Swastika On Santu Mukhopadhyay Birthday: দেখতে দেখতে কেটে গেল চার বছর। সালটা ছিল ২০২০। সেই বছরই আদুরে কন্যা স্বস্তিকাকে একা করে চলে গিয়েছেন অভিনেতা সন্তু মুখোপাধ্যায়। কাজের হাজার ব্যস্ততার মাঝেও প্রতি মুহূর্তে বাবার স্মৃতি আঁকড়ে বেঁচে আছেন স্বস্তিকা। ১৩ জানুয়ারি সন্তু মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগপ্রবণ পোস্ট শেয়ার করলেন স্বস্তিকা। বাবার সঙ্গে কাটানো সময়, একসঙ্গে গল্প-আড্ডা, হুইস্কি খাওয়ার সেই সোনালি মুহূর্তগুলো যেন আজ মনের ভিতর আরও ভিড় করে আসছে। বাবার জন্মদিনে তাঁর পছন্দের পারফিউম গায়ে মেখে সেই গন্ধে বিভোর থাকতে চান স্বস্তিকা। সন্তু মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে কী লিখলেন তিনি?
বাবাকে জড়িয়ে রয়েছেন এমন এক পরম তৃপ্তির মুহূর্ত ছবি শেয়ার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগী পোস্ট স্বস্তিকার। তিনি লিখেছেন, ' হ্যাপি বার্থডে বাবা। কোথায় আছো সে তো জানি না। কে আলমারি থেকে নতুন জামা বের করে জোর করে পরিয়ে দেবে তাও জানিনা। আশা করি কেউ নিশ্চয়ই আছে, আমার মতন করে তোমায় আগলে রেখেছে। প্রতি বছরের মতন, এবারেও নতুন ফতুয়া-লুঙ্গি পোরো। খাদির দোকানে গেলে, গেরুয়া রং এর কোনও কাপড় দেখলেই মনে হয় তোমার জন্য একটা পাঞ্জাবি বানাতে দি, তার পর মুহূর্তেই মনে পড়ে তুমি তো নেই। আজ সন্ধে নামলে দু পাত্তর ব্যালেন্টাইন খেও। কত ভালবাসতে। পৃথিবীর এত জায়গায় যাই, যত ভাল স্কচই কিনে আনি না কেন সেই ব্যালেন্টাইনটাই সেরা।'
স্বস্তিকা যোগ করেন, 'তোমার আর মা-এর না থাকাতে বাড়িতে খাওয়াদাওয়া, লোকজনের আসা যাওয়া, আনন্দ উৎসব প্রায় উঠে গেছে বললেই চলে। ঠিক ওই গানটার মতন - 'এত আনন্দ আয়োজন সবই বৃথা তোমায় ছাড়া'। ১৩ ই জানুয়ারি- এই দিনটা আমার কাছে আজীবন “আমার বাবার জন্মদিন” হয়েই রয়ে যাবে। অবশ্য শুধু একটা দিন কেন? বাকি বছরের অজস্র দিনগুলো ও তোমাদের দুজনের দিন হয়েই রয়ে গেছে। জন্মদিন, বেড়াতে যাওয়ার দিন, অসুখ করার দিন, হাসপাতালে যাওয়ার দিন, সেখান থেকে ফেরার দিন, না ফেরার দিন এইসব'।
আরও লিখেছেন, 'জীবনটাই দুটো টামরলাইন এ বিভক্ত। তখনও মা ছিল, তখন আর মা ছিল না। তখনও বাবা ছিল, তখন বাবা ছিল না। আর কটা দিন থেকে গেলে পারতে বাবা। না হয় অনেক রাত অবধি জমিয়ে আড্ডা মারতে মারতে লোকজন এর গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে দু পেগ হুইস্কি খাওয়ার জন্যই রয়ে যেতে। না হয়, ব্রাজিল - আর্জেন্টিনার ম্যাচ দেখে চিৎকার করার জন্য রয়ে যেতে। না হয়, দরবেশ, ক্ষীরকদম্ব, মনোহরা, সীতাভোগ দের জন্য রয়ে যেতে। ভাত রুটির শেষ পাতে রোজ একটু মিষ্টি খাওয়ার পাটও চুকে গেছে। বাড়িতে আর মিষ্টি কেনা হয় না'।
স্বস্তিকার সংযোজন, 'তোমায় আর একবার দেখার জন্য সব করতে পারি বাবা। তুমি তো ঈশ্বরের কাছে আছ, তুমি ওনাকে বলো এই জন্মে হোক বা পরের জন্মে বা দু জন্মের সন্ধিক্ষণে আমাদের দেখাটা যেন হয়। কত কথা জমে আছে বাবা। এক পাহাড়। আজ তোমার ফেভারিট ব্রুট পারফিউমটা মেখেছি। তোমার জন্মদিনে তোমার গায়ের গন্ধ থাকুক গায়ে। রোজ ঘুমাতে গেলে ভাবি চোখ খুললেই হঠাৎ যদি তোমায় দেখতে পাই জড়িয়ে ধরে বসে থাকব অনেকক্ষন।বেশি কিছু চাই না এই টুকুই। কখনও এলে ভেবলি বলে ডেকো বাবা। ঠিক বুঝে নেব তুমি ডেকেছ। ভালো থেকো। তোমার পথে ঝলমলে আলো থাক। ইউডি কোলনের গন্ধ থাক। অনেকটা যত্ন আর ভালবাসা থাক। আমার কাছে অপেক্ষা থাক। আমার সারাক্ষন এর সঙ্গী।'