গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে নিজেকে চিরকালের জন্য শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন! কিন্তু ওই যে তিনি 'আল্লাহ কে বান্দে'। ঈশ্বরের কৃপাতেই নতুন জীবন ফিরে পান কৈলাস খের।
Advertisment
আজ সাফল্যের স্বাদ উপভোগ করলেও একটা সময়ে পেটের ভাত জোগাড় করার জন্য বহু কাজ করতে হয়েছে কৈলাসকে। দীর্ঘদিন স্ট্রাগল পিরিয়ড কাটিয়ে তারপর শেষমেশ গায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। কম কাঠখড় পোহাতে হয়নি। চড়াই-উতরাই পেরিয়ে, ব্যর্থতার কষ্ট সহ্য করে আজ তিনি দেশের হিট গায়ক কৈলাস খের।
জীবনে যখন একের পর ব্যর্থতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন তখনই নিজেকে শেষ করে দিতে চান কৈলাস। প্রথমজীবনে দিল্লিতে এক্সপোর্টের ব্যবসা করতেন। বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প জার্মিতে রপ্তানি করতেন। আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় তাঁর ব্যবসা। তারপর আর কোনও ব্যবসা খুলেই লাভ হয়নি। টাকা-পয়সা সব ফুরিয়েছিল। একদিন ঠিক করেন হৃষিকেশে গিয়ে পণ্ডিত হবেন। পৌরহিত্যের কাজ নিতে চলে যআন সেখানে। আরও চরম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে।
হৃষিকেশে গিয়ে দেখেন ওখানে যাঁরা পণ্ডিত হওয়ার জন্য বয়ে রয়েছেন, তাঁরা সকলেই বয়সে ছোট। শুধু তাই নয়, তাঁদের জীবনদর্শনের সঙ্গে কৈলাসের মতাদর্শও মিলত না। তাই পাণ্ডিত্যের পরীক্ষাতেও পাশ করতে পারেননি। বের করে দেওয়া হয় সেখান থেকেও। শেষমেশ মা গঙ্গার সামনে গিয়ে হাফ ছাড়েন। তখনই সিদ্ধান্ত নেন এই জীবন তিনি শেষ করে দেবেন। ভাবা মাত্রই কাজ!
গঙ্গায় ঝাঁপ দেন কৈলাস খের। ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি তা দেখে তড়িঘড়ি জলে ঝাঁপ দিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। বলেন- "সাঁতার কাটতে জানো না তো গঙ্গায় কেন নেমেছো?" ঠান্ডা মস্তিষ্কে কৈলাস খের উত্তর দেন- "মরতে।" যা শুনে ওই ব্যক্তি কষিয়ে থাপ্পড় মারেন তাঁকে। আর সেই থাপ্পড়েই সম্বিত ফেরে কৈলাস খেরের। যা তাঁকে জীবনের মানে বোঝাতে শিখিয়েছে। গত ২০ বছরের কেরিয়ারে তেরি দিওয়ানি, সাইয়া, চাঁদ সিফারিস, ইউহি চলা চল, আর্জিয়ার.. মতো অসংখ্য হিট গান গেয়েছেন।
কৈলাস আদতে কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবারের ছেলে। বাবা সেহের চাঁদ ছিলেন অ্যামেচার মিউজিশিয়ান। আর মা চন্দ্রকান্তা খের। এক ভাই আর নুতন নামের এক বোন। উত্তরপ্রদেশের মিরাটে সাতের দশকের শেষ দিকে জন্মগ্রহণ করেন কৈলাস খের।