Taslima Nasrin-Hero Alam: আজও এই সমাজে মেয়েদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, সেকথা নানা মুখে না শুনলে বোঝা যায় না। অন্তত, তসলিমা নাসরিনের পোস্ট দেখলে বোঝা যায়, হিরো আলমের স্ত্রী ঠিক কী কী কারণে অভিনেতা এবং সোশ্যাল মিডিয়া আইকনের কাছে অযোগ্য হয়ে উঠেছেন।
হিরো আলম যিনি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে রিয়া মণিকে বিয়ে করেছিলেন, এখন তাঁকেও জীবন থেকে বয়কট করেছেন। কারণ? সেই রমনী নাকি হিরো আলমের বাবার অসুস্থতায় তাঁকে না দেখে, হাসপাতালে না গিয়ে এদিক ওদিক নেচে গেয়ে সময় কাটিয়েছেন। সেই কারণে, তাঁকে জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলেছেন তিনি। সঙ্গে এমনও দাবি করেছেন, "যেদিন আমি অসুস্থ হব, সেদিন আমাকেও দেখবে না।" একারণেই যে তিনি তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন সেকথা পরিস্কার। তবে, তসলিমার নজরে এই কাণ্ড কেবল নারীবিদ্বেষী মানুষ-ই করতে পারেন।
আরও পড়ুন - Chiranjeet Chakraborty: 'কিছু এদিক ওদিক হলেই আপত্তি..', রেগে আগুন চিরঞ্জিত, কী এমন ঘটল ছবির শুটিং নিয়ে?
বিশেষ করে, রিয়ার মত মেয়েরা কী করে এরকম হিরো আলমের মত কাউকে বিয়ে করতে পারেন, সেই নিয়েই অবাক হয়েছেন। তিনি সমাজ মাধ্যমে লিখছেন, মাঝে মাঝে ভাবি রিয়ামণির মতো স্মার্ট মেয়ে কী কারণে হিরো আলমের মতো একটা লোককে বিয়ে করেছিল! হিরো আলমের টাকা আছে বলে? ভেবেছিলাম অন্য কোনও গুণ না থাকলেও একটি গুণ হিরো আলমের হয়তো আছে, মেয়েদের হয়তো ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করে সে। প্রচুর মানুষের সঙ্গে মিশেছে সে, তার নাম হয়েছে, তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। হয়তো জীবন সম্পর্কে ধারণা এখন আগের চেয়ে স্পষ্ট হয়েছে, হয়তো যতটা উদার ছিল, সংবেদনশীল ছিল, তার চেয়ে আরও বেশি হয়েছে। কিন্তু দেখলাম আমি ভুল ভেবেছিলাম। রিয়ামণির বিরুদ্ধে যেভাবে সে নোংরা ভাষায় কথা বলছে , যেভাবে তাকে হেয় করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, যেভাবে তাকে হিংস্র আক্রমণ করছে, কট্টর পুরুষতান্ত্রিক না হলে করা যায় না।"
বাবার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়া তারকা। স্ত্রী আসলে জীবনসঙ্গী নাকি চাকরানি? হিরো আলমের মন্তব্য এবং কাণ্ড-কারখানা নিয়ে রেগে আগুন তসলিমা। যেন তেলে বেগুনে জলে উঠেছেন। মেয়েদের যেভাবে দাসীর মত ট্রিট করা হচ্ছে, তাতে ভাষা হারিয়েছেন তিনি। আরও বলছেন, "হিরো আলম জানিয়ে দিয়েছে রিয়ামণির মতো স্ত্রী সে চায় না। এমন চরম নারীবিদ্বেষী চরিত্রকে লোকে বাহবা দেবে, তার কাছ থেকে শিখবে যে স্ত্রী মানেই চাকরানী, স্ত্রী মানেই দাসী শিখবে। স্ত্রীর দায়িত্ব স্বামী এবং স্বামীর আত্মীয় স্বজনকে সেবা করা, স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে না বেরোনো, নিজের ইচ্ছে ছুড়ে ফেলা, নিজের কাজ পণ্ড করা, নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া। হিরো আলম জনগণকে শেখাচ্ছে যে স্বামী পরকীয়া করলেও স্ত্রীকে পতিব্রতা স্ত্রী হিসেবে স্বামীর আদেশ নির্দেশ পালন করতে হবে, কারণ স্বামী হলো প্রভু, আর স্ত্রী জিনিসটি দাসি শুধু নয়, ক্রীতদাসী। রিয়ামণি, আমার বিশ্বাস, এই নোংরা নারীবিদ্বেষী সমাজে পাছে লোকে কিছু বলের তোয়াক্কা না করে নিজের পরিচয় নিয়ে, নিজের যোগ্যতায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।"