হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। যে নামটা এখন গোটা বাংলায় 'মোস্ট ওয়ান্টেড'! রাজ্যের শিক্ষা দুর্নীতি মামলার সুতোয় টান পড়তেই আরও এক অভিনেত্রীর নাম। কুন্তল ঘোষের মুখে এই হৈমন্তীর নাম শুনেই তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি থেকে বিনোদনমহল। কোথায় তিনি? সেই খোঁজ এখনও অধরা হলেও সময় যত এগোচ্ছে প্রতিমুহূর্তে নিত্যনতুন তথ্য মিলছে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে।
বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। খান কয়েক মিউজিক ভিডিওতেও দেখা গিয়েছে তাঁর মুখ। তবে সেসব কাজ শেষ না করেই পগার পার! শুটিং ফ্লোরে নিত্যনতুন দাবিদাওয়া নিয়ে প্রযোজনা সংস্থারও মাথাব্যথা ধরিয়ে দিয়েছিলেন এই হৈমন্তী। নিজেকে বড় অভিনেত্রী ভাবতেন। আর সেখান থেকেই হাজারও বায়নাক্কা! আরমান ওরফে গোপাল দলপতির কাছে হৈমন্তী 'ইনোসেন্ট' হলেও টলিপাড়ার রেকর্ড কিন্তু অন্য কথা বলছে। হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বিরক্ত হয়েছিলেন ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর সংযুক্তা রায়ও।
মডেলিং দিয়ে কাজ শুরু করলেও বাহ্যিক চাকচিক্যের দরুণ সিনেপাড়ার অনেকের সঙ্গেই চেনাজানা ছিল। অতনু বোসের বাড়ির কাঠের মিস্ত্রির জোরোজুরিতেই 'অচেনা উত্তম'-এ ছোট্ট একটা রোল করেন। সৌমিত্রের 'জাল' সিনেমাতেও ছিলেন। সবমিলিয়ে ছোটখাট কাজ করেও চক্ষু চড়কগাছ করার মতো বিলাসবহুল জীবনযাপন ছিল হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের। শুটিং সেটে কেমন ছিলেন? সংবাদমাধ্যমের কাছে সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেই একরাশ বিরক্তি ঝরে পড়ল সংযুক্তা রায়ের মুখে।
<আরও পড়ুন: অর্পিতা-হৈমন্তীদের মতো ‘অনামি নায়িকা’রাই কালো টাকা রাখার ‘সেফ লকার’?>
বাংলা সিনেইন্ডাস্ট্রির এই ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর বললেন,"দিন কয়েক কাজ করেছি ওঁর সঙ্গে। সরাসরি কেউ যোগাযোগ করতাম না। প্রোডাকশনের কেউই সেই কাজটা করে নিত। তবে পোশাক, সাজসজ্জার জন্য মাঝেমধ্যে কথা বলতেই হত হৈমন্তীর সঙ্গে। গোড়ার দিকে সব ঠিকঠাক মনে হলেও দিন কয়েক যেতেই আসল রূপটা বেরিয়ে এল। ফ্লোরে এসে হাজার বায়নাক্কা।" এখানেই শেষ নয়।
সংযুক্তা এও যোগ করেন যে, "হঠাৎ একদিন বলল, আমি লিড নায়িকা আমাকে আলাদা মেকআপ ভ্যান দিতে হবে। প্রোডাকশনের গাড়ি লাগবে বাড়ি পর্যন্ত। সব সুযোগ-সুবিধে আলাদা দরকার। প্রযোজকের সূত্রেই যেহেতু এসেছিল, তাই কিছু হলেই প্রযোজককে নালিশ করার হুমকি দিত। তবে নিয়ম যেহেতু সবার জন্যই এক, তাই কেউ পাত্তা দেয়নি হৈমন্তীকে বিশেষ। একবার শুটে ঝামেলা লাগায় আমাকে ফোন করেছিল। পাত্তা দিইনি। ওঁর ব্যবহারটাই সাধারণ মনে হয়নি।" কীসের জোরে শুটিং ফ্লোরে এত প্রভাব খাটাতেন হৈমন্তী? প্রভাবশালী কেউ রয়েছেন নায়িকার নেপথ্যে? উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
<আরও পড়ুন: টলিউডে বড় বাজি! শ্রাবন্তী ‘দেবী চৌধুরানি’, প্রসেনজিৎ ভবানি পাঠক, রয়েছে ভিকি কৌশল যোগও>
'গাটস' পরিচালক সুব্রত নন্দীর বক্তব্য, "ওকে অডিশনের মাধ্যমেই বেছে নিয়েছিলাম। ও যে বিবাহিত সেটাই তো জানতাম না। খবর দেখে জানতে পারলাম। বাড়ি থেকে ৫ মিনিটের দূরত্বে স্টুডিও হলেও এগিয়ে দেওয়ার কথা বলত। তবে সেই সুবিধে ওকে দেওয়া হয় নি।" আরেক পরিচালক কিংশুকেরও তাই মত। বললেন, "কাজ ছাড়া কথা হত না। তবে সবার বিষয়েই একটা ধারণা তো থাকে। হৈমন্তী তো সেক্ষেত্রে একেবারে আলাদা। গোপাল দলপতি যে ওর স্বামী, সেটা জানতামও না।"