Anup Kumar Birthday: অনুপম কুমার, বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য নাম। সিংহভাগ ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করলেও তিনিই যেন হয়ে উঠতেন সেই সকল ছবির প্রাণকেন্দ্র। সিনেমার নায়ক বা ক্ষুরধার অভিনেতার অভিনয়কে ছাপিয়ে যেত অনুপ কুমারের অভিনয়শৈলি। পর্দায় তাঁর আবির্ভাই যেন বাঙালি দর্শকের মুখে ফুটে উঠত প্রশান্তির হাসি। অনুপ কুমারের উজ্জ্বল উপস্থিতি থেকে চোখ সরানো অসম্ভব। কৌতুক অভিনেতা হিসেবে আজও বাঙালি দর্শকের মনে দাগ কেটেছিলেন অনুপ কুমার। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে এমন কিছু ছবি যা কালজয়ী সিনেমা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। কয়েকটি ছবিতে নায়কের ভূমিকায় উত্তীর্ণ হয়ে দর্শককে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। সিরিয়াস এবং কমিক সেন্সের মিশ্রণই ছিল অনুপ কুমারের অভিনয়ের ইউএসপি।
অনুপ কুমারের জন্মদিনে তাঁর অভিনীত এমন পাঁচটি ছবির কথা তুলে ধরা হোক যা তাঁকে এনে দিয়েছে বিশেষ সম্মান, খ্যাতি ও পুরস্কার। সেই তালিকায় রয়েছে 'নিমন্ত্রণ'। এই ছবিতে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ আঞ্চলিক ছবির অভিনেতা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছিলেন অনুপ কুমার। ১৯৬৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল আরও একটি হিট ছবি 'পলাতক'। এই ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে বি.এফ.জে পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছিলেন। 'অমৃত কুম্ভের সন্ধানে' ছবিতে বাউলের চরিত্রে অভিনয় করে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন অনুপ কুমার। মার্জিত ও ব্যক্তিত্বপূর্ণ এক প্রেমিকের চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছিলেন অনুপ কুমার। সৌজন্যে 'নতুন জীবন'। অভিনয়ের ক্ষেত্রে চোখের ভাষা যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সেটা বুজিয়েছিলেন বেশ কয়েকটি ছবিতে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য 'ফুলেশ্বরী'।
বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের কৌতুক অভিনেতার পাশাপাশি তিনি কিন্তু, হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয়ের বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছেন। অনুপ কুমার অভিনীত উল্লেখযোগ্য হিন্দি সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে 'চন্দ্রশেখর', 'কিতনে পাস কিতনে দূর', 'পরিবর্তন'। প্রসঙ্গত, নাট্য মঞ্চ থেকে সিলভার স্ক্রিন, প্রায় ৬ দশকের অভিনয়-জীবন। সেই অর্থে কোনও কেতাদুরস্ত নায়ক অবশ্য ছিলেন না কিন্তু, আপামোর সিনেমাপ্রেমী বাঙালির স্মৃতিতে জীবন্ত তাঁর স্মৃতি। শুধু সিনেপ্রেমী মানুষই নয়, যাঁরা নাট্যপ্রেমী তাঁদের হৃদয় জুড়েও ছিলেন অনুপ কুমার। তাই বলা যেতেই পারে নাট্যমঞ্চ থেকে সিনেমার পর্দা, অনুপ কুমারের অভিনয়ে বুঁদ হয়ে থাকত দর্শক। সাদা-কালো জমানায় তাঁর 'রঙিন' অভিনয় আজও ভোলেনি বাঙালি।
আরও পড়ুন অনুপ কুমার ছিলেন হাসির রাজা, যখনই সেটে আসতেন জমিয়ে রাখতেন: সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়