুপ্ত ডাকটা তো সুন্দর। প্রফেশনাল ক্ষেত্রে এই ডাকটা অবশ্যই প্রিয়। তবে যাঁরা কাছের মানুষ, যাঁদের সঙ্গে আন্তরিকতা রয়েছে তাঁদের কাছে আমি সবসময় ঋতুদি। ওঁদের মুখে এই ডাকটা খুব মিষ্টি লাগে।
কতটা পথ পেরলে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত থেকে ম্যাডাম সেনগুপ্ত হয়ে ওঠার বৃত্ত সম্পন্ন হয়?
ঋতুপর্ণা: ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত থেকে ম্যাডাম সেনগুপ্ত হয়ে ওঠার জার্নিটা মোটেই খুব একটা সহজ নয়। অনেক পরিশ্রম, বাধা বিপত্তি, কষ্ট পেরিয়ে আজ আমি ম্যাডাম সেনগুপ্ত হয়ে উঠতে পেরেছি। এটা আমার কষ্টের ফল। আর এতটা পথ পেরিয়ে যখন ম্যাডাম খেতাবটা নামের সঙ্গে জুড়ে যায় সেটা সত্যিই গর্বের। একইসঙ্গে চেষ্টা করি সাফল্যের মর্যদা রাখতে। আবার যখন কোনও অ্যাচিভমেন্ট হয় তখন ভাবি সেই জায়গাটা ধরে রাখতে পারব তো?
পর্দার ম্যাডাম সেনগুপ্তের সঙ্গে বাস্তবের ম্যাডাম সেনগুপ্তের কোনও মিল আছে?
ঋতুপর্ণা: এখানে আমার চরিত্রের নাম অনুলেখা। এর সঙ্গে বস্তবের ম্যাডাম সেনগুপ্তের পুরো মিল নেই, তবে কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য আছে।
এখানে কার্টুনিস্টের ভূমিকায়, আপনার পছন্দের কার্টুন কী? এখনও অবসর সময়ে কার্টুন দেখেন?
ঋতুপর্ণা: কার্টুন আমার ভীষণ প্রিয়। নন্টে ফন্টে, বাটুল দি গ্রেট, ডোনাল ডাক, টম অ্যান্ড জেরি, মিস্টার বিনের মতো অনেক কার্টুন আছে যেগুলো আমার খুব প্রিয়। এখনও সময় সুযোগ পেলে দেখি।
ছোটবেলায় কখনও কার্টুন দেখার জন্য বায়না করে মায়ের কাছে বকুনি খেয়েছেন?
ঋতুপর্ণা: আমাদের ছোটবেলায় সেভাবে টিভির রমরমা ছিল না। তখন ছিল কমিকস। অনেকসময় স্কুলে কমিক্স নিয়ে গিয়ে বকুনি খেয়েছি। বাড়িতে পড়াশোনা না করে কমিক্স না পড়ার জন্য মায়ের কাছে বকা খেয়েছি।
দীর্ঘদিনের ফিল্মি কেরিয়ার। এখনও কোনও চরিত্র দেখে মনে হয়, এটা বেশ কঠিন বা চ্যালেঞ্জিং?
ঋতুপর্ণা: এখনও যে কোনও চরিত্রে নির্বাচিত হওয়ার পর ভাল করে হোমওয়ার্ক করি। কারন আজও আমার মনে হয়, একটা চরিত্রকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার জন্য নিজের সেরাটুকু দেওয়ার প্রয়োজন। নিজের ভিতর থেকে কাজের প্রতি সেই আগ্রহ, চিন্তা যদি না থাকে তাহলে কোনও কাজই ভাল হবে না বল আমার মনে হয়। নিজের চরিত্রকে আজও ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করি। চরিত্র নিয়ে কাটাছেঁড়া না করলে বা মনের ভিতর প্রশ্ন না জাগলে সেই কাজ কখনও ভাল হয় না।
বেশ কিছু বাংলা সিনেমা কোটির ক্লাবে পৌঁছেছে। সেই তালিকায় রয়ছে পুরাতনও। বাংলা ছবির সুদিন তাহলে ফিরল...
ঋতুপর্ণা: ভাল সিনেমা হলে কিন্তু, মানুষ নিশ্চয়ই দেখবে। বাংলা সিনমার আরও উন্নতি হোক, বাংলা সিনেমাকে মানুষ আরও বেশি আপন করুক সেটাই আমার চাওয়া। বাংলা সিনেমা এখন নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আটকে নেই। বিদেশের মাটিতেও সাফল্যের মুখ দেখছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আগামী দিনে বাংলা সিনমার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলেই তো আমার মনে হচ্ছে। ভাল কনটেন্টের সঙ্গে আরও বেশি বাংলা সিনেমা তৈরি হওয়া দরকার। দর্শককে ভাল কিছু দিলে তা নিশ্চয়ই গ্রহণযোগ্য হবে। ওটিটির দুনয়ায় একটা চ্যালেঞ্জ তো আছেই।
পুরাতনের পর আর কোনও ছবি প্রযোজনার প্ল্যানিং রয়েছে? পরিচালক হিসেবে নতুন কোনও ভাবনা?
ঋতুপর্ণা: সেই রকম কোনও পরিকল্পনা এখনও পর্যন্ত নেই। আর পরিচালক হিসেবে কাজ করার মতো আত্মবিশ্বাস এখনও তৈরি হয়নি। তার জন্য আরও একটু বেশি পরিশ্রম, একটু বেশি পড়াশোনার প্রয়োজন। যেদিন আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠব, সেদিন ছবি পরিচালনা করে ফেলব।
শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২৫ বছর পর ফিরল, এখন যদি আবার সেই ধাঁচের কোনও ছবিতে কাজের প্রস্তাব পান আগের মতোই ফুল অন এনার্জি নিয়ে ডান্স করবে?
ঋতুপর্ণা: নিশ্চয়ই করব। নাচ তো আমার প্যাশন। তবে সেটা আমার চরিত্রের সঙ্গে অবশ্যই মানানসই হতে হবে তাহলেই করব।