'চালবাজ'- ছবির নাম আসলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে প্রয়াত কিংবদন্তি শ্রীদেবীর সেই দ্বৈত চরিত্রের অনবদ্য অভিনয়। যেখানে তিনি দুটি চরিত্রে অনায়াসে দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করেছেন। তবু অনেকেই মনে রেখেছেন তাঁর সঙ্গে রজনীকান্তের অনস্ক্রিন রসায়নকে। ছবিটি মুক্তির সময় নানা আলোচনা হয়েছিল। তখন, একসঙ্গে এক ডজনেরও বেশি সিনেমায় তাঁরা কাজ করে ফেলেছেন। ফলে, তাঁরা হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় এবং কালজয়ী জুটি। তবে এই ঝলমলে সিনেম্যাটিক মুহূর্তগুলোর পেছনে একটি নীরব, অপূর্ণ প্রেমের গল্পও আছে। যেটা আজও অনেকের অজানা।
চলচ্চিত্র নির্মাতা কে. বালাচন্দর, যিনি শ্রীদেবী ও রজনীকান্ত- উভয়ের কেরিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, একবার একটি বিশেষ ঘটনা শেয়ার করেন। তাঁর কথায়, কেরিয়ারের শুরুর দিকেই রজনীকান্ত শ্রীদেবীর প্রতি গভীর অনুভূতি অনুভব করতে শুরু করেন। একবার, শ্রীদেবীর নতুন বাড়ির গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন তিনি, উদ্দেশ্য ছিল নিজের মনের কথা প্রকাশ করা। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে হঠাৎ কারেন্ট চলে যায়। গোটা ঘরে তখন অন্ধকার। প্রবল কুসংস্কারে বিশ্বাসী রজনীকান্ত এই ঘটনাকে অশুভ সংকেত হিসেবে ধরেন। তিনি আর কিছু না বলেই চুপচাপ ফিরে যান। এরপর তিনি আর কখনও শ্রীদেবীর কাছে তাঁর অনুভূতির কথা প্রকাশ করেননি। পরবর্তীতে, ১৯৯৬ সালে শ্রীদেবী বিয়ে করেন প্রযোজক বনি কাপুরকে।
Actor Passed Away: হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস, ৩৪ বছরের তারকার মৃত্যু ঘিরে শোকের ছায়া
তাঁদের এই অনন্য বন্ধনের সূচনা হয়েছিল অনেক আগেই, ১৯৭৬ সালে, কে বালাচন্দর পরিচালিত তামিল ছবি ‘মুন্দ্রু মুদিচু’-র সেটে। সেখানে মাত্র ১৩ বছর বয়সী শ্রীদেবী অভিনয় করেছিলেন রজনীকান্তের সৎ মায়ের চরিত্রে। সেই ছবিই হয়ে ওঠে শ্রীদেবীর প্রথম বড় ব্রেক এবং রজনীকান্তের কেরিয়ারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
অফ-স্ক্রিনে তাঁদের সম্পর্ক ছিল অন্যরকম। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতার প্রতীক ছিলেন তাঁরা। রজনীকান্ত ছিলেন শ্রীদেবীর মা-এর খুব ঘনিষ্ঠ, এবং তাঁদের পরিবার বহু বছর ধরে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। এমনকি, ‘রানা’ ছবির শুটিংয়ের সময় যখন রজনীকান্ত গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, শ্রীদেবী তাঁর জন্য সাত দিন উপোস করে প্রার্থনা করেছিলেন।