/indian-express-bangla/media/media_files/2025/06/14/J5rxcit6xfl6mvg4B8ob.jpg)
কেন, কী হয়েছিল তাঁর সঙ্গে?
Smita Patil: ১৯৭০-এর দশক ছিল হিন্দি সিনেমার এক অনন্য যুগ। যখন সিনেমা দুইটি পরিষ্কার ভাগে বিভক্ত ছিল: মূলধারার বাণিজ্যিক সিনেমা ও সমান্তরাল শিল্পধারার সিনেমা। সেই সময়ে অভিনেতাদের এক পথ বেছে নিতে হতো, এবং একবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে, প্রায়ই আর অন্যক্ষেত্রে ফিরে যাওয়ার সুযোগ থাকত না। এই যুগেই আত্মপ্রকাশ করেন স্মিতা পাতিল- একজন শক্তিশালী, সংবেদনশীল ও সচেতন অভিনেত্রী, যিনি পর্দায় নারী চরিত্রকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন।
স্মিতা প্রথম নজর কাড়েন 'নিশান্ত', 'মন্থন' ও 'ভূমিকা' ছবির মাধ্যমে। তিনি গ্ল্যামার বা কৃত্রিম আকর্ষণের বদলে, চরিত্রের বাস্তবতাকে প্রাধান্য দিতেন। তাঁর সমসাময়িক শাবানা আজমি মূলধারার ছবিতেও কাজ করলেও, স্মিতা দীর্ঘদিন শিল্পধারার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন। ১৯৭৬ সালে ইন্ডিয়া টুডে-র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আমি জানি আমি ভাল ছবিতে অভিনয় করতে চাই, কিন্তু ভাল পরিচালক পাওয়া কঠিন। আশা করি, আমাকে বাণিজ্যিক ছবিতে কাজের জন্য বাধ্য করা হবে না, কারণ তাতে আমার সত্যিকারের সত্তা হারিয়ে যাবে।"
Hina Khan-Sonali Bendre: ক্যানসার রোগীদের জন্য বিরাট দান, কেঁদে ভাসালেন হিনা - সোনালী
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্মিতা বুঝতে পারেন, চলচ্চিত্রও এক ব্যবসা, যেখানে টিকে থাকতে গেলে আপস করতে হয়। তাই তিনি শক্তি ও নমক হালাল-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেন। নমক হালাল-এ অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে তাঁর চরিত্রটি ছিল একদম ভিন্ন, যা তাঁকে অস্বস্তিতে ফেলে। ছবিতে বৃষ্টির নাচ 'আজ রাপাত যায়ে'-র দৃশ্য তাঁর জন্য তাঁকে যা সহ্য করতে হয়েছিল। তিনি নিজেই পরে বলেন, এটি তাঁর বিশ্বাস ও সংস্কৃতির পরিপন্থী। অমিতাভ বচ্চনও স্মরণ করেছিলেন যে স্মিতা, "পুরো শুটিং জুড়ে অস্বস্তিতে ছিলেন, কারণ তিনি বুঝতে পারেননি কেন তাঁকে এমন দৃশ্যে তাঁকে অভিনয় করতে হচ্ছে।"
শেষ হল এক অধ্যায়, চলে গেলেন টেলিভিশন-সিনেমার প্রিয় মুখ
পরবর্তীতে শক্তি ছবিতে দিলীপ কুমার ও বচ্চনের পাশে থেকেও তাঁর ভূমিকা ছিল তুলনামূলক ছোট। এমনকি এক দৃশ্যে তাঁকে, “ম্যায় তুমহারে বাচ্চা কি মা বান্নে ওয়ালি হুঁ” সংলাপ বলতে বলা হলে, তিনি তাতে আপত্তি জানান এবং পরিবর্তে সংক্ষিপ্ত করে বলেন, "আমি মা হতে চলেছি।" এটি তাঁর আত্মসম্মান ও শিল্পে সততার প্রতীক ছিল। স্মিতা পাতিল ছিলেন সেই বিরল অভিনেত্রী, যিনি জনপ্রিয়তার মোহে নয়, বরং নিজের শিল্পধারার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই লড়াই করেছিলেন। তাঁর যাত্রা প্রমাণ করে- সংঘর্ষের মধ্যেও একজন শিল্পী নিজের সততা বজায় রাখতে পারে।