অভিনেত্রী পল্লবী দে-র ((Pallavi Dey Death) রহস্যমৃত্যু কাণ্ডে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। পুলিশি তদন্তে এবার উঠে এল মাদক-যোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, পল্লবীর লিভ-ইন পার্টনার সাগ্নিক চক্রবর্তীকে জেরা করে এবং গড়ফার আবাসনে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। এমনকী পল্লবীর ফোন পরীক্ষা করেও মিলেছে একাধিক তথ্য।
গত এপ্রিলে গড়ফার এই ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন পল্লবী এবং সাগ্নিক। সূত্রের খবর, ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হুক্কা, গাঁজা-সহ নেশার জিনিসপত্র। গতকালই পল্লবীর পরিবারের তরফে সাগ্নিকের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। সেই অভিযোগে সাগ্নিক এবং এক তরুণীর বিরুদ্ধে পল্লবীকে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগ, পল্লবী কাজে বেরিয়ে গেলে সেই তরুণীকে ফাঁকা ফ্ল্যাটে নিয়ে আসতেন না কি সাগ্নিক।
এবার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে নেশার জিনিসপত্রও পেয়েছে পুলিশ। কে গাঁজা, হুক্কার নেশা করত তা জানতে সাগ্নিককে জেরা করা হচ্ছে। পল্লবীর ফোন পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, শেষবার পরিচারিকাকে ফোন করেছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কী কথোপকথন হয়েছিল তা জানা যায়নি।
পল্লবীকে এই পরিচারিকার খোঁজ দিয়েছিলেন তাঁর মাসি সংঘমিত্রা ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, "ওই পরিচারিকা আমাকে প্রায়ই বলতেন. পল্লবী-সাগ্নিকের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয় নিয়ে ঝামেলা লেগেই থাকত। জিনিসপত্র ছোড়াছুড়ি করত ওরা।"
আরও পড়ুন ‘খুনই করা হয়েছে পল্লবীকে’, অভিযোগ তুলে সাগ্নিকের বিরুদ্ধে FIR অভিনেত্রীর পরিবারের
পাশাপাশি সোমবার পল্লবীর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর বেলা গড়াতেই গড়ফা থানায় FIR দায়ের করে অভিনেত্রীর পরিবার। অভিযোগনামায় সরাসরি ‘খুনের’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পল্লবীর বাবা-মায়ের দাবি, “সাগ্নিক ও মেয়ের বান্ধবী ঐন্দ্রিলা দুজনে মিলেই এই খুন করেছে।” থানায় এদিন নায়িকার পরিবারের আইনজীবী সাফ জানান, “যে উচ্চতায় উঠে গলায় ফাঁস লাগাতে হত, সেই উচ্চতায় ওঠা পল্লবীর একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। এর নেপথ্যে অন্য কেউ রয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ। তাই সাগ্নিক ও তাঁর বান্ধবী-সহ আরও কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।”
FIR-এ পল্লবীর বাবা নীলু দে এও জানান যে, পল্লবীর থেকে টাকা আত্মসাৎ করে দিব্যি অন্য সম্পর্ক চালাচ্ছিলেন সাগ্নিক। প্রায় প্রতিদিনই মদ্যপান করতেন। এবং মত্ত অবস্থায় একাধিকবার শারীরিক নিগ্রহ করেছেন পল্লবীকে। নায়িকার শরীরের যে চিহ্ন দেখতে পেয়েছিলেন তাঁর সহকর্মীরাও।
পাশাপাশি অভিযুক্ত সাগ্নিক চক্রবর্তীর পেশা নিয়েও বেজায় ধোঁয়াশা রয়েছে। তিনি আদতেও কী করতেন? তা কোনওদিনই জানতে পারেননি পল্লবীর বন্ধুরা। এমনকী সহকর্মী-অভিনেতা সায়ক চক্রবর্তীও জানিয়েছেন যে, “জন্মদিনে একেকবার পল্লবীকে হিরের আংটি, আইফোন উপহার দিয়েছিল সাগ্নিক। মাঝেমধ্যেই কলকাতার নামী-দামি হোটেলে থাকত দুজনে। কোথা থেকে এত টাকা আসত সাগ্নিকের কাছে নাকি সেগুলো সবই পল্লবীর টাকা?” প্রশ্ন অভিনেতা সায়কের।