রাজনীতির অবসরে স্বাদবদল বাম শিবিরের নেতাদেরা। প্রায় শ'খানেক সিপিএম কর্মী নিয়ে প্রিয়া সিনেমাহলে হাজির 'অপরাজিত' দেখতে। শনিবার বিকেল চারটে কুড়ির শো প্রিয়া সিনেমাহলে। সেখানেই সদলবলে হাজির সুজন চক্রবর্তী, সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা। রয়েছেন কল্লোল মজুমদারও। শতাধিক সিপিএম কর্মীদের নিয়ে 'অপরাজিত' দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনাটা অবশ্য সুজনেরই।
আসলে যাদবপুরের বাম যুব-নেতারা সুজন চক্রবর্তীর কাছে এবদার রেখেছিলেন 'অপরাজিত' দেখার। সেই প্রেক্ষিতেই দেড়শ টিকিট কাটা হয় প্রিয়া সিনেমাহল থেকে। শনিবারই অবশ্য শেষবেলায় নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ইঙ্গিত দিয়ে বাম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন লেখেন- যা দেখছি, "গোটা সিনেমাহল বুক করে নিলেই হত।"
প্রসঙ্গত, অনীক দত্ত বরাবরই বামমনোভাবাপন্ন। প্রকাশ্যে বিজেপি-তৃণমূলের সমালোচনা করতে কোনওদিনই পিছপা হননি তিনি। আর সেই পরিচালক-ই যখন 'অপরাজিত'র মতো একটা ছবি তৈরি করে বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এক মাইলফলক গড়লেন, তখন বাম নেতারা যে তা নিয়ে উচ্ছ্বসিত হবেন, বলাই বাহুল্য। আর সেই প্রেক্ষিতেই শো দেখতে যাওয়া। সুজন চক্রবর্তী টিকিট কাটার পরই বিমান বসুকে জানিয়েছিলেন। দেখলেন, তিনিও ততোধিক উচ্ছ্বসিত 'অপরাজিত' নিয়ে। ওদিকে সূর্যকান্ত মিশ্রর-ও শনিবার দলীয় কোনও কর্মসূচী ছিল না। অতঃপর বাম দলের ৩ শীর্ষ নেতা দলের শতাধিক কর্মী নিয়ে হাজির হলেন প্রিয়া সিনেমাহলে বিকেলের শো দেখতে।
<আরও পড়ুন: ‘অনেক’ ধন্যবাদ কলকাতা, ছবির প্রচারে এসে হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা মানতে নারাজ আয়ুষ্মান>
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই মুক্তি পেয়েছে অনীক দত্ত ‘অপরাজিত’ (Aparajito)। ১৯৫৫ সালে বিশ্ব চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ‘পথের পাঁচালি’ নামক যে ‘মাস্টারপিস’ তৈরি করেছিলেন সত্যজিৎ রায়, তার নেপথ্যে কতটা স্ট্রাগল ছিল? সেই গল্পই ২০২২ সালে এসে পর্দায় তুলে ধরেছেন পরিচালক। প্রথমটায় বাংলা জুড়ে খুব বেশি প্রেক্ষাগৃহে জায়গা না পেলেও মাত্র ১ সপ্তাহেই রাজ্যের বিভিন্ন মাল্টিপ্লেক্স, সিনেমাহলগুলিতে জায়গা করে নিয়েছে এই ছবি। প্রশংসায় ভরিয়েছেন সিনেসমালোচকরা। রাজ্যজুড়ে রমরমিয়ে চলছে ‘অপরাজিত’। শুধু তাই নয়, অন্য রাজ্যেও হল পেয়েছে জিতু কামাল অভিনীত এই ছবি।
IMdb-তে রেটিং ৯.৬। যা কিনা সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘অপরাজিত’র রেটিংকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। মাণিকবাবুর সিনেমার রেটিং IMdb-তে ৮.৬। নন্দনে এখনও অবধি শো না পেলেও ‘অপরাজিত’র ব্যবসা আটকে থাকেনি। দর্শকরা এই ছবি দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন শহরের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে। অনেকেরই আক্ষেপ, টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। বেশিরভাগ দিনই প্রায় হাউজফুল শো। তাই আগেভাগেই দেড়শো টিকিট কেটে নিয়েছেন সুজন চক্রবর্তী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন