Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

টিভিতে দেখা টুন চরিত্রগুলো কতটা প্রিয় শিশুদের কাছে

বিগত এক দশকে ছোটদের টেলিভিশন ভিউয়ারশিপ অনেকটা বদলেছে। স্মার্টফোন রেভলিউশনের পরে এখন শিশুরা অনেকটা সময় কাটায় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম দেখে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sony Yay business Leena Lele Dutta speaking on kids entertainment on TV

হানি-বানির সঙ্গে দেব, 'দ্য জায়ান্ট হুইল মিউজিক ফেস্টিভ্যাল'। ছবি সৌজন্য: ইস্টমেন কমিউনিকেশনস

Sony Yay: সম্প্রতি নিকো পার্কে অনুষ্ঠিত হল 'দ্য জায়ান্ট হুইল ফেস্টিভ্যাল'। শিশুদের বিনোদন চ্যানেল 'সোনি ইয়ে' আয়োজিত এই উৎসব ছিল সেই সব শিশু-কিশোরদের জন্য, যারা এখনও তাদের প্রিয় টুন চরিত্রগুলির সঙ্গে সময় কাটাতে ভালবাসে অবসর সময়ে। 'সোনি ইয়ে'-র যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের এপ্রিলে। এখন হিন্দি ছাড়াও একাধিক আঞ্চলিক ভাষায় রয়েছে এই চ্যানেলটি এবং চ্যানেলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিগত এক বছরে বিপুল বেড়েছে ভিউয়ারশিপ। কিন্তু টিভিতে দেখা টুন চরিত্রগুলো কতটা প্রিয় আজকের শিশুদের কাছে, সেই বিষয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় আলোকপাত করলেন চ্যানেলের বিজনেস হেড লীনা লিলি দত্ত।

Advertisment

''বাংলার দর্শকেরা এখন আমাদের কাছে প্রায়োরিটি। ২০১৮ সালে আমরা বাংলায় এসেছি। এখন ছোটদের বিনোদনের ক্ষেত্রে Sony Yay রয়েছে ২ নম্বরে। আমরা বিগত দেড় বছরে অনেকটা এগিয়েছি মার্কেট শেয়ার এবং ভিউয়ারশিপে। যতটা সময় একটি বাচ্চা চ্যানেলের বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখছে, সেই টাইম স্পেন্টও বেড়েছে'', লিলি বলেন, ''গড়ে একজন শিশু-দর্শক দিনে ১০০ মিনিট এই চ্যানেলটি দেখে এখন। আর আমাদের যে স্কুল-কনট্যাক্ট প্রজেক্টগুলি হয়, সেখানে গেলে আমরা বুঝতে পারি, বাচ্চারা কতটা ভালবাসে এই চ্যানেলের টুন চরিত্রগুলিকে। তাদের কথা মাথায় রেখেই আমরা এখানে এই ইভেন্টটা করলাম।''

আরও পড়ুন: ‘নেতাজি’ ধারাবাহিকে অভিনেত্রী হয়ে এলেন শরৎচন্দ্র বসুর নাতনি

দুদিনের এই উৎসবের রেসপন্স নিয়ে খুবই খুশি উদ্যোক্তারা। হানি-বানি বা সোনি ইয়ে-র অন্যন্য টুন চরিত্রগুলি যে বেশ জনপ্রিয় ছোটদের মধ্যে, তা বেশ বোঝা গিয়েছে এই ইভেন্টে ছোটদের অংশগ্রহণ দেখে। এই চ্যানেলটির বিশেষত্ব হল, যে টুন চরিত্রগুলিকে তৈরি করা হয়েছে বাচ্চাদের জন্য, তার সবকটিই এদেশীয়, কোনও লোকগাথা, সাহিত্য বা পপুলার কালচার থেকে নেওয়া। উদাহরণস্বরূপ লীনা শোনালেন 'গুরু অউর ভোলে'-র মূল ভাবনাটি। গুরু-র রয়েছে অসাধারণ গান গাওয়ার ক্ষমতা যে গান শুনে তার বন্ধু ভোলে স্তব্ধবাক হয়ে যায়। লীনা জানালেন, যাঁরা উপেন্দ্রকিশোরের গল্পটি পড়েছেন অথবা সত্যজিৎ রায়ের সিনেমাটি দেখেছেন, তাঁরা এই শো-টি দেখতে বসলেই বুঝবেন, এই চরিত্রগুলির উৎস। কিন্তু পুরোপুরি চরিত্রগুলিকে না নিয়ে, তার অনুপ্রেরণা থেকে নতুন চরিত্র তৈরি করা হয়েছে।

Sony Yay business Leena Lele Dutta speaking on kids entertainment on TV লীনা লিলি দত্ত, সোনি ইয়ে চ্যানেলের বিজনেস হেড। ছবি সৌজন্য: ইস্টমেন কমিউনিকেশনস

ঠিক তেমনই সাহিত্য-সিনেমার হাত ধরে পপুলার কালচারে বার বার এসেছে যমরাজ ও তার দুই কর্মচারী-- চিত্রগুপ্ত ও বিচিত্রগুপ্তের গল্প। সেই তিনটি চরিত্রকে দর্শক পাবেন সোনি ইয়ে-র 'পাপ-ও-মিটার শো'-তে। এখানে রয়েছে এক ভূত-বস আর তার দুই সাকরেদ-- পাকেলা আর টাকেলা। এদের কাজ হল ধরাধামে পাপ যাতে বেশি বেড়ে না যায়, সেটা খেয়াল রাখা। অর্থাৎ পাপের মিটার রিডিং যেন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে না চলে যায়।

আরও পড়ুন: ‘আমরা কাগজ দেখাব না’, ট্রেন্ডিং নতুন ভিডিও বার্তা

এমনই নানা দেশীয় চরিত্রের মধ্যে দিয়ে শিশুদের নীতিকথা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়ার প্রচেষ্টা যেমন রয়েছে, তেমনই শিশুদের বিনোদনের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়, জানালেন লীনা-- ''আমাদের ভিউয়ারশিপ রেঞ্জ ২ বছর থেকে ১৪ বছর। এর মধ্যে একেবারে কচিকাঁচারা কিন্তু বেশিরভাগ কনটেন্ট দেখে মোবাইলে, ওটটি প্ল্যাটফর্মে। সেটা তাদের বাবা-মা বা বড়রা তাদের প্রথমে দেখায়। সেটাই একটা অভ্যাসে পরিণত হয়। মোটামুটি ৪ বছরের পর থেকে এই ভিউয়ারশিপটা মোবাইল থেকে চলে যায় টিভি সেটে। ওই ৪ থেকে ১৪-- বয়সের এই রেঞ্জের জন্য কিন্তু বিনোদনমূলক কনটেন্ট ভাবতে হয় আমাদের।''

Sony Yay business Leena Lele Dutta speaking on kids entertainment on TV 'দ্য জায়ান্ট হুইল ফেস্টিভ্যাল'-এ শিশুরা। ছবি সৌজন্য: ইস্টমেন কমিউনিকেশনস

তবে এখানে বিনোদনের সংজ্ঞাটা বলা বাহুল্য একটু অন্য রকম। শিশুদের কাছে বিনোদন মানে খেলাধূলা। তাই টুন চরিত্রগুলি যাতে শিশুদের খেলার সঙ্গী হয়ে ওঠে, সেই প্রচেষ্টাই করে চ্যানেল, জানালেন লীনা। বিগত এক দশকে ছোটদের টেলিভিশন ভিউয়ারশিপ অনেকটা বদলেছে। স্মার্টফোন রেভলিউশনের পরে এখন শিশুরা অনেকটা সময় কাটায় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম দেখে বা ইউটিউব ভিডিও দেখে। সেই সব কথা মাথায় রেখে সব বিনোদন চ্যানেলগুলিকে তাদের কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি বদলাতে হয়েছে। শিশুদের চ্যানেলে এই কাজটি আরও কঠিন।

নতুন দশকে আরও বেশ কিছু প্রযুক্তিগত বদল আসবে সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে। শিশুদের বিনোদনের ক্ষেত্রে ঠিক কী বদল আসতে পারে সেই প্রশ্নের উত্তরে লীনা বলেন, ''সত্যিই একটা গোটা দশক রয়েছে সামনে। অতটা দূর পর্যন্ত যদি এখন দেখতে নাও পারি, আগামী বেশ কয়েক বছরের কথা তো ভাবতেই হবে। সাধারণত কচিকাঁচা দর্শকের ভিউয়ারশিপ লাইফ সাইকল থাকে ৫ বছর। আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ থাকে এমন টুন চরিত্র তৈরি করা এবং তাকে নিয়ে এমন কিছু কনটেন্ট নিয়ে আসা, যাতে একটি বাচ্চা ওই চরিত্রটিকে সঙ্গে নিয়ে বেড়ে ওঠে। যেমন আমাদের হানি-বানি সবচেয়ে জনপ্রিয় বাচ্চাদের মধ্যে। আমাদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ হল এই লাইফ সাইকলটা যতটা বাড়ানো যায়। একদম কচি বয়সের ওটিটি দেখার অভ্যাস থেকে আর টিভি দেখার অভ্যাসে আসা-- এই ট্রানজিশনটাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চাদের যত ভালবাসার হবে টুন চরিত্রগুলি, ততই এই ট্রানজিশনটা খুব সহজে হবে।''

Bengali Television
Advertisment