২০২০ সাল। এপ্রিল মাস। ইরফান খান চলে গেলেন না ফেরার দেশে। গোটা দেশ কাঁদছে। আর একদিকে নিজেকে পুরোপুরি ঘরবন্দি করে ফেললেন বাবিল খান। ইরফান খানের ছেলে। বাবা চলে যাওয়ার ধাক্কাটা কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি বাবিল। তাই একেবারে নিঃশ্চুপ হয়ে গেলেন। এক-দু' দিন নয়, টানা ৪৫-টা দিন। দেড় মাস একঘরে নিজেকে বন্দি করে রাখেন ইরফান-পুত্র।
পরে অবশ্য নিজেই বুঝতে পারেন। অভিনয়ের মাধ্যমেই বাবার কাছাকাছি থাকতে পারবেন তিনি। তাই খুব বেশি সময় নেননি। বাবার দেখানো পথেই ফিল্মি কেরিয়ারে নাম লেখান। প্রথম কাজেই অনুষ্কা শর্মার মতো প্রযোজককে পেয়েছেন। নেটফ্লিক্সের জন্য কালা সিরিজে অভিনয় করেন। যেখানে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, তৃপ্তি দিমরির মতো অভিনেত্রীদের সঙ্গে স্ক্রিনস্পেস ভাগ করে নেন বাবিল খান। এরপরই ডাক পান জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক তথা বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু সুজিত সরকারের কাছ থেকে।
৭ জানুয়ারি ইরফান খানের জন্মদিন। বাবা চলে যাওয়ার পর থেকে বিগত ২ বছর ধরে বিকে কষ্ট চেপেই বাবাকে স্মরণ করেন বাবিল। তিনি জানান, "বাবা যেদিন চলে গেলেন, প্রথমদিন আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি। এক সপ্তাহ চলে যাওয়ার পর বুকে ধাক্কাটা লাগে। আমি প্রায় অসাড় হয়ে যাই। দেড় মাস একঘরে নিজেকে বন্দি করে রেখেছিলাম। এটতাই ভেঙে পড়েছিলাম, যা কথায় প্রকাশ করতে পারব না।"
<আরও পড়ুন: ‘Boycott Bollywood ট্রেন্ড বন্ধ হোক’, কড়া হুঙ্কার সিনেকর্মীদের! সরকারে দ্বারস্থ বলিপাড়া>
"গোড়ার দিকে ভাবতাম বাবা বোধহয় শুটিংয়ে গেছেন। কারণ একেকসময়ে এরকমও গেছে যে বাবা লম্বা শিডিউলের শুটে যেতেন। গোড়ার দিকে সেভাবেই নিজেকে বুঝিয়েছিলাম। ভাবতাম দিন কয়েক বাদে হয়তো ফিরে আসবেন। পরে ধীরে ধীরে অনুভব করলাম, না এই লম্বা শুটিং শিডিউল আর কোনওদিন শেষ হবে না। বাবা আর ফিরবেন না। আমার আমার প্রিয় বন্ধুকে হারালাম।"
তবে বাবা চলে যাওয়ার এক বছরের মাথাতেই নতুন কাজ শুরু করেন। নেটফ্লিক্স-এর ‘কালা’ দিয়েই অভিনেতা হিসেবে হাতেখড়ি হয় বাবিল খানের। মা সুতপা শিকদার বলেছিলেন, "শুরুটা করেছিল ইরফান আর শেষটা হবে বাবিলের মাধ্যমে।"
উল্লেখ্য, এবার যশরাজ ফিল্মস-এর নয়া ওয়েব সিরিজ 'দ্য রেলওয়ে ম্যান'-এ দেখা বাবিল খানকে। '৮৪-র ভোপাল গ্যাস ট্র্যাজেডির অবলম্বনে সিরিজ পরিচালনা করেছেন শিব রাওয়াল।