Advertisment

টলিপাড়ার স্বজনপোষণ বিতর্ক: জবাব দিলেন কি স্বস্তিকা?

কোনও অভিনেত্রী যদি কোনও পরিচালকের সঙ্গে একের বেশি ছবিতে কাজ করেন তবে কেন এমন একটা ধারণা করা হয় যে সেই পরিচালকের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Swastika Mukherjee on nepotism

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের ছবি ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত।

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় অতি সম্প্রতি তাঁর সোশাল মিডিয়া পেজে বাংলা ছবির জগতে স্বজনপোষণ বিষয়ে একটি প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর বক্তব্যের সারমর্ম হলো এই যে, কোনও অভিনেত্রী যদি কোনও পরিচালকের সঙ্গে একের বেশি ছবিতে কাজ করেন, তবে কেন এমন একটা ধারণা করা হয় যে সেই পরিচালকের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে? অথচ সেই পরিচালক যদি একজন সিনেম্যাটোগ্রাফারের সঙ্গেই জুটি বেঁধে সব ছবি করেন, তবে ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রশ্ন ওঠে না কেন?

Advertisment

এই সাম্প্রতিক পোস্টটিতে স্বস্তিকা উল্লেখ করেছেন যে তিনি একজন পরিচালকের তিনটি ছবিতে কাজ করেছেন। আবার সেই পরিচালকের ১১টি ছবিতে সৌমিক হালদার ছিলেন সিনেম্যাটোগ্রাফার। তার মানে কি এই যে সেই পরিচালকের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কে রয়েছেন সৌমিক হালদার, তাই তিনি কাজ পেয়েছেন? যদি তা না হয়ে থাকে, তবে অভিনেত্রীর ক্ষেত্রে দক্ষতা বা যোগ্যতা নয়, ব্যক্তিগত সম্পর্কের নিরিখে কাজ পাওয়ার অভিযোগ উঠছে কেন, সেই প্রশ্নই তুলেছেন স্বস্তিকা।

আরও পড়ুন: বাংলা ইন্ডাস্ট্রির স্বজনপোষণ নিয়ে বিস্ফোরক শ্রীলেখা

সম্প্রতি একটি ইউটিউব লাইভ ভিডিওতে এসে বাংলা ছবির জগতে স্বজনপোষণ নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। ওই লাইভ স্ট্রিমিংয়ে তিনি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়-সহ বহু অভিনেতা ও পরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু কথা বলেন। তাঁর প্রধান অভিযোগ ছিল এটাই যে বাংলা ছবির জগতে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে একাধিক জুটি তৈরি হয়েছে, এবং সেই জুটিই মূলত নায়ক-নায়িকার চরিত্র পেয়ে এসেছে, সেটা মূলস্রোতের ছবি হোক বা প্যারালাল সিনেমা।

যে কয়েকটি জুটির তিনি নাম উল্লেখ করে, তার মধ্যে ছিল প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা, জিৎ-স্বস্তিকা, স্বস্তিকা-পরমব্রত, প্রসেনজিৎ-অর্পিতা জুটিগুলির প্রসঙ্গ। ১৮ জুন রাতে এই লাইভ স্ট্রিমিংয়ের পর সোশাল মিডিয়ায় শ্রীলেখার মন্তব্যের পক্ষে এবং বিপক্ষে মন্তব্য করেন বহু মানুষ। শ্রীলেখার এই মন্তব্যের পরেই স্বস্তিকার এই ফেসবুক পোস্টে স্বজনপোষণ বিতর্ককে ভিন্ন একটি দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার আবেদন রয়েছে। সেই কারণেই সরাসরি কোনও স্টেটমেন্ট নয়, প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেত্রী।

Swastika Mukherjee's two cents on Bengali film fraternity favouritism debate স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের ফেসবুক পোস্ট

তাঁর বক্তব্যের মধ্যে শ্লেষও ধরা পড়েছে। তিনি লিখেছেন, "যখন কোন অভিনেত্রী কোন পরিচালকের সঙ্গে এক বা একের বেশি ছবি করে তখন বলা হয় সে শুয়ে বা প্রেম করে কাজটা পেয়েছে। বেশ। তা আমি এক পরিচালকের সঙ্গে তার জীবনের ১৭টা ছবির মধ্যে আড়াইখানা ছবি করেছি (২টি মুখ্য চরিত্র, ১টি অতিথি শিল্পী)। কিন্তু যেহেতু এই পরিচালকের সঙ্গে সৌমিক হালদার ১১টা, অনুপম রায় ৯টা, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ৭টা, যীশু সেনগুপ্ত ৭টা, অনির্বাণ ভট্টাচার্য ৬টা এবং পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ৬টা কাজ করেছেন, তারা নিশ্চয় আরো বেশি করে শুয়ে আর প্রেম করে কাজগুলো পেয়েছেন? এনারা তাহলে সবাই উভকামী ও সুযোগসন্ধানী? যুক্তি তো সবার ক্ষেত্রেই এক হওয়া উচিৎ, তাই না? নাকি নিজের খামতি ঢাকতে স্লাটশেমিং শুধু আমাদের মত 'কুযোগ্য' অভিনেত্রীদের করা হবে যারা একেবারেই অভিনয়টা পারে না?"

আরও পড়ুন, কফি উইথ করণ-এর কঙ্গনা-পর্ব কেন নেই ইউটিউবে?

সিনেমা মাধ্যমে বেশিরভাগ সময়েই পরিচালক-প্রযোজক একটি টিম তৈরি করে কাজ করতে পছন্দ করেন। পরিচালকের পছন্দের অভিনেতা-অভিনেত্রীও থাকে। তাই সিনেমা মাধ্যমে পরিচালক-অভিনেতা, নায়ক-নায়িকা, প্রযোজক-পরিচালক জুটি তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। শ্রীলেখা মিত্রের অভিযোগ ছিল, তিনি যে সময়ে কাজ করতে আসেন, সেই সময়ে একাধিক নায়ক-নায়িকা জুটি বর্তমান থাকায় তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে জুটি তৈরি করতে পারেননি। এই কারণে তিনি কাজের সুযোগ পাননি বাংলা ছবিতে, এবং তাঁকে টেলিভিশনেই বেশি কাজ করতে হয়েছে।

স্বস্তিকা তাঁর পোস্টে সরাসরি এই বক্তব্যকে আক্রমণ করেন নি, কিন্তু তিনি একটি প্রশ্ন তুলেছেন। তা হলো পরিচালক-অভিনেত্রী বা নায়ক-নায়িকার জুটি তৈরি হলে কেন এমনটাই সব সময় ভেবে নেওয়া হয় যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণেই এই জুটি তৈরি হলো? অভিনেত্রীদের পেশাগত দক্ষতা ও যোগ্যতার নিরিখে কি জুটি তৈরি হতে পারে না?

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Swastika Mukherjee Bengali Film
Advertisment