শুভ্রা গুপ্তা
ছবি: সুরমা
পরিচালক: শাদ আলি
অভিনয়: দিলজিৎ দোসাঞ্জ, তাপসী পান্নু, অঙ্গদ বেদী, বিজয় রাজ, দানিশ হুসেন, সতীশ কৌশিক।
রেটিং : ২.৫/৫
বলিউডে যেন বায়োপিকের বন্যা বইছে। এই সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছে হকি খেলোয়াড় সন্দীপ সিংয়ের আত্মকথা 'সুরমা'। মারাত্মক চোট পাওয়ার পরও তাঁর কামব্যাকের কাহিনি চিত্রায়িত হয়েছে এই ছবিতে। অতএব 'সুরমা' সত্যি ঘটনার পর্দায় অবতরণ। যে কোনও খেলোয়াড়ের জীবন কাহিনি সাধারণভাবে দর্শকদের আলোড়িত করে। সমস্ত বাধা, সবরকম কষ্টকে অতিক্রম করে তাদের ফিরে আসার গল্প, গায়ে কাঁটা দেওয়া আত্মবিশ্বাস উদ্বুদ্ধ করে জনমানসকে। আর এই গল্প সন্দীপ সিং ওরফে 'ফ্লিকার' সিংয়ের। গোল করায় যাঁর দ্রুততম 'ড্র্যাগ ফ্লিক' প্লেয়ারের তকমা রয়েছে।
সন্দীপ সিংয়ের ভূমিকায় দিলজিৎ দোসাঞ্জ দুরন্ত। আর এটাই ছবিটার তুরুপের তাস। অভিনেতা স্ক্রিনে থাকলেই আমরা তাঁর অভিনয় দিয়েই গল্পটাকে অনুভব করেছি। ইয়ং প্লেয়ারদের পেটানোর জন্য কোচের বিরাগভাজন হওয়া থেকে হরপ্রীতের প্রেমে পড়া, সবটাই। হরপ্রীতও (তাপসী) হকি প্লেয়ার। সেও দেশের হয়ে হকি খেলতে চায়। এদিকে একটা ট্রেন অ্যাক্সিডেন্টে সন্দীপ প্যারালাইজড হয়ে যান। তারপরই শুরু হয় তাঁর বেদনাদায়ক যাত্রা, মাঠে ফেরার লড়াই।
এই চ্যালেঞ্জই তৈরি করে 'সুরমা'-র চিত্রনাট্য। সন্দীপের ঘুরে দাঁড়ানোর কাহিনিই তাঁকে খবরের শিরোনামে নিয়ে আসে। প্রত্যেকটি ওঠা-পড়ার ঘটনা ডক্যুমেন্টেড হয়। আর এই দৃশ্যগুলোয় বাড়াবাড়ি না থাকাটাই ছবির নাটকীয়তাকে স্বকীয় করে রাখে। মেলোড্রামা হওয়া থেকে আটকায়।
আরও পড়ুন: সনজু ছবিতে পরেশ রাওয়াল ও মনীষা কৈরালার সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি হয়নি নম্রতা দত্তর
সন্দীপ সাধারণ একজন ছেলে, যে ভারতের হকি জার্সি পরার স্বপ্ন দেখে, দাদাকে প্রতিদিন খেলায় সাহায্য করে আবার সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে ফ্লার্টও করে। তবে একটা ঘটনা এবং সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো তাঁকে ছবির হিরোতে পরিণত করে। ঘাম ঝরিয়ে খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা, একটা ভাংড়া গান, আর এই হকির ছবি দেখতে গিয়ে দর্শক চোখের জলে ভাসবেন।
#WATCH | @diljitdosanjh vs @flickersingh: Which #Soorma knows it better? Check out in this fun video.
Click here: https://t.co/cWms03vrq3@Taapsee @Imangadbedi @sonypicsprodns @SnehaRajani @IChitrangda @thecsfilms pic.twitter.com/6xZsILen8a— IE entertainment (@ieEntertainment) July 12, 2018
একটা ভাল ছবি আমাদের আনন্দিত করে, সঙ্গে দৃঢ় হওয়ার গেমপ্ল্যানও দেয়। হকিতে সেই পর্যাপ্ত উত্তেজনা আছে যা ছবির সিনেম্যাটিক দৃষ্টিকোণকে টানটান রেখেছে। যদিও আমরা বুঝতে পারিনি দল কী করে জিতল? শুধু কঠোর সংগ্রাম দেখা গেল ছবি জুড়ে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ছবিটা ব্যক্তিগত টানাপড়েন দেখাতে গিয়ে প্রফেশনাল দিকটা এড়িয়ে গিয়েছে।
তবে আবারও দিলজিৎ ছবিতে যেন পাশের বাড়ির ছেলে। ভাইয়ের চরিত্রে নজর কেড়েছেন অঙ্গদ বেদী। নিজের দমে ভারতীয় হকি দলে জায়গা করতে চায়। কোচ হিসেবে হুসেন অনবদ্য। দোসাঞ্জের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অভিনয় করেছেন তাপসী পান্নু। তবে খেলোয়াড় হিসেবে নিজের জন্য আরও একটু লড়তেই পারতেন তিনি। পরিশেষে বলি, আশা করা যায় এই ছবি হল পাবে বেশ কিছুদিন।