সিনেমায় ব্রিটিশদের প্রতি ঘৃণা দেখানোই কি 'সর্দার উধম'-এর অস্কার দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ার নেপথ্যে মূল কারণ? এই প্রশ্ন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে বির্তকের অন্ত নেই। বেজায় ক্ষুব্ধ ভিকি কৌশলের (Vicky Kaushal) অনুরাগীরা থেকে সিনেদর্শকদের একাংশ। ইতিহাস ভিত্তিক ছবিতে সিনেম্যাটিক অ্যাডাপশন নিয়ে যেমন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি বিশ্বায়নের যুগে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে ব্রিটিশদের প্রতি এহেন ঘৃণা দেখানো কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্নও উঠেছে। এবার সেই প্রেক্ষিতেই মুখ খুললেন সুজিত সরকার (Shoojit Sircar)।
৯৪তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের তালিকা থেকে সুজিত সরকার পরিচালিত ‘সর্দার উধম’ (Sardar Udham) ছিটকে যাওয়ায় ভ্রু উঁচিয়েছিলেন অনেকেই। সিনে-সমালোচক, সিনে-বাণিজ্য বিশ্লেষক থেকে শুরু করে দর্শকদের এত প্রশংসাও অতিরিক্ত নম্বর যোগ করতে পারেনি ‘সর্দার উধম’-এর অস্কার মার্কশিটে! কারণটা কী? অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের জুড়ি মেম্বার ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, “গ্লোবালাইজেশনের যুগে ব্রিটিশদের প্রতি এত ঘৃণা দেখানোটা ঠিক নয়।”
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক তথা খ্যাতনামা মিউজিক কম্পোজার অবশ্য ‘সর্দার উধম’-এর প্রশংসাও করেছিলেন পাশাপাশি। তাঁর কথায়, “জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবি নিঃসন্দেহে ভাল। কী অসাধারণ সিনেম্যাটোগ্রাফি। একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর জীবনকাহিনি বেশ পারদর্শীতার সঙ্গে পর্দায় তুলে ধরা হয়েছে। তবে বেজায় বড় দৈর্ঘ্যের সিনেমা। কিন্তু সিনেমায় ব্রিটিশদের প্রতি যেভাবে ভারতীয়দের ঘৃণা তুলে ধরা হয়েছে, আজকের গ্লোবালাইজেশনের যুগে সেটা মোটেই কাঙ্ক্ষিত নয়।”
<আরও পড়ুন: ‘জব উই মেট’-এর জন্য করিনাকে রাজি করান শাহিদ-ই, এরপর ভেঙে যায় প্রেম>
আর সেই মন্তব্য শুনেই বেজায় চটে গিয়েছেন দর্শকদের একাংশ। যার প্রেক্ষিতে নেটিজেনরা পাল্টা প্রশ্ন রেখেছিলেন, “সত্য ঘটনা দেখানোতেও আপত্তি? সিনেমাধ্যম কি আদৌ স্বাধীন নাকি গ্লোবালাইজেশনের বেড়াজালে আটকে?” বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন দিন দুয়েক ধরে পরিচালক সুজিত চুপ-ই ছিলেন। তবে এবার মুখ খুলেছেন তিনি।
অনেকেই এই বিষয়ে পরিচালকের মতামত জানতে আগ্রহী ছিলেন। ভেবেছিলেন সুজিত সরকার হয়তো তাঁর ছবিতে বিশ্বায়নের যুগে ব্রিটিশদের প্রতি ঘৃণা দেখানোয় যে আপত্তি উঠেছে, তার তীব্র প্রতিবাদ করবেন। কিন্তু কোথায় কী! পরিচালক হাঁটলেন উল্টোপথে। সুজিতের মন্তব্য, "'সর্দার উধম'কে অস্কারে না পাঠানোর জন্য যে কারণগুলো নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, সেগুলো যার যার ব্যক্তিগত মতামত। আমি সেটা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। জুডি মেম্বার এবং তাঁদের সিন্ধান্তকে আমি শ্রদ্ধা করি। শেষমেশ যে ছবিটা ভারত থেকে অস্কারে পাঠানোর জন্য নির্বাচিত হয়েছে, আমি সেটার বিষয়েও জানি। আর আমি ভীষণ খুশি কুড়াঙ্গাল অস্কারের জন্য নির্বাচিত হওয়াতে। এই বিষয়ে আমি জুড়ি মেম্বারদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন