পারফেক্ট বডি ফিচার থেকে বি-টাউনের ফিটনেস কুইনদের মধ্যে নিজেকে সংযুক্ত করেছেন বহুদিন। আর এখন তো যুবক-যুবতীর মনের মাঝে পরম সুন্দরীর ভূমিকায় তার আনাগোনা সর্বত্রই বিদ্যমান। 'মিমি'-তে অসাধারণ অভিনয় দিয়ে মনোমুগ্ধ করেছেন সিনে দর্শকদের। তিনি কৃতী স্যানন। এর আগেও নানান ছবিতে মুখ্য নায়িকার ভূমিকায় তাঁকে দেখা গেলেও এককথায় রিয়েলিস্টিক অভিনয়ের অভিষেক ঘটিয়েছেন 'মিমি'র হাত ধরেই।
তবে বলিউডের পথ কি এতই সোজা ছিল? একদমই না। কথায় বলে জীবনে সাফল্য অর্জনের রাস্তায় হাজার বার হোচট খাওয়া খুবই স্বাভাবিক। সহজে প্রাপ্ত জিনিসের কদর অনেকেরই থাকে না। তার সঙ্গে হালকা কটুকথা তো রয়েছেই। কৃতি নিজেও ব্যতিক্রম নন। না তো তিনি স্টার কিড, না রয়েছে বলিউড ব্যাকগ্রাউন্ড। এককথায় নিজের পরিশ্রমেই স্বপ্ননগরীতে জায়গা করেছেন তিনি।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, অতীতের কিছু অভিজ্ঞতা সম্পর্কে। বলিউডে পদার্পণের আগে মডেলিং শুরু করেন তিনি। সহজ ভাষায় স্মৃতিচারণায় নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, প্রথম ব়্যাম্প শোয়ে কোনওভাবে ভুল করেছিলেন আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। ২০ জন অন্য মডেলের সামনেই তাঁর উপর চিৎকার করে ওঠেন সেই শোয়ের কোরিওগ্রাফার। বলা বাহুল্য বেশ খারাপ ব্যবহার করেন। সেই অপমান সামলাতে পারেননি কৃতি। তিনি এও স্বীকার করেন, কেউ হঠাৎ বকা দিলেই চোখের জল সামলাতে পারেন না। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথেই অটোতে বসার সঙ্গে সঙ্গেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন তিনি।
আরও পড়ুন কোকেন-সহ NCB-র জালে ‘বিগ বস’ খ্যাত অভিনেতা আরমান কোহলি
বাড়ি ফিরেও মন শান্ত করতে বেশ সময় লেগেছিল। সেদিন মায়ের কাছে বসেও কেঁদেছিলেন। মেয়ের এরকম আকুতি দেখে সেদিন তাঁর মা-ও আর চুপ থাকতে পারেননি। অন্য সব মায়ের মতোই চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি। কৃতিকে তাঁর পেশার ক্ষেত্র প্রসঙ্গে দ্বিমত পোষণ অবধি করেন। আদৌ এই রুপোলি জগৎ তাঁর মেয়ের পক্ষে উপযুক্ত কিনা সেই নিয়েও সংকোচ ছিল তাঁর। তাই বলে হেরে যেতে দেননি কৃতিকে। যথাসম্ভব দ্রুত বোঝানোর চেষ্টা করেন, নিজেকে আরও শক্ত করার পরামর্শ দেন। অনুভূতি এবং আবেগপ্রবণ হলে এই গ্ল্যামার জগতে ঠাঁই নেই, ইমোশন আয়ত্বে রাখতে হবেই বলে সাহস জুগিয়েছিলেন তাঁকে।
সময়ের সঙ্গে সামলে ছিলেন কৃতি। তাঁর বক্তব্যে এমনও প্রকাশ পায়, দিনের পর দিন আত্মবিশ্বাস তাঁর বেড়েই চলেছে। নিজেকে আরও যোগ্য প্রমাণ করার আস্বাদ তাঁর মধ্যে ভরপুর। সময় যত যায় মানুষ নিজেকে আরও নতুন করে গড়ে তোলে। আর কৃতির শেষ কিছু অভিনয় দেখার পর সেই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। 'পানিপথ' থেকে 'মিমি' কৃতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই। তাঁর পরবর্তী সিনেঝুলিতে 'হম দো হামারে দো', 'আদিপুরুষ', 'ভেরিয়া' কীভাবে দর্শকদের মনোরঞ্জন করে এখন সেটাই অপেক্ষার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন