Advertisment

'ভবিষ্যতের ভূত' দেখতে চেয়ে আগেই অনীক দত্তকে ই-মেল করেছিলেন রাজ্য গোয়েন্দা আধিকারিক

কার নির্দেশে কেন ছবি হল থেকে সরিয়ে নেওয়া হলো, সেই ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। তবে ছবিটা মুক্তি পাওয়ার আগে থেকেই যে সমস্যা চলছিল, এদিন তার প্রমাণ মিলল প্রযোজক কল্যাণময় চট্টোপাধ্যায়ের প্রকাশ্যে আনা ই-মেলে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
'ভবিষ্যতের ভূত' দেখতে চেয়ে আগেই অনীক দত্তকে ই-মেল করেছিলেন রাজ্য গোয়েন্দা আধিকারিক

ছবির মুক্তি চারদিন আগেই চিঠি পাঠিয়েছিলেন রাজ্য গোয়েন্দা আধিকারিক।

শনিবার হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল পরিচালক অনীক দত্তর ছবি 'ভবিষ্যতের ভূতে'-র প্রদর্শন। রাজ্যের সমস্ত মাল্টিপ্লেক্স ও সিঙ্গেল স্ক্রিন থেকে উধাও হয়ে যায় ছবিটি। দর্শকরা ছবি দেখতে এলে হয় বলা হয়, "ছবি উঠে গেছে"। কোথাও আবার টিকিট কাটা থাকলে মূল্য ফেরৎ দিয়ে দেওয়ার কথাও শোনা যায়। কার নির্দেশে কেন ছবি হল থেকে সরিয়ে নেওয়া হলো, সেই ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। তবে ছবিটা মুক্তি পাওয়ার আগে থেকেই যে সমস্যা চলছিল, এদিন তার প্রমাণ মিলল প্রযোজক কল্যাণময় চট্টোপাধ্যায়ের প্রকাশ্যে আনা ই-মেলে।

Advertisment

সেই ই-মেল অনুযায়ী, ছবিটি মুক্তি পাওয়ার চারদিন আগে, অর্থাৎ ১১ ফেব্রুয়ারি, রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, "ছবিটির বিষয়বস্তু জনসাধারণের ভাবাবেগকে আঘাত করতে পারে, যাতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। সে কারণেই মুক্তির আগে ছবিটি উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা দেখতে চান।" প্রযোজক তার উত্তরে লেখেন, "যেহেতু সেন্সর বোর্ড ছবিটিকে ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে, আর আলাদা করে স্ত্রিনিং করা সম্ভব নয়।"

letter রাজ্যের গোয়েন্দা আধিকারিকের ই-মেলের প্রতিলিপি

ইম্পা অর্থাৎ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন-কেও ই-মেল মারফত বিষয়টি জানিয়েছেন প্রযোজক-পরিচালক। গোয়েন্দা দফতরকে আদালতের ধারা উল্লেখ করে তাঁরা জানিয়ে দেন, সেন্সর বোর্ডে পাশ হওয়ার পর আর কোনও জায়গায় ছবি দেখাতে তাঁরা বাধ্য নন।

এদিকে ছবিতে লাল, সবুজ, গেরুয়া বাহিনী, সাংবাদিকতার অন্ধকার দিক, সিনেমায় গুন্ডারাজ, সবকিছু নিয়েই সোজাসুজি আক্রমণে নেমেছিলেন পরিচালক। স্পষ্ট ইঙ্গিতে 'মাচা', ফিল্ম সিটির জন্য জমি দখলের প্রতিবাদ, 'চড়াম চড়াম', 'অক্সিজেন', ঘুষ নেওয়ার স্টিং অপারেশন, ইত্যাদি নানা বিষয় তুলে ধরেন তিনি।

আরও পড়ুন: সিনেমা হল থেকে উধাও ‘ভবিষ্যতের ভূত’, ক্ষোভ অভিনয় জগতে

publive-image প্রযোজকের উত্তর

আরও পড়ুন: ভবিষ্যত অনিশ্চিত, ‘ভূতের’ হানার মুখে অনীক দত্তের সিনেমা

হল মালিকরা অবশ্য জানিয়েছেন, "টেকনিক্যাল কারণে" তাঁরা ছবিটি দেখাতে পারছেন না। ছবি বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনও লিখিত নির্দেশও নেই। অন্যদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন শিল্পীরা। বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় লিখিতভাবে জানিয়েছেন, "আমি একরম ফ্যাসিস্ট নীতির তীব্র বিরোধিতা করছি। আশা করছি, সংশ্লিষ্ট যাঁরা এর জন্য দায়ী, তাঁরা কাজটা গণতন্ত্র-বিরোধী তা বুঝতে পারবেন ও তার প্রতিবিধান করবেন।" রবিবার ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে এ বিষয়ে এক প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিচালক তরুণ মজুমদার, প্রাক্তন মুখ্য সচিব অর্ধেন্দু সেন ছাড়াও ছবির কলাকুশলীরা।

ইম্পাকে ই-মেল করে যদিও বিষয়টি জানিয়েছেন প্রযোজক-পরিচালক, ইম্পার তরফে এখনও কোন উত্তর মেলেনি। ইম্পার সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত বলেন, "অফিসে গিয়ে সবার আগে মেলটাই দেখব। এর মধ্যে অনীকের সঙ্গেও কথা বলছি।"

Bengali Cinema bengali films
Advertisment