Sonar Kella: সালটা ছিল ১৯৭৪। বাংলা সিনেমার ইতিহাসে সাতের দশক নিঃসন্দেহে স্বর্ণযুগ। কারণ ওই বছর মুক্তি পেয়েছিল কিংবদন্তী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের নির্দেশনায় তৈরি কালজয়ী ছবি সোনার কেল্লা। ৪ এপ্রিল শুক্রবার নন্দনে ফের মুক্তি পেল সোনার কেল্লা। এই ছবি দেখতে নন্দন চত্ত্বরে অগ্রিম টিকিট কাটার হিড়িক ছিল চোখে পড়ার মতো। বলাবাহুল্য, অগ্রিম টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা ছবিগুলোকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে সোনার কেল্লা। উল্লেখ্য, চলতি বছরেই কিংবদন্তি সত্যজিত্ রায় পরিচালিত 'নায়ক' আবার মুক্তি পেয়েছিল। 'সোনার কেল্লা' -ও যে নন্দনে ভাল ব্যবসা করবে সেই আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। নন্দন সূত্রে খবর, দ্বিতীয় দিনে টিকিট বিক্রির সংখ্যা ৫০০ ছুঁই ছুঁই। সোনার কেল্লা পুনরায় মুক্তি প্রসঙ্গে কী বলছেন সত্যজিৎ পুত্র সন্দীপ রায়?
উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে তিনি বলেন, 'কিছুদিন আগেই নায়ক ছবিটাও রি-রিলিজ হল। সেটাও দর্শকের খুব ভাল রেসপন্স পেয়েছে। অনেকদিন ধরেই চেয়েছিলাম সোনার কেল্লাও যাতে রি-রিলিজ হয়। অবশেষে ৪ এপ্রিল শুক্রবার নন্দনে পুনরায় মুক্তি পেল। এটা খুব আনন্দের। বাংলা ছবির দর্শকও খুশি হয়েছেন। এটা আমার কাছে অত্যন্ত খুশির একটা খবর। আশা করছি আগামী দিনগুলোতেও দর্শকের ভাল রেসপন্স পাব। কারণ সোনার কেল্লা তো বড় পর্দায় দেখার মতোই সিনেমা। সোনার কেল্লা ৫০ বছর পার করেছে ফেলেছে। এই মুহূর্তে এই ছবির যা স্টেটাস সেখানে দাঁড়িয়ে এটা আমাদের নৈতিক জয়।'
নন্দনে সোনার কেল্লা দেখতে যাবেন? বর্ষীয়ান পরিচালক বলেন, 'আমি দেখতে যাব কিনা এখনও ঠিক নেই। আসলে আমি তো বহুবার দেখেছি। রেস্ট্রোরেশনের পরও অনেকবার দেখেছি। খবরাখবর তো অবশ্যই রাখব যে কেমন চলছে। সত্যি বলতে হালেই আমি সোনার কেল্লা দেখেছি। যদি একটু সময় বের করতে পারি তাহলে আরও একবার নিশ্চয়ই দেখতে যাব।' এই ধরনের কালজয়ী ছবিগুলো রি-রিলিজ হওয়া উচিত? এই প্রসঙ্গে কী বলছেন সন্দীপ রায়?
তাঁর মতে, 'শুধু বাবার ছবি বলেই বলছি না, অনেক ক্ল্যাসিক ছবি একটা সময় তৈরি হয়েছে। যেটাকে বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগ বলা হয়। সেই সময়কার কালজয়ী ছবিগুলো যদি বারবার ফিরে আসে তাহলে সেটার থেকে বড় আনন্দ আমার কাছে আর কিছু হতে পারে না। আমার তো মনে হয় সিনেমার ক্ষেত্রে এটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকবে। দর্শকের মনে ভাল প্রভাব ফেলবে। আজকের প্রজন্ম তো বড় পর্দায় এই সিনেমাগুলো দেখেনি। ওঁরা দেখার সুযোগটা পাচ্ছে। টেলিভিশনে যতবারই দেখা হোক না কেন, বড় পর্দায় দেখলে তো একটা আলাদা ইমপ্যাক্ট তৈরি হয়। পুরনো দিনের ভাল ছবিগুলো যাতে ভালভাবে সংরক্ষণ করা হয় সেটার দিকে একটু নজর দেওয়া উচিত। সেটা এখন হচ্ছে, এককালে একেবারেই হত না। যে কারণে বহু ছবি নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা যদি একটু উদ্যোগ নিয়ে স্বর্ণযুগের বাংলা ছবিকে আবার নতুন করে ফিরিয়ে আনতে পারি খুব ভাল হবে।'
সত্যজিৎ রায়ের আর কোন ছবি রি-রিলিজ হলে খুশি হবেন? উত্তরে বলেন, 'অনেক ছবিই রি-রিলিজ করা যায়। আর.ডি.বনসালের কাছে অনেকগুলো ছবি রয়েছে। 'মহানগর' রিলিজ করলেন। খুব ভাল চলেছিল। 'নায়ক' তো হালে রিলিজ করে দারুণ সাড়া পেলেন। ভবিষ্যতে ভাল ছবিগুলো রি-রিলিজ করার কথা তো ভাবছেন। ওঁর কাছে 'চারুলতা', 'জয় বাবা ফেলুনাথ', 'কাপুরুষ-মহাপুরুষ'-এর মতো অনেক ছবি আছে। বাবার বহু ছবি রেস্ট্রোরেশন হয়ে গিয়েছে। ভাল অবস্থায় ছবিগুলো ফিরেছে। সেগুলো যদি ফের রিলিজ করে তাহলে নিশ্চয়ই ভাল চলবে।'