Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

Swastika Mukherjee: নিজেকে বদলে ফেললে অনেক কিছু মিস হয়ে যাবে: স্বস্তিকা

Swastika Mukherjee nikhoj 2: মুক্তি পেল স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের নিখোঁজ ২। প্রথম পর্বের থেকে দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে আরও টানটান উত্তেজনা। তার আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইনের সঙ্গে আলাপচারিতায় 'বৃন্দা'।

author-image
Kasturi Kundu
New Update
Gurucharan Singh

নিজেকে বদলে ফেললে অনেক কিছু মিস হয়ে যাবে: স্বস্তিকা

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: হ্যাপি নিউ ইয়ার। বছরের শুরুতে প্রথম কথা, তাই জানতে চাইব এই বছরের 'গোল' কী?

Advertisment

স্বস্তিকা:  ৩১ ডিসেম্বর আমি কাজ করেছি। ১ জানুয়ারিও কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, শ্যুটিংয়ের ডেটটা পড়েছিল ২ জানুয়ারি। যে চরিত্রগুলোতে কাজ করা হয়নি, যাঁদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে সেগুলো এই বছর করে ফেলতে হবে। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: পুরনো বছরের এমন কোনও ইচ্ছে যা পূরণ না হওয়ার জন্য আক্ষেপ?

স্বস্তিকা: না, আমি আক্ষেপ নিয়ে বাঁচতে একদম ভালবাসি না। যেটা করতে ইচ্ছে করে সেটা করে নিই। এই বছর হল না বলে মন খারাপ করে বসে রইলাম, পরের বছর করতে হবে এইসব আমার দ্বারা হয় না। যেটা হল না, সেটাকে ছেড়ে দিই। 

Advertisment

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: সোশ্যাল মিডিয়ায় তো আপনি খুবই অ্যাক্টিভ। সব কিছু শেয়ার করেন। ইন্ডাস্ট্রিতে ২৪ বছর পরও অডিশন দিতে হচ্ছে এটা শেয়ার করতে ইগোকে লাগেনি?

স্বস্তিকা:  না। কারন একজন মানুষ যখন ২০ বছর একটা অফিসে চাকরি করার পর নতুন অফিসে যায় তাঁকে তো মুখ দেখে নেবে না। নিয়ম মেনে ইন্টারভিউ দিয়েই তো চাকরিটা পেতে হবে। আমাদের প্রফেশন বাদে বাকি সব জায়গায় কিন্তু, পরীক্ষার মার্কশিট, সিভি দরকার হয়। ইন্টারভিউ হয়। শুধুমাত্র অভিনয় করার ক্ষেত্রে মনে করা হয় এগুলোর কোনওটারই দরকার নেই। আর মুম্বইতে কাজ করার প্রসেসই এটা। থ্রি ইডিয়টসের জন্য কিন্তু, অনুষ্কা শর্মাকেও অডিশন দিতে হয়েছিল। কিন্তু, উনি চান্স পাননি। সেই রোলটা প্লে করেছিলেন করিনা। কলকাতায় বসে আমরা ভাবি বিশাল কিছু হয়ে গিয়েছি। অডিশন দিয়ে আর কী হবে? নির্দিষ্ট রোলটার জন্য সেই ব্যক্তিটি পারফেক্ট কিনা সেটা বুঝতে অডিশন দিতে হয় । তুমি ভাল না খারাপ অভিনেতা বা অভিনেত্রী সেই পরীক্ষা তো ওঁরা নিচ্ছে না। হয়ত কেউ দারুণ অভিনয় করে কিন্তু, ওই রোলটার জন্য সে ফিট নয়। সেই জন্যই অডিশনটা হয়। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন:  'উল্টে দেখো… পাল্টে গেছি'- এইরকম একটা পোস্ট শেয়ার করেছিলেন। নিজেকে কোনওভাবে বদলে ফেলেছেন বা কখনও পুরোপুরি বদলে ফেলতে ইচ্ছে করে?

স্বস্তিকা: হেয়ারস্টাইল চেঞ্জ করে লুকটা বদলেছিলাম। সেই জন্য ওই পোস্ট। তাছাড়া আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই নিজেকে বদলে ফেলার। বদলে ফেলতে গেলে অনেক কিছু মিস হয়ে যাবে। আমি খুবই ওভার ইমোশনাল একজন মানুষ। যদি নিজেকে বদলে ফেলি তাহলে তো সেই ওভার ইমোশন ব্যাপারটাও তো আমার মধ্যে থেকে চলে যাবে। কিন্তু, এই ওভার ইমোশনই আমাকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ব্যক্তিগত জায়গা থেকে যদি সেটা মাইনাস করে দিই তাহলে কাজের জায়গা থেকেও মাইনাস হয়ে যাবে।  

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: ব্যক্তিগত দিক থেকে না বদলাতেও নিখোঁজের দ্বিতীয় সিজনে বৃন্দাকে কতটা বদলে যেতে দেখব?

স্বস্তিকা: বৃন্দাকে আমরা সিজন ওয়ানে যেভাবে চিনেছে তার থেকে অনেক বেশি গভীরে গিয়ে চিনতে পারবে। পুলিশি সত্ত্বাকে, মগজাস্ত্রকে সে কতটা কাজে লাগাচ্ছে সেই সঙ্গে একজন মায়ের তাঁর হারানো সন্তানকে খুঁজে পাওয়ার যে তাগিদ সেটাও নিখোঁজের সিজন ২-এ আরও ভালভাবে রয়েছে। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: পুলিশের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নিজেকে তৈরি করতে আলাদা কোনও এফোর্ট দিতে হয়েছে?

স্বস্তিকা: যে কোনও চরিত্রের জন্যই খাটতে হয়। সব অভিজ্ঞতা তো মানুষের থাকে না। সবরকম চরিত্রের সঙ্গেও আগে থেকে আলাপ-পরিচয় থাকে না। অভিনয় খুবই শক্ত কাজ। একজন আর্টিস্ট হিসেবে এই চরিত্রটা আমার কাছে খুবই চ্যালেঞ্জিংও ছিল। একই অঙ্গে পুলিশ আর মায়ের রূপ। যেটা আমার কাজকে আরও কঠিনও করে তুলেছিল। সবসময় ওই ব্যালেন্সটা মাথায় রেখে কাজ করতে হয়েছে। নিজের সঙ্গে নিজের একটা লড়াই চলছিল যে কোনওসময়ই যেন মা আর পুলিশের সত্ত্বাটা যেন মিলে না যায়। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: রিয়েল লাইফে কোন জিনিসটা নিখোঁজ হলে তোমার কষ্ট হবে?

স্বস্তিকা:  দু-বছর আগে আমার একটা ঘড়ি হারিয়ে গিয়েছিল। খুব শখ করে ঘড়িটা কিনেছিলাম। এখনও ওই শোকটা ভুলতে পারিনি। রোজই মনে হয় যদি ঘড়িটা পেয়ে যেতাম...। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: জীবনে এমন কোনও পরিস্থিতি এসেছে যখন মনে হয়েছে কিছু সময়ের জন্য নিখোঁজ হয়ে গেলে ভাল হত

স্বস্তিকা: না, আমি একদম একা থাকতে পারি না। একা থাকতে একটুও ভাল লাগেনা। যাই ঝামেলা হোক না কেন ওখানে থেকেই সেটা মেটাতে চাই। কোনও ইচ্ছেই নেই, নিরিবিলি জায়গায় একা গালে হাত দিয়ে বসে থাকব। এতটাই বিরক্ত লাগবে যে মাথার চুল নিজেই ছিঁড়ে ফেলব। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: নিখোঁজের মাঝে কখনও প্রেম খুঁজতে ইচ্ছে করে?

স্বস্তিকা: আসলে প্রেম তো খোঁজার জিনিস নয়। যদি প্রেম হওয়ার হয় তাহলে হবে। যদি না হওয়ার হয় তো হবে না। সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি ভাবি আজ প্রেম খুঁজব সেটা তো হয় না। কিছু কিছু জিনিস জীবনে ওইভাবে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাছাড়া প্রেম আমার জীবনে যে ভীষণ প্রয়োজন, খুব আকাঙ্খা রয়েছে এমন কিন্তু, নয়। প্রেম করার সময়ও বিশেষ নেই। অসম্ভব কাজের ব্যস্ততা। আর আমি চাই কাজের এই ব্যস্ততাটাই যেন থাকে। বয়স তো বাড়ছে, তাই মনে হয় অনেক কাজ বাকি। ওগুলো করে ফেলতে হবে। তার মধ্যে যদি প্রেম হয় তাহলে হবে। নেই বলে যে খুব দুঃখে আছি তা নয়, আর থাকলেও যে খুব ভাল থাকব সেই গ্যারান্টিও তো নেই। তাই প্রেম আমার ফোকাসে নেই। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: অনেকদিন আগে একটা পোস্টে বয়সের সঙ্গে নারী শরীরের পরিবর্তনকে তুলে ধরেছিলেন। এমনকী পাকা চুল পর্যন্ত দেখিয়েছিলেন। তারকারা তো নিজেদের সৌন্দর্যকেই সবসময় সামনে রাখতে চায়। সেখানে কী ভাবে এত সাহসী পদক্ষেপ?

স্বস্তিকা:  আমি নিজেকে একজন শিল্পী মনে করি। রূপোলি দুনিয়ার মানুষ ভেবে জীবনযাপন করি না। কাজ আমার ভালবাসা, আমার প্যাশন। আমার একদমই মনে হয় না যে সবসময় মানুষের সামনে নিজেকে আলাদা কোনও মোড়কের আড়ালে প্রেজেন্ট করব। ঘুম থেকে উঠলেই অভিনেত্রীদের স্বপ্নসুন্দরীর মতো লাগে, এটা ভাবা একেবারেই ভিত্তিহীন। একজন সাধারণ মানুষকে ঘুম থেকে উঠে ঠিক যেরকম লাগে আমাদেরকেও সেইরকমই লাগে। আমাকে ভীষণ সুন্দরভাবে কোনও একটা ফটোশ্যুটে যদি মানুষ দেখে তার পিছনে কিন্তু, অনেকের অবদান থাকে। ড্রেস, হেয়ার স্টাইল, মেকআপ আর্টিস্ট, ক্যামেরা পার্সন এদের সকলের প্রচেষ্টায় আমি অপরূপা হয়ে উঠি। আমি যেরকম মানুষ যদি সেইভাবে গ্রহণ করে সেটায় আমি খুশি। ফলস প্রিটেন্টটায় একদম বিশ্বাস করি না। আমরা এখন যে সময়টার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, রিয়্যালিটি মেকস মোর সেন্স টু পিপল। চার কিলো মেক আপ না করে রিয়্যাল চেহারা দেখতেই মানুষ আজ বেশি পছন্দ করে। আর আমি নিজেও খুব একটা মেক-আপ করি না। সিম্পল থাকতেই পছন্দ করি। অনেক সময় তো লিপস্টিক পড়তেও ভুলে যাই।  

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের মতো স্পষ্টবক্তাদের কি ইন্ডাস্ট্রির মানুষজন সমঝে চলে? 

স্বস্তিকা:  আমার সঙ্গে সকলেরই ভাল সম্পর্ক। কথাবার্তা হয়। যদি কারও মনে হয় ভেবে কথা বলতে হবে তাহলে তাঁরা নিশ্চয়ই ভেবে কথা বলার মতোই কাজই করে। আমার সঙ্গে এমন সম্পর্ক কারও নয় যেখানে ভেবে কথা বলতে হবে। তবে যাদের মনে এই দ্বিধা রয়েছে তাঁদের ভাবাই উচিত। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: ইন্ডাস্ট্রিতে এত বছর কাজের পর এমন কোনও স্বপ্নের নায়ক আছে যার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ারের ইচ্ছে আছে?

স্বস্তিকা:  অনেক পছন্দের অভিনেতা আছে। তাঁদের সঙ্গে হয়ত আগে কাজ করেছি কিন্তু, খুব বেশি করা হয়নি তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। সেইরকম পছন্দের মানুষ তো অবশ্যই আছে। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: আরজি কর কাণ্ডে ডাক্তারদের সঙ্গে লড়াইয়ের সহযোদ্ধা ছিলেন। টেক্কা রিলিজের পর ট্রোল করা হয়েছিল ওখানে নাকি সিনেমার প্রচার করেছেন। এই বিষয়গুলোকে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় গুরুত্ব দেন?

স্বস্তিকা:  ট্রোল নিয়ে একদমই ভাবিনা। ফালতু লোকের ফালতু কথা নিয়ে ভাবার সময়ই নেই আমার। যাঁরা গেল না তাঁদেরকেও কটাক্ষ করা হয়েছে। যাঁরা গেল এবং গিয়ে কোনও মন্তব্য করল না প্রত্যেকেই কটাক্ষ করা হল। যাঁরা স্লোগান দিল তাঁরাও কথা শুনল। মানুষ আসলে যে কোনও বিষয়ই মন্তব্য করতে চায়। আমার যে কাজটা করতে ইচ্ছে হয়েছে সেটা করেছি। ভবিষ্যতে যদি আবার মনে হয় তখনও করব। কে কী বলল সেই নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করার মতো সময় আমার নেই।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন: দেবের ফ্যানপেজ থেকে যেভাবে শিবপ্রসাদের স্ত্রী জিনিয়া সেনকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করা হচ্ছে...

স্বস্তিকা:  আজ দেবের ফ্যানপেজ থেকে এগুলো ঘটছে ঠিকই। কিন্তু, দু-তিন বছর আগে সালটা আমার ঠিক মনে নেই। কবীর সুমনের সঙ্গে শ্রীজাতর একটা দ্বন্দ্ব হয়েছিল। কবীর সুমন শ্রীজাতকে গালমন্দ করে জীবনে যখন শান্তি পাননি তখন শ্রীজাতর স্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে নোংরামি শুরু করেছিলেন। কবীর সুমন আর দেবের ফ্যান ফলোয়ার্সের মধ্যে তো কোনও তফাৎ দেখছি না। এগুলো নিম্ন মানসিকতার পরিচয়। একজন অভিনেতাকে ভাল লাগে বলে অন্য এক পরিচালকের স্ত্রীকে নোংরা কথা বলা কোন ধরনের সভ্যতা? তাছাড়া ২০২৫-এ এসে এইরকম ঘটনা ঘটল এমনটাও নয়। কবীর সুমন যখন শ্রীজাতর স্ত্রীকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন সেটা তো কোনও ফ্যানপেজের ছিল না। নিম্ন রুচি-মানসিকতার বর্হিপ্রকাশ যে যেভাবে পারছে করছে। আমি বিশ্বাস করি ফেসবুক একটা নর্দমা। যেখানে কখনও কম কখনও বেশি নোংরা জল যায়। জলটা নোংরাই। সমাজ কত খারাপভাবে অ্যাফেক্টেড হয়ে আছে সেটা তো নর্দমা খুললেই বোঝা যায়। ঘুম থেকে উঠে ফেসবুক খুললেই বোঝা যায় আজকের দিনে এই নর্দমা দিয়ে কতটা নোংরা জল যাবে।

Bengali Film Industry Swastika Mukherjree Bengali Cinema Bengali Film Bengali Actress OTT
Advertisment