একজন প্রথিতযশা গণিতজ্ঞ। বিশ্বের কাছে তিনি একজন জিনিয়াস। অবলীলায় কষে ফেলেন জটিল অঙ্কের ধাঁধা, কিউব রুটের সমাধান, ত্রিকোণমিতি কিম্বা জ্যামিতির সমস্ত রহস্য ভেদ করে ফেলেন চোখের পলক ফেলার আগেই। বিশ্বের কাছে তাঁর পরিচয় ছিল একটাই, 'মানব-কম্পিউটার'। সেই শকুন্তলা দেবীর জনসমক্ষের ব্যক্তিত্ব অনেকেরই চেনা, তবে ব্যক্তিগত জীবনে কেমন ছিলেন তিনি, তা নিয়েই গল্পের বুনোট বেঁধেছেন পরিচালক অনু মেনন।
শকুন্তলা দেবীর জীবনের সময়ের গল্প বলতে গিয়ে শুরুতেই ডিসক্লেমার দিয়েছেন পরিচালক, "গল্পের বিষয়বস্তু বাস্তব জীবনের থেকে সংগৃহীত, তবে এটা কোনোভাবেই ব্যক্তিবিশেষের উপর ডকুমেন্টারি নয়।" শকুন্তলা দেবীর আত্মজা অনুপমা বন্দোপাধ্যায়ের গল্পের খুঁটিনাটি জুড়েছেন পরিচালক, তারপরেও এই ডিসক্লেমার? তাহলে কি পরিচালকের নিজের গল্প বলার উপরেই আস্থা নেই নাকি এটা 'মৌলিক স্বাধীনতা'!
আরও পড়ুন
তরুণীর সুরে সাড়া হরিণের! সিনেমা নয় বাস্তবেই এমন কাণ্ড, দেখুন ভিডিও
বিদ্যা বালান পর্দায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন বিখ্যাত চরিত্রকে। একজন গণিত জিনিয়াসই নন শকুন্তলা দেবী বাস্তব জীবনেও একজন স্বাধীনচেতা, দৃঢ় মানসিকতা সম্পন্ন ছিলেন। শৈশবেই তাঁর প্রতিভা টের পেয়ে বাবার হাত ধরে একের পর এক শো-এ হাজির হতেন তিনি। সেই কারণে স্বাভাবিক শৈশব উপভোগ করতে পারেননি। তবে ঠিক করে নিয়েছিলেন, জীবনে "বড়ি আউরত নয়, বড়ি আদমি" হবেন তিনি।
শৈশবে যেমন স্বাভাবিকত্ব অর্জন করতে পারেননি। সেই বহমানতা রয়ে গিয়েছে বাকি জীবনেও। ইংল্যান্ড পর্বেই যেমন! অচেনা দেশে অন্য একসেন্টে, অদ্ভুত পোশাকে শিক্ষা-জীবন কাটিয়েছেন। সেখানেই তাঁর পরিচয় হয় এক পুরুষের সঙ্গে। তবে শকুন্তলা দেবী যেন বুঝতে পারেন, পুরুষ-সর্বস্ব দুনিয়ায় পুরুষের ছোঁয়াচ বাঁচিয়েই তিনি এগোতে পারবেন। একাই তিনি সুখী। এই একাকীত্বের দৃঢ়তাতেই শকুন্তলা দেবী যেন অনন্যা।
এরপর সাংসারিক জীবন। যীশু সেনগুপ্তের সঙ্গে আলাপ পরিণয় এবং স্ত্রী-জীবন। তারপর মাতৃত্ব। সাংসারিক জীবনের নাগপাশে বাঁধা পড়লেও তিনি ছিলেন স্বকীয়তায় ভরপুর। এরপর গল্প অনেকটা টার্ন নেয় মা-কন্যার টানাপোড়নের দিকে।
সংখ্যায় তাঁর পরিচয়। সংখ্যায় বাঁচতেন তিনি। তার অভিভাবক যেন সংখ্যাই। সেই সংখ্যা তার জীবন জুড়েই। ছবিতে অল্প হলেও দেখানো হয়েছে রাজনৈতিক সত্ত্বাও। লোকসভায় মেদক আসনে ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।
পর্দায় বিদ্যা বালানের সঙ্গে সহ অভিনেতা হিসাব সকলেই যথাযথ। শকুন্তলা দেবীর কন্যা হিসাবে সানিয়া মালহোত্রা, স্বামী হিসাবে যীশু সেনগুপ্ত, এবং অমিত সাধও নিজেদের চরিত্র ভালভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
সিনেমাটাই আসলে বিদ্যা বালান শো। পোশাক-আষাক থেকে ম্যানারিজম- বিদ্যাই যেন বাস্তবের 'বিদ্যা'দেবী।
Please Read the full article in English