বিগত কয়েক দিন ধরেই সংবাদের শিরোনামে পরিমণি (Bangladeshi Actress Pori Moni)। মাদক যোগ ও মধুচক্র চালানোর অভিযোগে ১ সপ্তাহ ধরে জেলে রয়েছেন অভিনেত্রী। শুক্রবার আদালতের তরফে নাকচ করে দেওয়া হয় পরিমণির জামিনের আবেদন। বাংলাদেশের বিশিষ্টজনের ইতিম্যেই অভিনেত্রীর সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতে এবার সুর চড়ালেন তসলিমা নাসরিনও (Taslima Nasrin)। বলছেন, "দেশের পুলিশ গোষ্ঠী, ধর্মান্ধ গোষ্ঠী, ধনী গোষ্ঠী, মূর্খ গোষ্ঠী, মাফিয়া গোষ্ঠী, মিডিয়া গোষ্ঠী, প্রভাবশালী গোষ্ঠী- যত গোষ্ঠী আছে সবাই মিলে মেয়েটিকে জ্যান্ত কবর দিয়ে দিয়েছে।"
লেখিকা অবশ্য গত কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিমণির গ্রেফতারির বিরুদ্ধে বেজায় সক্রিয়। এবার তাঁর লেখায় ফের তুলোধনা করলেন সমাজব্যবস্থা এবং গতানুগতিক মানসিকতাকে। তসলিমার মন্তব্য, "অবশেষে বাংলাদেশের বিশিষ্ট নাগরিকেরা তথা চলচ্চিত্র শিল্পীরা পরীমণির ওপর যে ভয়াবহ নির্যাতন হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন। বিশিষ্ট নাগরিকেরা সবসময়ই সব ক্ষতি হয়ে যাওয়ার পর কিছু লোকের ক্রমাগত চাপে এবং অনুরোধে মাথা দোলান। কয়েকদিন ভেবেচিন্তে বিবৃতিতে নাম যাওয়ায় রাজি হন। তার আগে অবশ্য নিশ্চিত হয়ে নেন যে অন্য বিশিষ্টরা বিবৃতিতে সই করেছেন কিনা! বিশিষ্টদের নাম থাকলে বিশিষ্টরা এগোন, অ-বিশিষ্টদের সঙ্গে শুরু থেকে প্রতিবাদে নামেন না, তার চেয়ে বসে বসে নিশ্চিন্তে নির্বিঘ্নে সর্বহারার সর্বনাশ দেখেন।"
<আরও পড়ুন: ‘OTT প্ল্যাটফর্মগুলোয় রাশ না টানলে পর্নফিল্ম দেখানো শুরু হবে’, বিস্ফোরক অজয় দেবগন>
এরপরই লেখিকা যোগ করেন, পরীমণিকে ফাঁদে এবং বিপদে ফেলা হচ্ছে অনেক আগে থেকেই। জুলাইয়ের ৪ তারিখে তসলিমা প্রথম পরিমণির সমর্থনে একটি পোস্ট করেছিলেন। তার উল্লেখ করে লেখিকার মন্তব্য, "ফেসবুকে শিং মাছের মতো দেখছি প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে উঠছে বাংলাদেশের নায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে কুৎসিত সব গালাগালি। কোনও মেয়ের বিরুদ্ধে যখন লোকেরা ক্ষেপে ওঠে, তাকে দশদিক থেকে হামলা করতে থাকে, এমন উন্মত্ত হয়ে ওঠে যেন নাগালে পেলে তাকে ছিঁড়ে ফেলবে, ছুঁড়ে ফেলবে, পুড়িয়ে ফেলবে, পুঁতে ফেলবে, ধর্ষণ করবে, খুন করবে, কুচি কুচি করে কেটে কোথাও ভাসিয়ে দেবে, তখন আমার ধারণা হয় মেয়েটি নিশ্চয়ই খুব ভাল মেয়ে, সৎ মেয়ে, সাহসী মেয়ে, সোজা কথার মেয়ে। আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা অন্তত এটাই বলে।"
তসলিমার অভিযোগ, "বাংলাদেশের বিশিষ্ট নাগরিকেরা জরুরি কথা বলতে বড় বেশি দেরি করেন। বেড়ালের গলায় ঘণ্টিটা সব সময় অ-বিশিষ্টরা বাঁধেন। বিশিষ্ট নাগরিকেরা বড় বৃদ্ধ। বড় বেশি ঘুমিয়ে থাকেন। কানে কম শোনেন। দেশ যে অন্ধকারে তলিয়ে গেছে, সে খেয়াল রাখেন না। দেশ জুড়ে যে নারীবিদ্বেষী হায়েনারা আর শকুনেরা সাহসী মেয়েদের কামড়ে খাচ্ছে, ছিঁড়ে খাচ্ছে- তা দেখেন না, চোখে ছানি পড়েছে অনেক আগেই।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন