টলিপর্দা হোক কিংবা সিনেমা, প্রদীপ ভট্টাচার্যের ছোট্ট উপস্থিতিও নজর কেড়েছে দর্শকদের। বিশেষ করে নাটকের মঞ্চেও তাঁর অভিনয় দর্শকদের হাসিয়েছে, কাঁদিয়েছে। নাট্যজগতে প্রদীপ ভট্টাচার্যের অবদানের কথা বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন হয় না। তবে দর্শক-অনুরাগীদের কাছে তিনি বিশেষভাবে গণশা বলেই পরিচিত। নেপথ্যে শিবপ্রসাদ-নন্দিতার 'বেলাশুরু'। সম্প্রতি 'বেলাশেষে' সিনেমাতেও তাঁর অভিনয় মন কেড়েছে দর্শকদের। এবার সেই অভিনেতাকেই আকাদেমী পুরস্কারে ভূষিত করা হচ্ছে।
সত্তর বছরের অভিনয়জীবন। তার সিংহভাগজুড়ে রয়েছে নাটকের মঞ্চ। বহরমপুর রেপারটরি থিয়েটারে প্রদীপ ভট্টাচার্যের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখ্য। সেখানকার জেলবন্দি অপরাধীদের নিয়ে একটি নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন প্রদীপ। তাঁদের অনেকেরই যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। আর সেই কারাবন্দি মানুষগুলোকে নিয়েই এক অসাধ্যসাধন করে ফেলেছেন প্রদীপবাবু। নাট্যজগতে তাঁর এমন অবদানের জন্যই আগামী ২৫ জুন শনিবার বিকেল ৪টের সময়ে শিশিরমঞ্চে প্রদীপ ভট্টাচার্যকে নাট্য আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত করা হবে।
<আরও পড়ুন: চোখে জল নিয়ে KK-কে আবেগঘন শ্রদ্ধার্ঘ্য উষা উত্থুপের, দেখুন ভিডিও>
অনেকেরই হয়তো অজানা যে, গত প্রিজন থিয়েটার ফেস্টিভ্যালে বহরমপুরের ৮০জন কারাগার বন্দিদের নিয়ে তিনি চমৎকার নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, কোনওরকম পুলিশি পাহাড়া ছাড়াই সেসব বন্দিদের নিয়ে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন সেই নাটক প্রদর্শনের জন্য। এও বা কম কথা কী! প্রদীপ ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে ফিরে এসে তাঁরা আবার জেলে বন্দি হয়েছেন। সেই আশিজনকে যেভাবে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন তিনি, এবং তাতে সক্ষমও হয়েছে, তা প্রদীপবাবুর কাছে পুরস্কার পাওয়ার থেকে অনেক বেশি।
শুধু তাই নয়, ওই নাটক করতে গিয়েই দুই ভিনধর্মী মানুষের প্রেমের সূত্রপাত। নিজদায়িত্বে প্রদীপ ভট্টাচার্য তাঁদের বিয়েও দিয়েছেন। যাঁদের কাছে অভিনেতা কিনা আজও পিতৃসম। তবে আকাদেমি পুরস্কারের জন্য তাঁকে ভাবা হয়েছে শুনে উচ্ছ্বসিত প্রদীপ ভট্টাচার্য।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন