Sohini At @Followers: ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ক্লিক-এর নতুন সিরিজ '@ফলোয়ার্স'। বর্তমান প্রজন্ম সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলোয়ার্স বাড়ানোর ইঁদুর দৌড়ে সামিল হয়। নিজের ছবি-রিলসে ফলোয়ার্স বাড়ানোর নেশা কতটা বিপদজনক হতে পারে সেইরকম এক গল্প বলবেন পরিচালক রাজদীপ ঘোষ। যার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন টেলি অভিনেত্রী সোহিনী গুহ রায়। এই সিরিজের মাধ্যমে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে হাতেখড়ি সোহিনীর। সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শান্তিলাল মুখার্জি, ইন্দ্রাশিষ রায়, অম্লান মজুমদার, সামিউল আলাম এবং স্যান্ডি। পরতে পরতে রোমহর্ষক ঘটনাবলিতে ভরা কাহিনী নিয়ে আসছে '@ফলোয়ার্স'।
জনপ্রিয় লক্ষ্মী সিরিয়ালের সুপারহিট নায়িকা 'লক্ষ্মী' ওরফে হিয়া আজ ফলোয়ার্সের ইঁদুর দৌড়ে ব্রাত্য। তাই সোশ্যাল মিডিয়াতে বোল্ড শ্যুট আর রিলস বানানোর মতো শর্টকাট পথে ফ্যান ফলোয়ার্স বাড়ানোর তাগিদে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার যাবতীয় দায়িত্ব এখন সৌম্যর কাঁধে। তার বুদ্ধিতেই একদিন ফলোয়ার্স বাড়ানোর অদ্ভুত এক গেমপ্ল্যানে সামিল হল হিয়া। প্ল্যানটা কেমন? সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা ফেক নিউজ পাবলিশ করবে দুজনে। যেখানে বলা হবে লক্ষ্মী সিরিয়ালের জনপ্রিয় নায়িকা 'হিয়া বোস' হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/b5fa842c-0b4.jpg)
সেই প্ল্যান মাফিক তিন দিনের জন্য বগুলান নামক এক নির্জন দ্বীপে সৌম্যর হোটেলে গা ঢাকা দেয় হিয়া। কিন্তু মানুষের ইমোশন নিয়ে এই খেলাকে কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারেন না তাঁর অনুগামী অনিন্দ্য। হিয়াকে অন্তর থেকে ভালোবাসেন। তাই তো হিয়ার এই ফলোয়ার্সের জন্য নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় উন্মুক্ত করে দেওয়াটাকে সমর্থন করে না। রাগ জন্মিয় সৌম্যর মতো মানুষদের উপর।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/975cc77b-f39.jpg)
হিয়ার এই বদলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারে না তাঁর দাদাও। বোনের এইসব নোংরা ছবির জন্য দাদা পল্লবও চায় তার সঙ্গে সম্পর্ক ঘোচাতে। সম্পত্তি হাতিয়ে বোনকে ত্যাজ্য করতে পারলেই তাঁর শান্তি। কিন্তু হিয়া তার লক্ষ্যে অবিচল। ফলোয়ার্স বাড়াবেই বাড়াবে। আর এই ফলোয়ার্স বাড়াতে গিয়েই খুন হয় হিয়া! তদন্তের স্বার্থে ময়দানে নামেন লোকাল থানার ওসি অনুকূল বর্মন। ইন্টারনেটের এই আধুনিক ডিজিটাল দুনিয়া থেকে সহস্র মাইল দূরে থাকা এই মানুষটা পারবে খুনের কিনারা করতে? কে খুনি? হিয়ার সান্নিধ্যে থাকা মানুষজন নাকি ইন্টারনেটে লুকিয়ে থাকা অন্য কোনও নাম?
/indian-express-bangla/media/post_attachments/0ef37508-f5a.jpg)
পরিচালক রাজদীপ ঘোষের মতে, 'নিজের বাবা বা মা মারা যাওয়ার পর হাসিমুখে সেই মৃতদেহর সঙ্গে সেলফি তুলেছেন কখনও? এখন মানুষ তোলে ফেসবুকে পোস্ট করে দেখে কতজন ফলো করছে। এ এক ভয়ংকর সময়। ফলোয়ার্স চাই-ই-চাই। এক অদ্ভুত মারণ রোগে আজ আমরা মেতে উঠেছি। মনে হল এর প্রতিবাদ দরকার। আমার ভাষা তো একটাই, সিনেমা। তাই বিষয়টা শুনেই ঝাঁপিয়ে পড়লাম। কারণ, এ বিশ্বকে আগামী প্রজন্মের শিশুর বাসযোগ্য করে যেতেই হবে। Klikk এখন আমাদের পরিবারের মতো। ওদের সঙ্গে এটি আমার তৃতীয় কাজ। ভাগাড়, শক্তিরূপেন এর সাফল্যের পরে আবার অম্লান মজুমদার এর সঙ্গে জুটি বাঁধলাম'।
লেখক ও অভিনেতা অম্লান মজুমদার এর ভাবনায়, 'যখনই কিছু লিখেছি চেষ্টা করেছি একটা সামাজিক বার্তা দেওয়ার। ভাগাড় কাণ্ড নিয়ে 'ভাগাড়' বা ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের গল্প 'শক্তিরূপেন' তার জ্বলন্ত উদাহরণ। ঠিক তেমনি এই কাহিনী @Followers ক্লিকের সঙ্গে আমার ষষ্ঠ ছবি। গত কয়েক বছরে খুবই উপভোগ করে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি' ।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/094195c0-391.jpg)
আরও বলেছেন, ' ফলোয়ার্স বাড়ানোর এক অদ্ভুত নেশায় আজ বুঁদ সবাই। সোশ্যাল মিডিয়াতে আজ নিজেকে উলঙ্গ করতেও মানুষ পিছুপা হচ্ছেন না। কাজ, আজ আর মানুষের মাপকাঠি নয় , মাপকাঠি তাঁর ফলোয়ার্স। এ এক ভয়ঙ্কর নেশা। মডার্ন ড্রাগও বলা যেতে পারে। একবারও ভেবেছেন এর পরিণতি কি? সেই রকমই নানাবিধ প্রশ্ন চিহ্ন তুলে ধরতে চেয়েছি এই কাহিনীর মাধ্যমে। একজনকেও যদি এই মারণ রোগ থেকে মুক্ত করতে পারি তাহলেই আমি ধন্য' ।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/9865cb6c-a8d.jpg)
এইরকম একটি বিষয়ে কাজ করে কেমন অভিজ্ঞতা ইন্দ্রাশিষ রায়ের? তাঁর কথায়, 'আজকের যুগে দুটো বিষয় খুব প্রাসঙ্গিক। একদিকে নিজের জীবন, জীবন ঘিরে নানা স্বপ্ন, অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ার হাতছানি। দুটোই আজ মিলেমিশে একাকার। সোশ্যাল মিডিয়া, আজ যেমন বদলে দিতে পারে মানুষের জীবন, আবার ধ্বংসও করে দিতে পারে সে। সোশ্যাল মিডিয়ার সেই সৃষ্টি আর ধ্বংস আমাদের এই সিরিজ এর সাবজেক্ট। কাজ করতে সবসময়ই মজা লাগে কিন্তু এই কাজটা করতে গিয়ে একটু সিরিয়াস হয়েই থাকতাম। বড্ড ভাবিয়েছে এই বিষয়টা। কি ভাবিয়েছে বলব না, শুধু বলব দেখার পর আপনারাও ভাববেন, ছটফট করবেন। এটি আমার দ্বিতীয় সিরিজ ক্লিকের সঙ্গে। খুব উপভোগ করে অভিনয় করেছি'।