ভারত থেকে সেরা বিদেশি ভাষা বিভাগে অস্কারের জন্য পরিচালক রিমা দাসের ছবি ভিলেজ রকস্টারস মনোনীত হওয়ার পরই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ডট কম কথা বলল পরিচালকের সঙ্গে। তবে ফোনটা তুলেই হ্যালোর জায়গায় রিমা বলে উঠলেন ''ধন্যবাদ ধন্যবাদ ধন্যবাদ''! আলাদা করে আর বলে দিতে হবে না এই দিনটা দেখার জন্য সারাজীবন প্রতীক্ষা করেন পরিচালকরা।
শনিবার সকালে ১২ জন সদস্যের বোর্ড- যার প্রধান ছিলেন মি.এসভি রাজেন্দ্র সিং বাবু- ঘোষণা করেন গ্রামীণ আসামকে নিয়ে তৈরি ভিলেজ রকস্টারস অস্কার ২০১৯এ বিদেশি ভাষার সিনেমার বিভাগে ভারতের অফিসিয়াল এন্ট্রি। ধুনু একটি মেয়ে, যে দুঃখ ও দারিদ্রের মধ্যে বড় হতে হতে নিজেই বিপদকে প্রতিহত করার শিক্ষা নিয়েছে জীবন থেকে। কিন্তু এই দারিদ্র দমিয়ে রাখতে পারেনি তার রকব্যান্ড গড়ে তোলার স্বপ্নকে। গিটার সে কিনবেই কোন না কোনও দিন।
তবে রিমা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, তিনি আগের দিন রাতেই ইঙ্গিত পেয়েছিলেন এরকম কিছু একটা হতে চলেছে। অবশ্যই তখন কিছু বলতে পারিনি, ''তবে আজ আমার জীবনের সবথেকে খুশির দিন''। আসামের ছায়গাঁওয়ে নিজের গ্রাম কালারদিয়া থেকেই ফোনে রিমা বলেন, ''বাড়িতেই ছিলাম যখন খবরটা পাই। এই মুহুর্তে পরিবার, বন্ধু ও ছবির কলাকুশলীদের সঙ্গে এটা উদযাপন করছি''। চার বছরের প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছে ভিলেজ রকস্টারস, যা শুট করা হয়েছে হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরায়। ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কেউই প্রথাগত অভিনয় জানেননা। আর ছবির জন্য বাকি সব সাহায্য এসেছে এই কালারদিয়া গ্রাম থেকেই। এরআগে, ৬৫ তম জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে এই ছবি শুধু সেরা ফিচার ফিল্মের পুরস্কারই জেতেনি, তার মাথায় শিরোপা জুটেছে সেরা শিশুশিল্পী, সেরা সাউন্ড রেকর্ডিস্ট ও সেরা সম্পাদনারও।
দশ বছরের একটি মেয়ে যার স্বপ্ন, নিজের রকব্যান্ড বানাবে। আর সে জন্যেই নিজের গ্রামে হন্যে হয়ে ঘোরে একটি ইলেক্ট্রিক গিটারের খোঁজে। ছবিতে ওই মেয়ের ভূমিকায় দেখা যাবে বনিতা দাসকে। আগে রিমা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছিলেন, ''ভিলেজ রকস্টারস ছবির জন্য আমার কোনও স্টোরিবোর্ড ছিলনা। আর ক্রু মেম্বার না থাকার কারণে কোনও আর্টিফিশিয়াল লাইটও ব্যবহার করতে পারিনি। ম্যাজিক লাইট অর্থাৎ সকাল ও বিকেলে যখন সূর্যের আলো প্রকট থাকে না তখন শুট করেছি। প্রত্যেক অভিনেতারা আমার গ্রামের, এমনকি আসমীয়া অভিনেতা কুলদা ভট্টাচার্যও আমার গ্রামের''।
আরও পড়ুন, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবি ভিলেজ রকস্টারস মুক্তি পাবে এ মাসের ২৮
এরআগে মাত্র তিনটি ছবি অস্কারের শেষ রাউন্ডে পৌঁছতে পেরেছিল, মেহেবুব খানের মাদার ইন্ডিয়া (১৯৫৭), মিরা নায়ারের সালাম বন্বে (১৯৯৮) এবম আশুতোষ গোয়ারিকরের লাগান (২০০১)। তবে এইমূহুর্তে আসমিয়া ছবি জাতীয় দরজা পেরিয়ে পৌঁছে গিয়েছে বিশ্বের দরবারে। আর রিমা দাস তার পরের ছবি বুলবুল কান সিং-য়ের সামনের মাসে টরেন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রিমিয়ারের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। ২০১৯ এর ২৪ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে ৯১ অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড।