/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/09/sada-2025-09-09-11-34-41.jpg)
যা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে...
অনেকে মনে করেন শোবিজে প্রবেশ করাটাই সবচেয়ে কঠিন, কিন্তু সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ শুরু হয় সেখানে টিকে থাকার লড়াই থেকে। বিশেষত নারীদের জন্য, যাদেরকে শুধু নারী বিদ্বেষ ও লিঙ্গ বৈষম্যের সঙ্গেই নয়, বয়সের সীমাবদ্ধতার সাথেও লড়াই করতে হয়। অনেক সময়ই তাদের সীমিত ভূমিকায় ঠেলে দেওয়া হয়। এরই মধ্যে ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যাও যুক্ত হলে লড়াইটা আরও কঠিন হয়ে ওঠে। দক্ষিণী অভিনেত্রী সাদার জীবনকথা তারই প্রমাণ। একসময় তিনি ছিলেন তেলুগু, তামিল ও কন্নড় ছবির অন্যতম জনপ্রিয় মুখ। কিন্তু গত দশকে তার ক্যারিয়ারে ভাটা সবকিছু যেন পাল্টে দিল। শেষ সাত বছরে মাত্র তিনটি ছবিতে কাজ করেছেন।
সাদার জন্ম কর্ণাটকের বেলগাভিতে, মুসলিম বাবা ও হিন্দু মায়ের ঘরে। পরিবারের বিরোধিতার কারণে বাবা-মা রত্নগিরিতে চলে আসেন। একমাত্র মেয়ে সাদা, ছোট থেকেই নাচ ভালোবাসতেন, মাধুরী দীক্ষিত ছিলেন তার অনুপ্রেরণা। কলেজ জীবনে পড়াশোনার ফাঁকেই তার জীবনে বড় সুযোগ আসে—তেলুগু সিনেমা জয়ম (২০০২)। তেজা পরিচালিত ছবিতে নীথিনের বিপরীতে অভিনয় করে তিনি রাতারাতি খ্যাতি পান এবং সেরা অভিনেত্রীর জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও জেতেন। এরপর একে একে প্রাণম, নাগাসহ একাধিক ছবিতে কাজ করেন।
Dhanashree Verma: ‘গোল্ড ডিগার’ ট্যাগে কটাক্ষ, রিয়েলিটি শো-তে ইউজিকে কড়া জবাব ধনশ্রীর
২০০৫ সালে এস. শঙ্করের ব্লকবাস্টার আন্নিয়ান সাদার ক্যারিয়ারে মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বিক্রমের বিপরীতে তার অভিনয় তাকে দক্ষিণী ছবির প্রথম সারির নায়িকাদের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করে। সেই সময়ে অজিত কুমার, নন্দমুরি বালকৃষ্ণ, মাধবন, সিদ্ধার্থ সহ একাধিক তারকার সাথে তিনি কাজ করেন। তবে ধারাবাহিকভাবে সফলতা আসেনি। ২০০৮ সালে মালায়ালম ও হিন্দি ছবিতে পা রাখলেও তেমন সাড়া পাননি। ধীরে ধীরে ছবির সংখ্যা কমতে থাকে, ২০১৫ সালের মধ্যে বছরে একটির বেশি ছবি করতে দেখা যায়নি।
এদিকে জীবনে আসে বড় ধাক্কা! মায়ের ক্যানসার ধরা পড়ে। সাদা পুরো মনোযোগ মায়ের চিকিৎসার দিকে দেন। একই সময়ে সিনেমার বাইরে টেলিভিশনকেও বেছে নেন। জনপ্রিয় নাচের অনুষ্ঠান ধী-এর বিচারক হিসেবে তাকে নিয়মিত দেখা যায়।
২০১৮ সালে টর্চলাইট ছবিতে যৌনকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, কিন্তু সেই সাফল্য কাজে লাগাতে পারেননি। গত কয়েক বছরে তিনি মাত্র দুটি ছবিতে অভিনয় করেছেন—অহিংসা এবং আদিকেশব (২০২৩)। তবে বড় পর্দায় তার অনিয়মিত উপস্থিতির মাঝেও তিনি নতুন পরিচয়ে আলোচনায় আসেন। প্রাণী অধিকারকর্মী ও বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী হিসেবে। তিনি FIAPO-র (Federation of Indian Animal Protection Organisations) সঙ্গে যুক্ত এবং নিয়মিত প্রাণী উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট এখন যেন এক আলোকচিত্র অ্যালবাম।
একসময় যে অভিনেত্রী ছিলেন দক্ষিণের বড় বাজি, বিরাট বাজেটের অভিনেত্রী, আজ তিনি নিজের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ভিন্ন পথে- ক্যামেরার সামনে কম, তবে ক্যামেরার পেছনে প্রকৃতির সান্নিধ্যে আরও বেশি।