বাঙালির অন্তরে বিবেক বলতেই স্বামীজি। আর তাঁকে গড়ে পিঠে যিনি নাস্তিক থেকে ধর্মচর্চার দিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি তাঁর ইস্ট এবং আরাধ্য রামকৃষ্ণ পরমহংস। সেযুগে দাঁড়িয়েও এহেন দূরদর্শিতা এবং অন্তর্দৃষ্টি রাখা দুজন মানুষের পক্ষেও যে সম্ভব, একথাই প্রমাণ করেছিলেন। তাঁদের নিয়েই মশকরা, কটু কথা বলেই রোষানলে অমোঘ লীলা দাস। এবার, তাকেই একহাত নিলেন শ্রীজাত।
Advertisment
রামকৃষ্ণ পরমহংস এবং স্বামীজির অপমান করেছেন তিনি। তাঁদের চিন্তা ভাবনা, ধ্যান ধারণা এমনকি সাধু হয়ে আমিষ ভোজন করতেন স্বামীজি, এই নিয়েও কটাক্ষ করেন। অজানা নয়, ঠাকুর নিজেও দক্ষিণেশ্বরে পুজো করাকালীন আত্মতুষ্টির কথা বলতেন। ঈশ্বরকে সেবা করতে গেলে নিজের সেবার কথা বলতেন। উল্লেখ আছে এমনও ঠাকুর নিজে হাতে মা ভবতারিণীকে খাইয়ে দিতেন। এবার শ্রীজাত অমোঘ লীলা দাসকে নিয়ে যা বলেন...
"ধর্ম, অর্থাৎ ‘যা ধারণ করে’। এবার সেই ধারণ করার পাত্রকে তুমি আকারে যত ছোট করে আনবে, তোমার ধর্মাচরণও তেমনই হবে। চারপাশ থেকে নিয়মের নিগড়ে বাঁধতে বাঁধতে এক সময় ভাবনার কঙ্কালটাই পড়ে থাকবে শুধু, প্রাণ থাকবে না তার। এঁদের হয়েছে সেই দশা। কী খাব না, কী পরব না, কোথায় যাব না, এইসবই হয়ে দাঁড়িয়েছে মোক্ষ। কী করব, এটা আর লক্ষ্যে নেই। থাকলে আজ এই সমস্ত কথা ব’লে মানুষজনকে এবং নিজের প্রতিষ্ঠানকে বিব্রত করতেন না। আমি যদি গান লিখতে এসে রবীন্দ্রনাথকে অস্বীকার করি বা ফিজিক্স পড়াতে গিয়ে আইনস্টাইনকে অস্বীকার করি, তাহলে যেমনটা হবে, ইনিও ঠিক তেমনটাই করেছেন। মুশকিল হয়েছে কী, এঁদের কাছে শ্রীরামকৃষ্ণ কেবলই একজন পূজারী পুরোহিত এবং স্বামী বিবেকানন্দ শুধুমাত্র একজন গেরুয়াধারী সন্ন্যাসী হয়ে থেকে গেছেন। এই দুই মানুষের তথা মনীষীর ব্যাপ্তি, বিস্তৃতি, দর্শন, চিন্তাধারা বা সামগ্রিক অবদান, এসবের কিছুই জেনে দেখা হয়নি। অজ্ঞানতা অবশ্য একধরনের ক্ষমা দাবি করতে পারে, কিন্তু এর উল্টোদিকটা আরও মারাত্মক। তা হলো, জেনেও অবজ্ঞা করা, বুঝেও তাচ্ছিল্য করা। এর মধ্যে একধরনের অপরায়নের রাজনীতি কাজ করে। উড়িয়ে দাও। নেগেট করো। তা যদি নিজের অশিক্ষা বলে প্রমাণিত হয়, তাও করো। দুই বাঙালির মহাজোট যে-অসাধ্যসাধন করে গেছে, প্রাদেশিকতার ঘোমটার আড়াল থেকে তাকে অন্যায্যের খেতাব দাও।"
সন্ন্যাস যার শিরায়, সে নাকি স্বামীজিকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করেন। স্পষ্ট প্রতিবাদ শ্রীজাতর গলায়। অমোঘ লীলা দাস ব্যাঙ্গের সুরেই বলেন, "একজন মানুষ হিসেবে বিবেকানন্দের পা ছুঁয়ে নেবেন তবে একজন সন্ন্যাসী হিসেবে তাঁকে সবকিছুতে গ্রহণ করা যায় না। একজন সাধু যিনি বিদেশে গিয়ে ব্যাঙ্গের সুরে বক্তৃতা দেন তিনি সবে ভাল হতে পারেন তবে ধূমপান করবেন কেন? আমিষ খাবেন কেন? সাধুদের সংযম থাকে, তাঁরা কারওর কষ্ট দেখতে পারেন না।" ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ এবং স্বামীজি কেবল একজন পুরোহিত ও গেরুয়া বসনধারীই হয়ে রয়েছেন এদের কাছে। তিনি আরও লিখছেন...
"অমোঘবাবু বোধহয় ভুলে গেছেন, যে-বহুতল বাড়ির ৪৫ কি ৬৭ বা ৮৩ তলার কোনও একখানা কামরা থেকে তিনি গলা তুলে কথা বলছেন, সেই বহুতলের ভিতটার নাম স্বামী বিবেকানন্দ। আর যে-জমিতে সেই ভিত খোঁড়া হয়েছিল, সেই জমিটার নাম পরমহংস শ্রীরামকৃষ্ণ। আজ গেরুয়া বসন গায়ে চাপিয়ে কপালে তিলক কেটে মুখে মাইক এঁটে যেটুকু করে খাচ্ছেন, তার একবিন্দুও জুটত না, এই দু’জন মানুষ ধর্মচর্চার দরজা হাট করে খুলে না-দিলে। কাজটা হয়তো একা হাতে করেছেন স্বামী বিবেকানন্দ, কিন্তু তাঁর মাটিকে প্রতিমায় রূপান্তরিত করেছেন যে-কারিগর, সেই শ্রীরামকৃষ্ণের অবদানই বা কম কীসে?"
ছিল না ইন্টারনেট, ছিল না বেশি পুঁথি তথ্য। বিজ্ঞানমনস্ক নরেনকে নিজের দায়িত্বে দীক্ষায় দীক্ষিত করেন ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও কিছুই বোঝেন নি অমোঘবাবু। সন্ন্যাস কেরিয়ার কিংবা অপশন হতে পারে না। এটি একধরনের যাপন বলেই উল্লেখ করেন শ্রীজাত। তবে, তাঁর সঙ্গে নজর এড়ায়নি হাতের লাখ টাকার ঘড়ি। সোজা জানতে চাইলেন টমি হিলফিগারের ঘড়ি পড়লে তিনি আবার দ্রষ্টা হবেন কী করে?
'গেরুয়া বসন-তিলক কেটে যেটুকু পেট চালাচ্ছে...', স্বামীজির অপমানে 'অমোঘ'কে তিরস্কার শ্রীজাতর!
সন্ন্যাস কেরিয়ার হতে পারে না... বিস্ফোরক শ্রীজাত!
Follow Us
বাঙালির অন্তরে বিবেক বলতেই স্বামীজি। আর তাঁকে গড়ে পিঠে যিনি নাস্তিক থেকে ধর্মচর্চার দিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি তাঁর ইস্ট এবং আরাধ্য রামকৃষ্ণ পরমহংস। সেযুগে দাঁড়িয়েও এহেন দূরদর্শিতা এবং অন্তর্দৃষ্টি রাখা দুজন মানুষের পক্ষেও যে সম্ভব, একথাই প্রমাণ করেছিলেন। তাঁদের নিয়েই মশকরা, কটু কথা বলেই রোষানলে অমোঘ লীলা দাস। এবার, তাকেই একহাত নিলেন শ্রীজাত।
রামকৃষ্ণ পরমহংস এবং স্বামীজির অপমান করেছেন তিনি। তাঁদের চিন্তা ভাবনা, ধ্যান ধারণা এমনকি সাধু হয়ে আমিষ ভোজন করতেন স্বামীজি, এই নিয়েও কটাক্ষ করেন। অজানা নয়, ঠাকুর নিজেও দক্ষিণেশ্বরে পুজো করাকালীন আত্মতুষ্টির কথা বলতেন। ঈশ্বরকে সেবা করতে গেলে নিজের সেবার কথা বলতেন। উল্লেখ আছে এমনও ঠাকুর নিজে হাতে মা ভবতারিণীকে খাইয়ে দিতেন। এবার শ্রীজাত অমোঘ লীলা দাসকে নিয়ে যা বলেন...
আরও পড়ুন < ব্যাংকে ‘গুরুতর হেনস্থার’ শিকার অ্যাসিড আক্রান্ত! অভিযোগ করলেন শাহরুখের কাছে.. >
"ধর্ম, অর্থাৎ ‘যা ধারণ করে’। এবার সেই ধারণ করার পাত্রকে তুমি আকারে যত ছোট করে আনবে, তোমার ধর্মাচরণও তেমনই হবে। চারপাশ থেকে নিয়মের নিগড়ে বাঁধতে বাঁধতে এক সময় ভাবনার কঙ্কালটাই পড়ে থাকবে শুধু, প্রাণ থাকবে না তার। এঁদের হয়েছে সেই দশা। কী খাব না, কী পরব না, কোথায় যাব না, এইসবই হয়ে দাঁড়িয়েছে মোক্ষ। কী করব, এটা আর লক্ষ্যে নেই। থাকলে আজ এই সমস্ত কথা ব’লে মানুষজনকে এবং নিজের প্রতিষ্ঠানকে বিব্রত করতেন না। আমি যদি গান লিখতে এসে রবীন্দ্রনাথকে অস্বীকার করি বা ফিজিক্স পড়াতে গিয়ে আইনস্টাইনকে অস্বীকার করি, তাহলে যেমনটা হবে, ইনিও ঠিক তেমনটাই করেছেন। মুশকিল হয়েছে কী, এঁদের কাছে শ্রীরামকৃষ্ণ কেবলই একজন পূজারী পুরোহিত এবং স্বামী বিবেকানন্দ শুধুমাত্র একজন গেরুয়াধারী সন্ন্যাসী হয়ে থেকে গেছেন। এই দুই মানুষের তথা মনীষীর ব্যাপ্তি, বিস্তৃতি, দর্শন, চিন্তাধারা বা সামগ্রিক অবদান, এসবের কিছুই জেনে দেখা হয়নি। অজ্ঞানতা অবশ্য একধরনের ক্ষমা দাবি করতে পারে, কিন্তু এর উল্টোদিকটা আরও মারাত্মক। তা হলো, জেনেও অবজ্ঞা করা, বুঝেও তাচ্ছিল্য করা। এর মধ্যে একধরনের অপরায়নের রাজনীতি কাজ করে। উড়িয়ে দাও। নেগেট করো। তা যদি নিজের অশিক্ষা বলে প্রমাণিত হয়, তাও করো। দুই বাঙালির মহাজোট যে-অসাধ্যসাধন করে গেছে, প্রাদেশিকতার ঘোমটার আড়াল থেকে তাকে অন্যায্যের খেতাব দাও।"
আরও পড়ুন < ‘রাজনীতিবিদরা বেশিরভাগ অশিক্ষিত!’ দেশের উন্নয়নে বাধা…বিস্ফোরক কাজল >
সন্ন্যাস যার শিরায়, সে নাকি স্বামীজিকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করেন। স্পষ্ট প্রতিবাদ শ্রীজাতর গলায়। অমোঘ লীলা দাস ব্যাঙ্গের সুরেই বলেন, "একজন মানুষ হিসেবে বিবেকানন্দের পা ছুঁয়ে নেবেন তবে একজন সন্ন্যাসী হিসেবে তাঁকে সবকিছুতে গ্রহণ করা যায় না। একজন সাধু যিনি বিদেশে গিয়ে ব্যাঙ্গের সুরে বক্তৃতা দেন তিনি সবে ভাল হতে পারেন তবে ধূমপান করবেন কেন? আমিষ খাবেন কেন? সাধুদের সংযম থাকে, তাঁরা কারওর কষ্ট দেখতে পারেন না।" ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ এবং স্বামীজি কেবল একজন পুরোহিত ও গেরুয়া বসনধারীই হয়ে রয়েছেন এদের কাছে। তিনি আরও লিখছেন...
আরও পড়ুন < জিতুর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরেই মনোবিদের কাছে? মন-মানসিকতা ঠিক রাখতে অভিনেত্রী যা করলেন… >
"অমোঘবাবু বোধহয় ভুলে গেছেন, যে-বহুতল বাড়ির ৪৫ কি ৬৭ বা ৮৩ তলার কোনও একখানা কামরা থেকে তিনি গলা তুলে কথা বলছেন, সেই বহুতলের ভিতটার নাম স্বামী বিবেকানন্দ। আর যে-জমিতে সেই ভিত খোঁড়া হয়েছিল, সেই জমিটার নাম পরমহংস শ্রীরামকৃষ্ণ। আজ গেরুয়া বসন গায়ে চাপিয়ে কপালে তিলক কেটে মুখে মাইক এঁটে যেটুকু করে খাচ্ছেন, তার একবিন্দুও জুটত না, এই দু’জন মানুষ ধর্মচর্চার দরজা হাট করে খুলে না-দিলে। কাজটা হয়তো একা হাতে করেছেন স্বামী বিবেকানন্দ, কিন্তু তাঁর মাটিকে প্রতিমায় রূপান্তরিত করেছেন যে-কারিগর, সেই শ্রীরামকৃষ্ণের অবদানই বা কম কীসে?"
আরও পড়ুন < ‘একজন মেরুদণ্ডহীন মানুষ কীভাবে…’, তারকাদের CBI তদন্তের পরই প্রশ্ন তুললেন মানসী সিনহা! > <
ছিল না ইন্টারনেট, ছিল না বেশি পুঁথি তথ্য। বিজ্ঞানমনস্ক নরেনকে নিজের দায়িত্বে দীক্ষায় দীক্ষিত করেন ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও কিছুই বোঝেন নি অমোঘবাবু। সন্ন্যাস কেরিয়ার কিংবা অপশন হতে পারে না। এটি একধরনের যাপন বলেই উল্লেখ করেন শ্রীজাত। তবে, তাঁর সঙ্গে নজর এড়ায়নি হাতের লাখ টাকার ঘড়ি। সোজা জানতে চাইলেন টমি হিলফিগারের ঘড়ি পড়লে তিনি আবার দ্রষ্টা হবেন কী করে?