একমাসেরও বেশি আগে টেস্টে কোভিড-১৯ পজিটিভ আসার পর থেকেই কনিকা কাপুরের জীবন খুবই দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। সম্প্রতি সুস্থ হয়ে উঠে কনিকা জানান যে তাঁর বিদেশভ্রমণ নিয়ে অনেক ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়েছে সেই সময় আর সেসব নিয়ে তিনি তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো মানসিক অবস্থায় ছিলেন না। তাঁর বিশ্বাস ছিল যে সত্যিটা ঠিক সামনে আসবে।
এদেশের সেলিব্রিটিদের মধ্যে কনিকাই ছিলেন প্রথম আক্রান্ত। সম্প্রতি তিনি তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে তাঁর ভ্রমণসূচির বিবরণ দিয়েছেন। সেই সময় এমন একটা কথা উঠেছিল যে তিনি লন্ডন থেকে ফিরে লখনউতে নাকি পার্টি দিয়েছেন এবং এয়ারপোর্টে করোনা স্ক্রিনিং এড়িয়ে গিয়েছিলেন। সে সবই যে গুজব ছিল, তা প্রমাণ করতেই সোশাল মিডিয়ায় তাঁর সাম্প্রতিক পোস্ট।
আরও পড়ুন: লকডাউনেও নতুন দু’টি শো নিয়ে এল জি বাংলা
ইনস্টাগ্রামের ওই পোস্টে কনিকা লেখেন, ''আমি জানি আমাকে নিয়ে নানা ধরনের গল্প তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি তো দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল কারণ আমি এখনও পর্যন্ত একটা কথাও বলিনি। আমি চুপ করে ছিলাম এই জন্য নয় যে আমি ভুল ছিলাম বরং এই জন্য যে অনেক ভুল তথ্য এবং ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আমি অপেক্ষা করেছিলাম যে সত্যটা সামনে আসবে আর মানুষ নিজেই বুঝতে পারবেন। আমি আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও আমার অনুরাগীদের ধন্যবাদ জানাই যে তাঁরা এতদিন আমাকে এই স্পেসটা দিয়েছেন যে আমি যখন মনে মনে প্রস্তুত হব, তখনই সব কিছুর জবাব দেব।''
কনিকা তাঁর পোস্টে লেখেন যে ১০ মার্চ লন্ডন থেকে মুম্বই ফেরার সময় এয়ারপোর্টে তাঁর স্ক্রিনিং হয়। কিন্তু তার পরের দিন মুম্বই থেকে লখনউ যাওয়ার সময় ডোমেস্টিক ফ্লাইটের জন্য কোনও স্ক্রিনিং হয়নি-- না মুম্বইতে, না লখনউতে। কনিকা এর পর লেখেন যে তিনি লখনউতে কোনও পার্টি দেননি। সেখানে দুজন বন্ধুর বাড়িতে লাঞ্চ ও ডিনারে তিনি নিমন্ত্রিত ছিলেন যথাক্রমে ১৪ মার্চ ও ১৫ মার্চ। তিনি জানান যে ইউকে, মুম্বই ও লখনউতে যে যে মানুষের সংস্পর্শে তিনি আসেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই কোভিড টেস্ট নেগেটিভ এসেছে।
করোনা সংক্রমণের সময় ব্রিটেন থেকে তাঁর এদেশে আসা নিয়ে প্রবল সমালোচনা হয়। কনিকা জানিয়েছেন যে তিনি ব্রিটেন থেকে এদেশে আসেন ১০ মার্চ আর করোনার সময় আন্তর্জাতিক উড়ান বা যাত্রা বন্ধ রাখার যে নির্দেশাবলী প্রকাশ করা হয় ব্রিটেনে, তা ঘটে ১৮ মার্চ। তিনি যখন ১০ মার্চ এদেশে আসেন, তখন তাঁর শরীরে কোনও উপসর্গও ছিল না। তাই তিনি নিজেকে কোয়ারান্টাইন করেননি এবং পরের দিন ১১ মার্চ লখনউ চলে আসেন।
কনিকা আপাতত সুস্থ এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে রয়েছেন লখনউতে। তাঁর এই সুস্থ হয়ে ওঠার পিছনে যাঁদের অকুণ্ঠ অবদান রয়েছে, সেই চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী ও হসপিটালের সমস্ত কর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন কনিকা। তিন বার টেস্ট নেগেটিভ আসার পরে তাঁকে হসপিটাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর বিগত ২১ দিন বাড়িতেই ছিলেন গায়িকা। এই পুরো সময়টা তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুললেও তিনি ভেঙে পড়েননি। ''কোনও মানুষের প্রতি নেতিবাচক আচরণ করলেই সত্যিটা পাল্টে যায় না'', বলেন কনিকা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন