শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণরোগ। উপরন্তু ক্যানসারের চতুর্থ ধাপ! চিকিৎসকের কাছ থেকে একথা শুনে ২-৩ ঘণ্টা ধরে কেঁদেছিলেন সঞ্জয় দত্ত। নিজের ক্যানসার-আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনেই স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন সঞ্জুবাবা।
জীবনে বহু চড়াই-উতরাইয়ের সাক্ষী থেকেছেন। জেল খেটেছেন, মামলায় জড়িয়েছেন, একাধিক নায়িকার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েও তাঁর বিরুদ্ধে রটনা-কেচ্ছা কম কিছু হয়নি! তবে জীবনের এই অন্ধকার অধ্যায়গুলোকে নিয়ে কথা বলতে কখনও পিছপা হন না অভিনেতা। সম্প্রতি 'কেজিএফ ২'-এর প্রচারে এসে ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার দিনগুলোর কথা জানালেন সঞ্জয় দত্ত।
২০২০ সালে লকডাউনের সময়ই সঞ্জুবাবার ক্যানসার ধরা পড়ে। সে খবর প্রকাশ্যে আসায় কেমন অনুভূতি হয়েছিল অভিনেতার? সেকথাই জানালেন তিনি। অভিনেতার মন্তব্য, "লকডাউনের এক সকাল। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় হঠাৎ-ই শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে দেখলাম। স্নানে গেলাম। ফিরেও কোনও হেরফের হল না। বুঝতে পারিনি যে, কী হচ্ছে! তাই ডাক্তার ডাকলাম। এক্স-রে রিপোর্টে ধরা পড়ল, আমার ফুসফুসের অর্ধেকাংশে জল জমেছে। সেটা বের করতে হবে। প্রথমটায় ওঁরা ভেবেছিল যে, আমার হয়তো টিউবারকিউলোসিস (টিবি) হয়েছে। কিন্তু পরে দেখা গেল, সেটা ক্যানসার। কীভাবে এই খবরটা ওরা আমাকে দেবে, সেটা একটা বড় চিন্তার বিষয় ছিল। আমি হয়তো কারও মুখেই মেরে দিলাম। তো আমার বোন এল আমার কাছে। খবরটা জানাল। আমি বললাম- আচ্ছা , ক্যানসার হয়েছে, এবার কী করব? তখনই আমরা পরিকল্পনা করলাম যে কোথায় চিকিৎসা করাব।"
<আরও পড়ুন: ঋষি-নীতুর মতোই বিয়ে সেরে শ্যাম্পেনে চুমুক ‘রালিয়া’র, আসর জমালেন করণ জোহর, দেখুন>
এরপরই অভিনেতা বলেন যে, "তবে শুনে আমি ২-৩ ঘণ্টা ধরে কেঁদেছিলাম। কারণ, আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানদের কথা ভাবছিলাম যে ওদের ভবিষ্যৎ কী হবে! ফ্ল্যাশব্যাকে সবকিছু মনে পড়ে যাচ্ছিল। তারপর নিজেই নিজেকে শান্ত করলাম। প্রথমটায় ভেবেছিলাম, মার্কিন মুলুকে যাব চিকিৎসা করাতে। কিন্তু ভিসা পাইনি। তারপর আমি নিজেই বললাম যে, দেশেই চিকিৎসা করাব।"
হৃতিক রোশন, রাকেশ রোশনরা-ই সঞ্জুবাবাকে ভাল চিকিৎসকের নাম সুপারিশ করেন। যেহেতু, রাকেশ নিজেও কর্কটরোগে আক্রান্ত বিগত কয়েক বছর ধরে। ওঁরা বলেছিল, "তোমার চুল পড়ে যাবে। বমি পাবে। কিন্তু আমি ডাক্তারকে পাল্টা বলেছিলাম, দেখবেন আমার এসব কিচ্ছু হবে না। আমি বিছানাতেও শুয়ে থাকব না। উনি আমার কথা শুনে হেসেছিলেন। তো আমি কেমোথেরাপি করিয়ে বাইকে চেপে ১ ঘণ্টা ঘুরতাম। কখনও বা সাইক্লিং করতাম। দুবাইয়ে যখন কেমো নিতে যেতাম, সেখানে ব্যাডমিন্টন কোর্টে গিয়ে ২-৩ ঘণ্টা প্র্যাকটিসও করতাম চিকিৎসা চলার মাঝে।"
মনের জোরে কীভাবে ক্যানসারের মতো মারণ রোগকে সামলেছেন তিনি, সেকথাও জানান সঞ্জয় দত্ত। তিনি বলেন, "এই তো ২ মাস হল এখন জিমে যাচ্ছিয নিজের পুরনো চেহারা আস্তে আস্তে ফিরে পাচ্ছি। আপনারা যে সঞ্জয় দত্তকে চেনেন, আমি সঞ্জয় দত্তকে-ই ফিরিয়ে আনছি।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন