কেকে-কে নিয়ে সমালোচনা। তারপরই মুম্বইয়ের সঙ্গীতশিল্পীর আকস্মিক প্রয়াণ! গত কয়েক দিনে নেটদুনিয়া একেবারে ছিঁড়ে খেয়েছে রূপঙ্কর বাগচিকে (Rupankar Bagchi)। ট্রোল-মিমের পাহাড়। শুক্রবার প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষমা চেয়েও নিস্তার নেই, অব্যহত নেটদুনিয়ায় রূপঙ্করকে কটুক্তি করা পোস্ট। এসবের মাঝেই দুঃখপ্রকাশ করলেন রূপঙ্করের স্ত্রী চৈতালি লাহিড়ি (Chaitali Lahiri)। বললেন, "বরটা বড়ই বোকা।"
“কেকে… কেকে.. হু ইজ কেকে, ম্যান?”, এই প্রশ্নটা ছুঁড়েই ভয়ঙ্কর বিপাকে পড়েছেন রূপঙ্কর বাগচি। বিতর্কিত সেই ভিডিওর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুম্বইয়ের জনপ্রিয় শিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নথের আকস্মিকপ্রয়াণ (KK Death)। তারপর থেকেই নেটদুনিয়ায় সমালোচনা। বিতর্কের ঝড়। কটুক্তির ছয়লাপ। বিনোদনমহলের একাংশ তো বটেই, এমনকী আম-জনতারাও ছেড়ে কথা বলেননি গায়ককে। যাঁদের হয়ে সরব হয়েছিলেন, তাঁরাও পাশে দাঁড়াননি। এবার সেই প্রেক্ষিতেই মনের দুঃখ নিয়ে কবিতা লিখলেন রূপঙ্করের স্ত্রী চৈতালি।
<আরও পড়ুন: ‘নোংরামি বন্ধ করুন! রূপঙ্করদাকে কোণঠাসা করবেন না’, প্রতিবাদী শ্রীলেখা>
"স্যোশাল মিডিয়া তোমার দেওয়া আ্যড্রনালিন রাশ, ছোট্ট পরিবারের জীবনে নামিয়ে এনেছে ত্রাস। দরকার একটা স্মার্টফোন আর মনে একরাশ ঘৃণা, জীবনের যত না পাওয়ার যন্ত্রণা আর কিছু বাহানা। তারপর একটা লম্বা ট্রিপ এমন নেশা কোনো মাদকেই হয়না, উত্তেজনা উত্তেজনা--- উফফ দাদা জীবনে কী পাবো না ভুলেছি সে ভাবনা। এমন একটা বেপরোয়া ঝড়ের মুখে পড়ে, অসহায় সে পরিবারের টীন এজ মায়ের মনে, ধরফরিয়ে বুকটা পোড়ে, বরটা বড়ই বোকা…", এমন লেখাই উঠে এল চৈতালির কলমে (Chaitali Lahiri's Poem)।
প্রসঙ্গত, কেকে-র প্রয়াণের পরই ক্রমাগত হুমকি ফোন গিয়েছে রূপঙ্কর ও তাঁর স্ত্রীর কাছে। এমনকী খুনের হুমকি খেয়ে তাঁরা ছুটেও গিয়েছেন টালা থানায় অভিযোগ জানাতে। গায়কের এক মেয়েও রয়েছে। শ্রীলেখা মিত্র যদিও এবিষয়ে আশঙ্কার প্রকাশ করে জানিয়েছেন, "রূপঙ্করদার একটা ছোট মেয়ে রয়েছে। ওঁর কথা ভাবুন। আর ট্রোল করা বন্ধ করুন।" তবে নেটদুনিয়া আছে নেটদুনিয়াতেই। থামে তো নি-ই। বরং, কটাক্ষের মাত্রা আরও বেড়েছে।
<আরও পড়ুন: শাস্তি পেলেন রূপঙ্কর! বাজবে না আর ‘মিও আমোরে..’ গান>
সেদিন ওই বিতর্কিত ভিডিওয় যাদের প্রশংসা করে সরব হয়েছিলেন, তাঁরাও রূপঙ্করের পাশে দাঁড়াননি। সেই প্রেক্ষিতেই চৈতালি লিখলেন, "দুনিয়াদারিতে নেহাৎ কাঁচা শিল্প যাপনে মগ্ন থাকা। এমন কথা কি বলতে হয়, তুমি কি সমাজের হোতা? কে দিয়েছে মাথার দিব্যি? কেন নড়ল মাথার পোকা? নিজেকে নিয়ে বাঁচো, নিজের আখের গোছাও ওগো-- মেয়েটার ভবিষ্যৎ আছে, আমার কথাটাও ভাবো।
ভালোই হল চিনতে পেল বন্ধু এবং বাসা, সময় চেনায় কোনটা সত্যি আর কোনটা মরিচীকা.. তোমাদেরও ঘরে জানি আছে এমন বোন ও মা.. কেমন হবে তাদের জন্য এমন সমালোচনা? হুমকী ফোন আর অশ্লীলতা ভাষায় ও ভঙ্গীতে, বিনিদ্র রাত দুমুঠো ভাত মুখেও না রোচে। তবুও ছিলাম নীরব জানি ওটাই তখন শ্রেয় যতই ভাবি আমার শহর আমার বড় প্রিয়। অচেনা আজ ঠেকে কেন চেনা লোকের মুখ বদলে গেল চোখের ভাষা বেড়িয়ে এলো দাঁত নখ।…"
বাবাকে নিয়ে এমন সমালোচনা, কটুক্তি দেখতে হচ্ছে রূপঙ্করের মেয়েকেও। সেই প্রসঙ্গও উল্লেখ করলেন রূপঙ্করের স্ত্রী- "ছোট্ট মেয়ে থই পায় না বাবার বিশেষণে, ভাবছে যতই চোখের পাতা ভিজছে অভিমানে, অবুঝ তাকে কী যে বলি-- ওরে ভাবিস না রে, ওসব হল রাগের কথা, ধরতে হয় না ওমন করে। ঘর সামলাই কাজ সামলাই মুখে হাসি রেখে, কেউ যেন না বোঝে চোখের কালি রাখি ঢেকে।
সত্যিকারের মানুষ কিছু ঘিরে ছিলেন পাশ, তাদেরও নানান হেনস্তায় কেটেছে দিনরাত। তাদের বলি তোমাদের আমায় লড়াকু বলেই জানা, এক্ষেত্রে ভুমিকা আমার স্ত্রী ও যশোদা মা।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন