Movie: শাহজাহান রিজেন্সি
Director: সৃজিত মুখোপাধ্যায়
Cast: অর্নিবাণ ভট্টাচার্য, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, আবির চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, মমতাশঙ্কর, ঋত্বিকা
Rating: ৩/৫
'শাহজাহান রিজেন্সি' একক সম্রাটের উপাখ্যানের মতো। পরিচালক হিসাবে ছবিতে নিজস্ব ছাপ রাখেন প্রত্যেকে। সৃজিতও তার বাইরে নন। সেই সুবাদেই পরিচালক পিনাকীভূষণ মুখোপাধ্যায়ের চৌরঙ্গী-র থেকে আলাদা হল সৃজিতের ছবির প্রেক্ষাপট। দুটো ছবিই শংকরের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি, তবে ২০১৯-এর ক্রাইসিসগুলোকে চৌরঙ্গীর চরিত্রদের মুখ দিয়ে যথাযথভাবে বলানোর চেষ্টা করলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়।
শাহজাহান রিজেন্সি-বহু তারকা সমাহারে তৈরি। প্রথম সারির অভিনেতা-অভিনেত্রীরা একচুল জায়গা ছাড়তেও রাজি হননি। একইভাবে শিল্পীদের দিয়ে তাদের সেরাটা বার করে নিতে কার্পণ্য করেননি সৃজিত। রুদ্র বা ২০১৯ এর শঙ্করও ভাবতে পারেন, পরমব্রত ছবিতে দর্শক, পরিবর্তনের সমস্ত ঘাত-প্রতিঘাত নিয়ে পথচলা তার। চরিত্রের নাম বদলানোর সঙ্গে সমীরণ (স্যাটা বোস), অর্ণব সরকার (অনিন্দ্য পাকড়াশি), মিসেস সরকার, কমলিনী (করবী), মকরন্দ, নিটি গ্রিটি (নিত্যহরি) চরিত্রটা স্মার্ট ও আরও প্রজ্জ্বলিত। অত্যন্ত চতুরতায় চিত্রনাট্য সামনে এনেছে দুই ব্যবসায়ীর বিবাদ।
আরও পড়ুন, বছর ষাট পেরিয়ে ‘অপু’ আসছে দর্শকের সামনে
অভিনয়ের সার্টিফিকেটে ভাল নম্বরে পাশ করেছেন সকলেই। স্বস্তিকাকে বেশি নম্বর দিতেই হবে। এগিয়ে থাকলেন পরমও। আবার আবির-পরমব্রত যুগলবন্দীতে সামান্য ঝুঁকে থাকতে হয় পরমের দিকেই। আবিরের থেকে আর একটু বেশি আশা রাখেন দর্শক। বিশেষ উল্লেখ্য মমতা শঙ্কর, প্রমাণ করলেন তিনি দুঁদে অভিনেত্রী। অঞ্জন দত্ত, রুদ্রনীল, সুজয়প্রাসদ সাবলীল,যেমনটা বেশিরভাগ ছবিতে থাকেন। তবে ম্লান ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, সৃজিতের সংযোজিত এই চরিত্রের কিছুই করার ছিল না প্রায়। জমল না ঋত্বিকাও। স্টিরিওটাইপ চরিত্র থেকে বেরিয়ে এসেছেন কাঞ্চন মল্লিক। সৃজিতকে, বাবুল সুপ্রিয়কে আগরওয়ালের ভূমিকায় কাস্ট করার জন্য বাহবা দিতে হয়।
খামতির দিকে বলতে হলে সুজয়প্রসাদের মুখ দিয়ে মনোলগটা বেশিই মনে হল, যা বার্তা পরিচালক দিতে চেয়েছিলেন সেটা একবার বলাতেই স্পষ্ট ছিল। কম হতে পারত অর্নিবাণ-স্বস্তিকার প্রেমের দৃশ্যগুলো। অতিনাটকীয় স্বস্তিকা-মমতা শঙ্করের একে অপরকে এনকাউন্টারের সিন। ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর সত্যিই ভাল, কিন্তু কানে লাগতে পারে অনুপম রায়ের কম্পোজ করা গানে জ্যাজের ব্যবহার।
আরও পড়ুন, মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে নগরকীর্তন, মত কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের
কোথাও সুটচবোর্ডে শাহজাহান রিজেন্সি প্রমাণ করতে বড্ড ডিটেল দেখাতে গিয়েছেন পরিচালক আবার কোথাও নজর দেননি ছোট্ট চরিত্রের লিপসিঙ্কে। যদিও সমীরণের মোড়কে স্যাটা বোস চরিত্রের নোঙর ধরে রেখেছেন পরিচালক। কিন্তু করবীর অর্থাৎ ছবির কমলিনীকে ততটা সাহসী করতে পারলেন না সৃজিত। এখনকার করবীর শেষের পরিণতিটা বদলানো যেত না কি? শেষে বলতেই হয় ছবির ন্যারেশন নিয়ে খেলেছেন পরিচালক, এখনকার বাংলা ছবিতে যা বিলুপ্তির পথে।