'বৈবাহিক ধর্ষণ' এই শব্দটার সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। শুনতে অদ্ভুত হলেও দিনের পর দিন এই হেনস্থার শিকার হয়ে আসছেন প্রচুর নারী। কেউ চুপ করে সয়ে গিয়েছেন দিনের পর তো কেউ সমাজের চাপে জর্জরিত। এরকম অনেক মেয়েই আছেন, যাঁরা বিয়ের পরে স্বামীর দ্বারা ধর্ষিত হচ্ছেন প্রতিদিন। অবাক লাগল? নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সঙ্গমে লিপ্ত হতে হয় প্রচুর মেয়েকে। তবে তৃতীয় বিশ্বের এই দেশে এর কোনও বিচার নেই। মুখ ফুটে অনেকেই বলতে পারেন না নির্মম এই সত্যের কথা। সেই প্রেক্ষিতেই ছত্তিশগড় হাইকোর্টের রায় নিয়ে এবার আওয়াজ তুললেন বলিউড অভিনেত্রী তাপসী পান্নু।
এবার এরকমই এক ঘটনার হদিশ মিলেছে ছত্তিশগড়ে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, বৈবাহিক সম্পর্কে স্ত্রীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে স্বামীর বলপূর্বক শারীরিক সংযোগও নাকি অপরাধ নয়। সেটিকে 'ধর্ষণ' বলে আখ্যা দেওয়া যায় না। আর হাইকোর্টের এমন রায়ের পরই নিজের রাগ আর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেন না অভিনেত্রী তাপসী পান্নু। দৃঢ় কণ্ঠে প্রতিবাদ জানালেন। পাশাপাশি বেজায় হতবাকও হয়েছেন তিনি।
একপ্রকার হতাশা গ্রাস করেছে অভিনেত্রীকে। তাপসী অভিযোগের সুরে জানান, "ব্যস, এতদিন এটাই শোনা বাকি ছিল আর কী!" টুইটারে একপ্রকার জোর দিয়েই এই রায়ের বিরোধিতা করেন অভিনেত্রী। তার টুইটের পর থেকেই নেটদুনিয়ায় প্রতিবাদের ঝড়। অভিনেত্রীর সমর্থনে মুখ খুলেছেন বেশিরভাগ মানুষই।
শুধু তাপসীই নন, তাঁর সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন সোনা মহাপাত্রও। গায়িকার কণ্ঠে একপ্রকার বিরক্তির সুর ধরা পড়েছে। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, আদালতের এই রায় জেনে অসুস্থ বোধ করছেন তিনি। তাই কোনও কিছু লিখতেও ইচ্ছে করছে না। বারবার মেয়েদের উপর এত অসহনীয় অত্যাচার চোখে পড়ার মতই।
<আরও পড়ুন: সুস্থ আছেন নুসরত ও তাঁর সন্তান, কবে ছাড়া পাবেন হাসপাতাল থেকে?>
ছত্তিশগড় হাইকোর্টের বিচারক এনকে চন্দ্রবংশি অগস্টের ২৩ তারিখ এই রায় ঘোষণা করেন। প্রসঙ্গত, ছত্তিশগড়ের এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে আইপিসির ৩৭৭ ধারার অধীনে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। আদালত পর্যবেক্ষণ করে যে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর অস্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্ক উল্লিখিত অপরাধের কারণ। ফলতই তিনি এবং তার পরিবারের দুই সদস্য দায়ের করা ফৌজদারি অভিযোগ পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। বৈবাহিক ধর্ষণের এবং অন্যান্য অভিযোগ খারিজ করতে চেয়েছিলেন জনৈক ব্যক্তি। সেই ঘটনার জেরেই এরূপ সিদ্ধান্ত জানান চন্দ্রবংশি। বেকসুর খালাস করা হয়েছে ব্যক্তিকে।
প্রশ্ন একটাই, কেন? মেয়েদের নিজেদের কোনও অধিকার নেই? বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে দু'জনের একে-অপরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন খুবই প্রয়োজন তার সঙ্গে দু'জনের মতামত এবং ইচ্ছের সমান দাম থাকা উচিত। একবিংশ শতকে দাঁড়িয়েও এইরূপ আইনি আচরণ সত্যিই অবাক করার মতো।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন