উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হতেই তুলকালাম কাণ্ড বাংলায়। ছাত্রদের (৯০.১৯)তুলনায় ছাত্রীদের (৮৬.৯৮) পাশের হার যেহেতু কম, সেই প্রেক্ষিতেই রাস্তায় ধর্ণায় বসেছেন উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়া ছাত্রীরা। চাঁদিফাটা রোদ, ভ্যাপসা গরম কোথায় কী! সব তুড়ি মেরে উড়িয়ে রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে বসে তাঁদের দাবি, "আমাদের কেন ফেল করানো হল?" শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক স্লোগানের স্টাইলে তাঁদের মুখে- 'মানছি না, মানব না..' মন্তব্য। এযাবৎকাল পরীক্ষার ফলপ্রকাশের পর বাংলায় এহেন দৃশ্য দেখা গিয়েছে কিনা সন্দেহ। তবে বাদ সেধেছে ওই বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের 'বানান-জ্ঞান'! যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও তরজা। এসবের মাঝেই ফের বিস্ফোরক শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra)। শিক্ষাব্যবস্থার মান নিয়ে বিঁধলেন রাজ্য সরকারকে।
উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়া পড়ুয়ারা সাধারণ বানানটাও বলতে পারছেন না দেখে নেটদুনিয়ায় খিল্লি-তামাশার অন্ত নেই। Umbrella বানান বলতে গিয়ে অন্তত দাঁত ভাঙার জোগাড়। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের বেশ কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে গত দু'দিনে। সেখানে দেখা গিয়েছে ছাত্রীদের পাশাপাশি তাঁদের অভিভাবকরাও আন্দোলন করছেন। কারও দাবি, "আমার মেয়ে ইংরেজি মেসেজ করতে পারে, আর সেখানে ওই বিষয়ে ফেল করল কী করে?" কেউ বা আবার প্রশ্ন ছুঁড়েছেন, "মাধ্যমিকে লেটার পাওয়া ছাত্রী কীভাবে উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিটে পাশের মুখ দেখতে পেল না?" আপাতত এসব নিয়ে তুমুল তরজা। নেটদুনিয়ার নীতিপুলিশেরাও একপক্ষ প্রশ্ন তুলেছেন বানান না জানা ছাত্রীদের কাঠগড়ায় তোলার জন্য। এবার সেই প্রেক্ষিতেই মুখ খুললেন শ্রীলেখা।
<আরও পড়ুন: বুম্বা একাই ৩০ বছর টেনেছে? তাপস, মিঠুন, আমি কি সাইড রোলে ছিলাম?: চিরঞ্জিৎ>
বাংলার শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেত্রী। তাঁর সপাট প্রশ্ন, "Umbrella কেন ambrella হল? সেটা ভাবুন।" স্বাভাবিকভাবেই নেটদুনিয়াতেও প্রশ্ন উঠেছে, যে পড়ুয়ার দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়েও সামান্য বানান-জ্ঞানটুকু নেই, তাঁরা কীভাবে আগের শ্রেণীগুলোতে উত্তীর্ণ হতে পেরেছেন? স্কুলের পঠনপাঠন-ই বা এযাবৎকাল কেমন ছিল? উচ্চ মাধ্যমিকে ফেল করা পড়ুয়াদের বিক্ষোভ অবস্থান থেকে এই একটি প্রশ্ন-ই ভাবিয়ে তুলেছে জনগণকে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে শ্রীলেখার মন্তব্যকে নেটদুনিয়ার একাংশ সমর্থন করেছেন।
তবে এখানেই শেষ নয়। বারবার স্কুলের ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া এবং দীর্ঘকাল রাজ্যের সমস্ত কার্যকলাপ বহাল থাকলেও কেন শিক্ষাঙ্গনের দরজায় তালা ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে একাধিকবার? সেই প্রশ্নও উঠেছে। সম্প্রতি রাজ্যে তীব্র দাবদাহের জন্য সরকারি স্কুলগুলিতে গরমের ছুটির সময়সীমা বাড়িয়ে ২৭ জুন অবধি করা হয়েছে। আর সেই ছুটি ঘোষণার পরই বাংলায় বর্ষার আগমনের ঘোষণা। স্বাভাবিকভাবেই এবার কৌতূহল, তাহলে কি অতিরিক্ত গরমের ছুটি বাতিল হয়ে যাবে? সে উত্তর পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের মতোই অধরা। এককথায়, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা-বিতর্কের পাহাড়। শ্রীলেখার মন্তব্য, "ওদিকে গরমের ছুটি আবারও বাড়ল.. আচ্ছা উপভোগ করো।" এমন পোস্টে যে পরোক্ষভাবে অভিনেত্রী মমতা সরকারকে তুলোধনা করেছেন, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। তার ইঙ্গিত পোস্টের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হ্যাশট্যাগ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন