পঞ্জাবী গায়ক-রাজনীতিক সিধু মুসেওয়ালা হত্যাকাণ্ডের পর আবারও প্রাসঙ্গিক অন্ধকার জগতের গ্যাংস্টারদের খপ্পড়ে পড়া বিনোদন জগতের তারকাদের কাহিনি। খোদ সলমন খানের মতো বড় সুপারস্টারও প্রাণনাশের হুমকি খেয়েছিলেন বিষ্ণোই গ্যাংস্টারের কাছ থেকে। বাদ যাননি খ্যাতনামা গায়ক অরিজিৎ সিংও। ৫ কোটি টাকা চেয়ে এসেছিল হুমকি ফোন।
২০১৫ সাল। অরিজিৎ সিং-কণ্ঠে মাতোয়ারা গোটা দেশ। জনপ্রিয়তার শীর্ষে সদ্য পা রেখেছেন। ঠিক সেই সময়ে সাফল্যের তোড়েই গ্যাংস্টারের নিশানায় পড়েন অরিজিৎ। গায়কের ম্যানেজার তারসেনের কাছে ফোন আসে কুখ্যাত গ্যাংস্টার রবি পূজারীর কাছ থেকে। ৫ কোটি টাকা চাওয়া হয়। নির্দেশ দেওয়া হয়, সেই টাকা যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হয়। তবে অরিজিৎ সিংয়ের ম্যানেজার তারসেন সাফ জানিয়ে দেন, এত কম সময়ে অত পরিমাণ টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই তার বদলে গায়কের সঙ্গে চুক্তিতে আসে ওই গ্যাংস্টার।
বিনামূল্যে পারিশ্রমিক না নিয়েই তাদের জন্য বেশ কয়েকটি শো করবেন বলে প্রতিশ্রুতি যায় অরিজিৎ সিংয়ের তরফে। ঠিক কী হয়েছিল? বছর খানেক আগে মুম্বই মিরর নামে এক সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেন গায়ক। সেই কথোপকথনে অরিজিৎ জানান, এক প্রোমোটার খুব কম বাজাটে শো করার কথা বলেন তাঁকে। এমনকী ক্রমাগত শোয়ের বাজেট নিয়ে দরদাম করতে থাকেন। যদিও অরিজিৎ জানিয়ে দেন যে এত কম টাকায় তাঁর পক্ষে ওই শো করা সম্ভব নয়। ওই প্রোমোটারের-ই যোগাযোগ ছিল অন্ধকার জগতের ডন রবি পূজারীর সঙ্গে। সেই রবিই এরপর অরিজিতের ম্যানেজার তারসেনকে ক্রমাগত ফোনে চাপ দিতে থাকে টাকার জন্য।
<আরও পড়ুন: ৯ দিনেই ১০০ কোটির ব্যবসা ‘ভুলভুলাইয়া ২’র, ইন্ডাস্ট্রিকে মোক্ষম জবাব ‘কোণঠাসা’ কার্তিকের>
গায়ক জানান, তিনি যখন স্টুডিও থাকেন, তখন কোনও ফোন রিসিভ করেন না। তো অরিজিৎকে ফোনে না পেয়ে তারসেনের কাছে ক্রমাগত হুমকি ফোন আসতে থাকে। ভয় পেয়ে ম্যানেজার গোটা বিষয়টি অরিজিৎকে জানান। অরিজিৎ জানিয়েছিলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে রবি পূজারীকে চেনেন না। আর সরাসরি কোনও হুমকি ফোন তিনি পাননি। উত্যক্ত করা হত তাঁর ম্যানেজারকে। তাঁর কথায়, "আমি অত টাকা তো কামাই না, কীভাবে দেব ৫ কোটি?" এরপর সেই কুখ্যাত গ্যাংস্টারের খপ্পড় থেকে বাঁচার জন্য অরিজিতের ম্যানেজার তারসেন গোটা বিষয়টি জানান পুলিশকে। সেইসময়ে ডিসিপি এম দাহিকর জানান, অরিজিতের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। শুধুমাত্র স্টেশন ডায়েরি এন্টি করে ছেড়ে দেওয়া হয় বিষয়টি।
বছর খানেক আগে সেই সংবাদমাধ্যমকে অরিজিৎ সিং এও জানিয়েছিলেন যে, প্রথমবার তাঁর সঙ্গে এমন অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে। তবে তিনি এটাকে খুব একটা পাত্তা দেননি। কারণ, সব অর্গানাইজার্সরাই ব্যবসা করতে চায়। কিন্তু সেবার রবি পূজারীর নাম যুক্ত হওয়ায় বিষয়টা হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। বিনোদনজগতের শিল্পীরা যে অপরাধচক্রের হাত থেকে সুরক্ষিত নয়, এই ঘটনা আগেও দেখা গিয়েছে বহুবার।
বর্তমানে মুম্বইয়ের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে মুর্শিদাবাদেই স্ত্রী, সন্তান নিয়ে থাকছেন অরিজিৎ সিং। অতিমারীর সময়েও বহু দুঃস্থ মানুষের পাশে থেকেছেন। ছেলেকেও ভর্তি করিয়েছেন সেখানকারই এক স্কুলে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন