একসময় উত্তমকুমারের চিত্রগ্রাহক ছিলেন, তাঁকেই শেষ বয়সে দু-মুঠো ভাতের সন্ধানে হেঁটে আসতে হতো দু-কিলোমিটার পথ। অবশেষে সেই অভাবকে সঙ্গী করেই চলে গেলেন বৈদ্যনাথ বসাক। বৃহস্পতিবার রাত তিনটে নাগাদ নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রবীণ চিত্রগ্রাহক। রাজ কাপুর থেকে উত্তমকুমার, জনপ্রিয় নামেদের সঙ্গে কাজ করছেন একসময়। কিন্তু তাঁর চলে যাওয়াটা সকলের অগোচরেই থেকে গেল।
বার্ধক্যজনিত কারণেই প্রয়াত হলেন বৈদ্যনাথবাবু। রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনের অন্নপূর্ণা প্রকল্পে নিজের দুপুরের অন্ন জোগাতে রোজই যেতেন তিনি। খাওয়া শেষে নিজের থালা ধুয়ে বিশ্রাম নিয়ে ফিরতেন দু'কিলোমিটার হেঁটে। ২০১৮ সালে প্রথমবার সামনে আসে তাঁর খবর। প্রকাশ্যে আসে জনপ্রিয় এই চিত্রগ্রাহকের দৈন্যদশা।
আরও পড়ুন: ‘রেনবো জেলি’ টাইটেল ক্রেডিট নিয়ে শ্রীলেখা-সৌকর্য তরজা
এককালে দক্ষ হাতে ক্যামেরা সামলানো মানুষটির জীবনের চাকা ঘুরেছে অন্য পথে। রামকৃষ্ণ মিশনের অন্নপূর্ণা প্রকল্পই ছিল ৯৪ বছরের কাঁপা হাতের একমাত্র সহায়। একসময় নেপালের রাজবাড়ি আলোয় সাজিয়েছিলেন যিনি, আজ তাঁর এই জীর্ণ অবস্থা। খবর প্রকাশ্যে আসার পর এগিয়ে এসেছিলেন অভিনেতা-প্রযোজক দেব। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও মাধবী মুখোপাধ্যায়রাও সাহায্য করেছিলেন তাঁকে।
পঞ্চাশের দশক। রাজ কাপুরের প্রযোজনায় তৈরি হল ‘বুট পলিশ’। প্রকাশ অরোরার পরিচালনায় সমাদৃত হয় এই ছবি। এরপর পেরিয়ে গিয়েছে অনেক কাল। এখনও দর্শকের মনে রয়েছে সেকালের ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘সবার উপরে’, ‘লালু’, ‘সাগরিকা’, ‘খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’, ‘ছদ্মবেশী’র মতো কালজয়ী ছবি। এই সব ছবির ক্যামেরার নেপথ্যে ছিলেন বৈদ্যনাথ বসাক। তবে এখন সবটাই স্মৃতি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন