Saaho movie cast: প্রভাস, শ্রদ্ধা কাপুর, মুরলী শর্মা, নীল নীতিন মুকেশ, চাঙ্কি পাণ্ডে, মহেশ মাঞ্জরেকর, মন্দিরা বেদী, প্রকাশ বেলাওয়াড়ি, অরুণ বিজয়, জ্যাকি শ্রফ, ইভলিন শর্মা
Saaho movie director: সুজিত
Saaho movie rating: ১.৫/৫
শুরুটা কিন্তু একদম আগুন - ঝকঝকে, হাই-অক্টেন অ্যাকশন থ্রিলার। অসম্ভব রকমের উঁচু বাড়িঘর, এত চকচকে যে মনে হবে সোনা দিয়ে বাঁধানো। কালো রঙের ডিজাইনার পোশাক-আশাক পরা একদল রীতিমত আন্তর্জাতিক গুন্ডা, চোখ ধাঁধানো তাদের আস্তানা, লাস্যময়ী তাদের যত নর্মসহচরী। অন্যদিকে উর্দি পরা বা বিনা উর্দির পুলিশ, কিছু দুষ্টু লোক যারা ভালোও হতে পারে, আবার কিছু ভালো লোক যারা অস্বাভাবিক রকমের খারাপও হতে পারে। সবাই মিলে খুঁজছে বিপুল পরিমাণ টাকা, যা লুকোনো রয়েছে কোথাও। সবার ওপরে রয়েছেন প্রভাস, যিনি 'বাহুবলী'-র বিশালাকার ক্যানভাসের ওপর দিয়ে রূপকথার জয়ের দিকে স্বচ্ছন্দে হেঁটে চলে যান। স্রেফ গায়ের জোরে রাস্তা খুঁজে নেন।
সুতরাং একটি থ্রিলারের যা কিছু প্রয়োজন, এখানে সবই মজুত। আপনি পপকর্ন নিয়ে বসে পড়েন এই আশায় যে এবার গাড়ি চলতে শুরু করবে জেট স্পিডে, এবং ক্রমাগত দমবন্ধ করা অ্যাকশনের আনন্দ উপভোগ করবেন। পরিবর্তে কী জোটে? দু'কথায় বলতে গেলে - ভিজে ন্যাতা।
আরও পড়ুন, ক্রিকেট, লাক আর প্রেম নিয়ে ‘পয়সা উসুল’! আসছে সোনমের নতুন ছবি
চরিত্র আসে যায়, বোমার মতো গাড়ি ফাটে চারদিকে, বাজুকা হাতে রাগে গরগর করে মাটি ফুঁড়ে ওঠে কিছু লোক, প্রাচীন রোমানদের ধাঁচে তৈরি রঙ্গভূমিতে লড়া হয় ডুয়েল (এর বেশি না জানাই মঙ্গল)। বোঝাই যাচ্ছে, প্লট (সেটা আবার কী?)-এর দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে অস্ত্রভাণ্ডারে যা যা আছে, সব আমাদের দিকে ছুড়ে মারলে কয়েকটা তো লাগবেই।
আরও পড়ুন, প্রশ্ন করলে কি ‘স্বার্থে ঘা’ লাগে, জানতে চাইলেন সৃজিত?
দুঃখের বিষয় হলো, বিশেষ কিছু লাগে না। 'বাহুবলী'-তে তাঁর মৃদু হাসি এবং পাথরে কোঁদা উদোম শরীরের দৌলতে তাক লাগিয়েছিলেন প্রভাস, এই ছবিতেও সে সুযোগ যে অল্পবিস্তর পান নি তা নয়। তাছাড়াও সুযোগ পেয়েছেন পাহাড় থেকে ঝাঁপ দেওয়ার, উঁচু বাড়ি থেকে ঝাঁপ দেওয়ার, ভীষণ কেতাদুরস্ত গাড়ি চালানোর, আবার মহিলা পুলিশ অনিতার সঙ্গে প্রেম করতে গিয়ে কিছু হালকা রোম্যান্টিক সংলাপও বলার। সঙ্গে অবশ্যই রয়েছে সুদৃশ্য পটভূমিকায় নাচা-গানা।
ট্রাকের মতো সাইজের গুণ্ডাদের দিকে ধারালো জিনিস ছুড়তে যে প্রভাসের জুড়ি মিলতে পারে না, সে তো তাঁকে দেখলেই বোঝা যায়। তা বাদেও কোনোরকম পরিশ্রম ছাড়াই গুণ্ডাবাহিনীকে একাই মেরেধরে বৃন্দাবন দেখিয়ে দেন। আবার ঠাট্টা-তামাশাও করেন দিব্যি, প্রয়োজনে সূক্ষ্ম অভিনয়ও পারেন। এই বিশালবপু ছবিতে সেই মুহূর্তগুলিই যা একটু সহনীয়। এছাড়াও বেশ কিছু ভালো সংলাপ পেয়েছেন চাঙ্কি পাণ্ডে, এবং সুযোগের পুরোদস্তুর সদ্ব্যবহার করেছেন অভিজ্ঞ এই অভিনেতা।
আরও পড়ুন, সন্তান কি বাবা-মায়ের ইচ্ছাপূরণের পুতুল? প্রশ্ন তুলবে ‘আলোছায়া’
বাকিরা, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন ধূর্ত গোয়েন্দার ভূমিকায় একেবারেই বেমানান শ্রদ্ধাও, ওই যে বললাম আসেন এবং যান। জ্যাকি শ্রফ, যাঁর অসততার মধ্যেও বরাবরই আমরা পেয়েছি এক দুর্নিবার আকর্ষণ, এই ছবিতে ছোট্ট রোলে একেবারেই বরবাদ। অসামান্য সুন্দর সুন্দর শাড়িতে মন্দিরা বেদী শত চেষ্টাতেও মন্দ হতে অক্ষম। বাকি রইলেন নীল নীতিন মুকেশ, যিনি স্রেফ আরও একটি মুখ হয়েই রয়ে যান এই অনন্ত দুমদাম, ঢিসুম-ঢিসুম, ওই-দেখ-আরও-একটা-লাশ-পড়ল-কিন্তু-তাতে-কী-এসে-যায় এর বন্যায়।