রুশ হামলায় বিপর্যস্ত জনজীবন। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। আকাশে-বাতাসে বারুদের গন্ধ আর চারদিকে প্রাণে বাঁচার হাহাকার, আর্তনাদ। রাশিয়ান হামলায় ইতিমধ্যেই প্রাণ গিয়েছে ইউক্রেনে বসবাসকারী দুই ভারতীয় পড়ুয়ার। আটকে রয়েছেন আরও হাজারো ছাত্র। প্রাণ বাঁচাতে বাঙ্কারে কোনওমতে মাথা গুঁজেছেন তাঁরা। প্রহর গুনছেন দেশে ফেরার। যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর ছাড়তে গাড়ি মিললেও মোটা অঙ্কের বায়না! এমতাবস্থায় ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের 'ত্রাতা' হিসেবে অবতরণ করলেন সোনু সুদ। অতিমারী পরিস্থিতির মতোই নিজের টিমের সাহায্যে বহু পড়ুয়াকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিলেন মায়ের কোলে।
ইউক্রেন থেকে পড়ুয়ারা যখন দেশে ফিরলেন, "তারপরই এক টুইট করেন অভিনেতা। সংশ্লিষ্ট টুইটে সোনু লেখেন, ইউক্রেনে বসবাসকারী পড়ুয়াদের জন্য ভীষণ কঠিন সময়। আর ওঁদের দেশে ফেরানোই সম্ভবত আমার জীবনের প্রথম কঠিন কাজ ছিল। ভাগ্যের জোরে বেশ কিছু পড়ুয়াদের সুরক্ষিতভাবে সীমান্ত পেরতে সাহায্য করতে পেরেছি। এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছি। ওঁদের খুব প্রয়োজন আমাদের। ধন্যবাদ। জয় হিন্দ।" পড়ুয়াদের ঘরে ফেরাতে যে দুই সংস্থার তরফে সাহায্যে পেয়েছেন, তাঁদেরকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
<আরও পড়ুন: শাহরুখের অভিযোগ ‘লাল সিং চাড্ডা দেখিনি’, আমিরের আবদার ‘আগে পাঠান দেখা ভাই’>
তা কীভাবে ঘটল এই অসাধ্যসাধন? সোনু সুদের টুইটারেই শোনা গেল লক্ষ্মণ নামে এক পড়ুয়ার বয়ান। যুদ্ধ পরিস্থিতি শুরু হওয়ার একেবারে গোড়া থেকেই ইউক্রেন ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। প্রথমটায় ভেবেছিলেন, সব বোধহয় শান্ত হয়ে যাবে। তবে পরিস্থিতি ক্রমশই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। হস্টেল থেকে বেরতেই এক বন্ধু মারফৎ জানতে পারেন যে সেখানকার বাকি পড়ুয়ারাও অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। বন্ধুদের সেই অবস্থায় ওখানে ফেলে আসতে মন চায়নি লক্ষ্মণের। তৎক্ষণাৎ সোনু সুদের টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদের সাহায্যেই হস্টেল থেকে বাকি বন্ধুদের উদ্ধার করে মাত্র ৫ ঘণ্টায় যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন ছাড়েন পড়ুয়ারা। অপারেশন গঙ্গা এবং সোনু সুদের সাহায্য ছাড়া এই অসাধ্যসাধন সম্ভব ছিল না বলেই জানিয়েছেন লক্ষ্মণ নামে ওই পড়ুয়া।
প্রসঙ্গত, অতিমারীকালে বহু পরিযায়ী শ্রমিককে ঘরে ফিরিয়েছিলেন সোনু সুদ। দু'বেলা তাঁদের মুখে তুলে দিয়েছিলেন দু'মুঠো অন্ন। এমনকী, বহু মানুষের অন্নসংস্থানের দায়ভার তুলে নিয়েছিলেন। পড়াশুনার খরচ জুগিয়েছেন। সেই মানবিক অবদান ভোলেননি কেউই। এবার যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে পড়ুয়াদের দেশে ফেরাতে ঈশ্বরের দূত-এর মতো আবারও এগিয়ে এলেন সেই সোনু সুদ-ই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন