Bengali actor Suban Roy in negative role: বছর দুয়েক আগে বাংলা টেলিভিশনে সাড়া ফেলে দিয়েছিল এক শিউরে ওঠা খল-চরিত্র-- নন্টে। সুবান রায় অভিনীত, 'আমার দুর্গা' ধারাবাহিকের ওই চরিত্রটি এখনও দর্শকের স্মৃতিতে তাজা। তেমনই একটি জবরদস্ত খল-চরিত্রে ফিরেছেন সুবান আকাশ ৮-এর ৬ মাসের মেগা, 'এক যে ছিল খোকা'-তে যা সম্প্রচার হয় সোম থেকে শনি, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।
সুবান থিয়েটারের মঞ্চ থেকে এসেছেন টেলিপর্দায়। বিগত কয়েক বছরে নতুন প্রজন্মের চরিত্রাভিনেতা যাঁরা এসেছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠেছেন সুবান, তাঁর সু্অভিনয়ের জন্য। তবে এমন নয় যে তাঁকে শুধুমাত্র খল চরিত্রেই দেখা গিয়েছে। কিন্তু সুবান যে খল চরিত্র করতে বেশ পছন্দই করেন, তা ধরা পড়ল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র সঙ্গে তাঁর কথোপকথনে।
আরও পড়ুন: টেলি তারকা সুদীপ্তার বিচ লুক ঝড় তুলছে সোশাল মিডিয়ায়
''আমি সব ধরনের চরিত্রই করতে ভালবাসি। কিন্তু আমি দেখছি যে দর্শক আমাকে নেগেটিভ চরিত্রেই বেশি দেখতে চাইছেন। নন্টে চরিত্রটা খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। তার পর থেকেই কিন্তু নেগেটিভ চরিত্রের অফার বেশি আসে আমার কাছে'', বলেন সুবান, ''সেটা নিয়ে আমার কোনও অসুবিধা নেই। বরং আমার ভালই লাগে। বহু দর্শক আমাকে এসে বলেছেন যে তোমাকে নেগেটিভ চরিত্রে খুব ভাল লাগে। তোমার এক্সপ্রেশন, বডি ল্যাঙ্গোয়েজে একটা ব্যাপার থাকে যেটা নেগেটিভ চরিত্রে খুব ভাল মানায়।''
খল-চরিত্রে সুবানের জনপ্রিয়তা ও তাঁর অভিনয়ের প্রভাব এমনই যে অনেক সময় বাস্তব জীবনে তাঁকে কিঞ্চিৎ অস্বস্তিতেও পড়তে হয়। অনেক সময়েই অচেনা মানুষজন তাঁর পর্দার ইমেজটি মাথায় রেখে একটু এড়িয়ে চলেন বা আড়চোখে তাকান বলা যায়। একজন অভিনেতার কাছে এর চেয়ে বড় প্রশংসা আর কী হতে পারে! দর্শক যখন পর্দার ভিলেনকে বাস্তবেও ভিলেন বলে ভাবতে শুরু করেন, সেখানেই অভিনেতার পরিশ্রম সার্থক হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: ‘কীভাবে টাকা রোজগার করছে, তা নিয়ে কথা বলার আমি কেউ নই’, এসকর্ট প্রসঙ্গে মন্তব্য সায়ন্তনীর
সুবানের ক্ষেত্রে তেমনটা ঘটেছে বহুবার এবং সুবান বেশ উপভোগ করেন গোটা বিষয়টা। তবে পজিটিভ চরিত্রেও কিন্তু দর্শক তাঁর সাবলীল অভিনয় দেখেছেন। আকাশ ৮-এর পূর্বতন ৬ মাসের মেগা, 'গল্প হলেও সত্যি'-তে সুবানের চরিত্রটি ছিল বেশ ট্র্যাজিক। তার জন্যেও প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। তাই নিজেকে কোনও বিশেষ ছাঁচে ফেলতে চান না সুবান রায়।
''নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী আমার খুব প্রিয় অভিনেতা। নওয়াজ সব ধরনের চরিত্রেই সেরা। কিন্তু ওঁর নেগেটিভ চরিত্রের অভিনয়ের কোনও তুলনা নেই। আবার ইরফান যখন নেগেটিভ চরিত্র করেন, সেটাও আমার দারুণ লাগে। খুব স্বাভাবিক লাগে অথচ নেগেটিভ। আর বাংলার কথা যদি ধরা যায়, খল-চরিত্রে আমার খুব ভাল লাগে সুপ্রিয় দত্তকে'', জানান সুবান।
'এক যে ছিল খোকা'-তে সুবানের যে লুক এবং অভিনয়ের স্টাইল, সেটা দেখে দক্ষিণী ছবির ভিলেনদের কখা মনে পড়বেই দর্শকের। দক্ষিণ ভারতীয় ঘরানার ছবির অত্যন্ত ভক্ত সুবান জানালেন, ''আমি যখন অর্ধাঙ্গিনী করছিলাম, এস জে সূর্য-কে বেশ খানিকটা অনুসরণ করতাম। মহেশ বাবু-র 'স্পাইডার'-এ যে খল-চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, সেটা খুব ভাল লেগেছিল।''
আরও পড়ুন: সেরা ‘কৃষ্ণকলি’, দ্বিতীয় স্থানে ফিরল ‘ত্রিনয়নী’
সাম্প্রতিক বাংলা ছবিগুলিতে টাইপকাস্ট ভাঙার একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'বর্ণপরিচয়' তার একটি বড় উদাহরণ। আবির চট্টোপাধ্যায় সেখানে নায়ক নন। নিতান্তই ছকে বাঁধা ছবিগুলি বাদ দিলে, বাকি ছবিতে কিন্তু চরিত্রাভিনেতাদের বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে নিজেদের এক্সপ্লোর করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু টেলিপর্দায় ড্রামা বিষয়টি এত বেশি যে নেগেটিভ চরিত্রগুলি খুবই একমাত্রিক হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
তাই নেগেটিভ বা পজিটিভ, যে কোনও চরিত্র নিয়েই আরও অনেকটা পথ হাঁটতে চান সুবান। আরও বহুমাত্রিক চরিত্রে নিজেকে প্রমাণ করার ইচ্ছা তাঁর। আশা করা যায়, বড়পর্দায় বা ওয়েব মাধ্যমে তেমন কোনও চরিত্রে অদূর ভবিষ্যতেই তাঁকে দেখা যাবে।