তসলিমা নাসরিন বরাবর ভীষণ ঠোঁটকাটা। কেন? তা সে নিজের দেশ হোক বা পাশে দেশ, তিনি সবসময় এমন কিছু বলেন, যাতে আলোচনায় থাকেন তিনি। বেশ কিছু বছর তাঁকে দেশে ফিরতে দেখা যায়নি। প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি বেশিরভাগ সময় কাঠগড়ায় পর্যন্ত দাঁড়ান। কিন্তু, তাতে তাঁর কিছু যায় আসে না। বরং, প্রতিবাদের কলম চলছে তাঁর।
শেষ কিছু সময় ধরে বাংলাদেশে অচলাবস্থা। ধর্মান্ধতা-গোঁড়ামি, মিলিয়ে এক ভয়ঙ্কর পরস্থিতি। বাংলাদেশ নাকি স্বাধীনতা পেয়েছে দ্বিতীয়বার, এই নিয়ে নানা আলোচনা হয়ে চলেছে সাড়া বিশ্ব জুড়ে। কিন্তু, খুনোখুনি-রক্তারক্তি যে রূপ নিয়েছে, তাতে বাংলাদেশকে জিহাদিস্তান বলেই মনে করেছেন। তিনি বলছেন...
"বাংলাদেশের কুয়ো থেকে জন্ম নেওয়া আকাট মূর্খরা যে দেশটি নতুন বানিয়েছে, তাকে জিহাদিস্তান বলতেই আমি পছন্দ করি। এই দেশে আমি লক্ষ্য করেছি, আমি যদি হাসিনার কোনও অন্যায়ের সমালোচনা করি, তাহলে মূর্খগুলো বলে আমি বিএনপিকে সমর্থন করি, বিএনপি আমাকে টাকা দিয়েছে। আমি যদি খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়ার কোনও অন্যায়ের প্রতিবাদ করি, তাহলে লোকে বলে আমি আওয়ামী লীগার, আমাকে লীগ টাকা পয়সা দিয়েছে। আমি যদি হিন্দুদের ওপর আক্রমণের নিন্দে করি, তাহলে বলে ভারত আমাকে টাকা পয়সা দিচ্ছে। আমি যদি জামাত-শিবির বা ইউনুস সরকারের কোনও অন্যায়ের নিন্দে করি, তাহলে বলে আমি হাসিনাকে ফেরত আনার ষড়যন্ত্র করছি, অথবা লীগের টাকা পয়সা খেয়েছি।"
এখানেই শেষ না। ধর্ম নিয়ে বরাবর তিনি সরব। এবছর তো পশ্চিম-বিহারে তিনি পুজো উদ্বোধন করতে পর্যন্ত গিয়েছিলেন। কিন্তু, বাংলাদেশে যে অরাজকতা চলছে, কিংবা মাদ্রাসায় পড়া ছাত্রদের জ্ঞান কিংবা শিক্ষা নিয়ে তিনি বেশ আতঙ্কিত। তিনি বলছেন...
"লক্ষ্য করেছি মাদ্রাসায় পড়া ছেলেগুলো ভয়ঙ্কর সব গালি দেয়। সবই যৌনাঙ্গ সম্পর্কিত। অনেকে বলে মগজধোলাইয়ের সময় এদের মস্তিস্ক যৌনাঙ্গ দ্বারা রিপ্লেসড হয়েছে। এই মোল্লা মৌলবীগুলো আজকাল পুরুষের চার বিয়েকে হালাল, এবং উত্তম বলে রায় দিচ্ছে। চার বিয়ের উপকারিতা এরা এমন ভাবে বর্ণনা করছে, যে, মনে হচ্ছে কদিন পরই একে ফরজ বা অবশ্য কর্তব্য বলে দাবি করবে।" সমাজ মাধ্যমে আজকাল যেসব ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তাতে সামাজিক অবক্ষয় আরও বাড়ছে ভেবেই তিনি স্তম্ভিত। আরও বলছেন...
"ইউটিউবেও দেখলাম দুই সতিন বা তিন সতিন নিয়ে সংসার করা মেয়েদের ভিডিওগুলো ভাইরাল হচ্ছে। আসলে মানুষ জানতে চায় তারা সঙ্গম করে কী করে।" উল্লেখ্য, তাঁর এই পোস্টে দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু মানুষ সহমত হয়েছেন। আবার কিছু মানুষ তাঁর এমন লেখনী দ্বারা মোটেই আপ্লুত নন। তাঁরা এই প্রতিবাদ পর্যন্ত করেছেন।