Bengali TV Artists Facing Non-Payment Issues: প্রায় দু'মাস হল, বকেয়া পেমেন্ট নিয়ে সরগরম বাংলা টেলিজগৎ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-তে প্রকাশিত, ২৯ মে-র অন্য একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যে এনওসি-র জন্য় পুরো পেমেন্ট আটকে রয়েছে বলে শোনা গিয়েছে, আগামী ৩ দিনের মধ্যে সেই এনওসি পাঠিয়ে দেবেন বলেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রযোজক রানা সরকার। পাশাপাশি কোন কোন শিল্পীদের কত টাকা বাকি, সেই তালিকাও এই কয়েকদিনের মধ্যে পুনর্বিবেচনা করা হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি। আর্টিস্টস ফোরাম ও সংশ্লিষ্ট চ্যানেলগুলিতে ওই তালিকা জমা পড়ে গেলে, খুব তাড়াতাড়িই শিল্পীরা বকেয়া টাকা পেয়ে যাবেন বলেই আশা ফোরামের সদস্যদের। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এবার টেকনিসিয়ানদের পেমেন্ট নিয়ে। তাঁরা কবে পেমেন্ট পাবেন?
শিল্পী বা টেকনিসিয়ানদের মধ্য়ে খুব কমজনই কোনও নির্দিষ্ট দিনের কাজের পরে সেই দিনের পারিশ্রমিক হাতে হাতে পেয়ে থাকেন। যাঁরা মাসিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার চুক্তিতে কাজ করছেন এবং যাঁরা দৈনিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করছেন, দুপক্ষকেই সাধারণত মাস শেষ হলে পেমেন্ট করা হয়। গত মাসের পেমেন্ট চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে সাধারণত দিয়ে দেন বাংলা টেলিজগতের সু-প্রযোজকরা। কিন্তু দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-র বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই সংস্থার ইউনিটগুলিতে পেমেন্ট দীর্ঘ সময় বকেয়া রাখার সংস্কৃতি রয়েছে।
আরও পড়ুন: টেলিজগত সরগরম যাঁকে নিয়ে, সেই রানা সরকার ও দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া, এক নজরে
টেকনিসিয়ানদের মধ্য়ে পরিচালক, সহকারী পরিচালক থেকে লাইটবয়, প্রযোজনার প্রত্য়েক ডিপার্টমেন্টের জন্য়ই নির্দিষ্ট গিল্ড রয়েছে। এই সমস্ত গিল্ড আবার 'ওয়েস্ট বেঙ্গেল সিনে টেকনিসিয়ানস অ্য়ান্ড ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া'-র অন্তর্ভুক্ত। গত ২৫ মে আর্টিস্টস ফোরামের সাংবাদিক বৈঠকে ফোরামের কার্যনির্বাহী সভাপতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান যে বকেয়া টাকার সমস্যা যাঁদের রয়েছে, সেই সব টেকনিসিয়ানদের বিশদ তালিকা প্রস্তুত করার কথা ফেডারেশনের। ওই বৈঠকে জানানো হয় যে ফেডারেশন তালিকা প্রস্তুত করার কাজটি করছে এবং সেই তালিকা প্রস্তুত হলেই তা জমা দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট চ্যানেলগুলিকে। তার পরেই পেমেন্ট পাবেন টেকনিসিয়ানরা।
'আমি সিরাজের বেগম', 'জয় বাবা লোকনাথ', 'খনার বচন', 'মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য়' এবং 'প্রথম প্রতিশ্রুতি'-- দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া প্রযোজিত এই পাঁচটি ধারাবাহিকের ইউনিটের একাধিক সদস্যের বক্তব্য, ২০১৮-র জানুয়ারি পর্যন্ত বেশিরভাগ টেকনিসিয়ানই পেমেন্ট পেয়ে গিয়েছেন। মূলত ফেব্রুয়ারি ও মার্চের ১৫ তারিখ পর্যন্ত কাজের পারিশ্রমিকই বকেয়া। ১৬ মার্চ থেকে চারটি ধারাবাহিক হস্তান্তরিত হয়ে যায় অন্য প্রযোজকদের কাছে। হস্তান্তরের পরের পর্যায়ের পেমেন্টের দায়িত্ব সেই প্রযোজকদের। 'প্রথম প্রতিশ্রুতি' ফেব্রুয়ারি মাসেই বন্ধ হয়ে যায় তাই আর হস্তান্তরের প্রশ্ন ওঠেনি। এখন এই পাঁচটি ধারাবাহিকের টেকনিসিয়ানদের বকেয়া টাকা কবে পাওয়া যাবে সেই নিয়ে কিঞ্চিৎ অনিশ্চয়তায় ভুগছেন অনেকে, এমনটাই জানা গিয়েছে টেলিপাড়া সূত্রে।
আরও পড়ুন: ‘আমরা তো ভুল কিছু করছি না’, মালাইকা প্রসঙ্গে বললেন অর্জুন
রানা সরকার আর্টিস্ট ফোরামকে যে ইমেলটি পাঠিয়েছেন, সেখানে শিল্পীদের তালিকার কথা বলা হয়েছে কিন্তু টেকনিসিয়ানদের পেমেন্টের কোনও উল্লেখ সেখানে নেই। এই প্রসঙ্গে টেকনিসিয়ান্স গিল্ডের সম্পাদক অপর্ণা ঘটকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানান যে শিল্পী ও টেকনিসিয়ানদের পেমেন্ট একসঙ্গেই হবে, সেই নিয়ে কোনও সংশয় নেই আর এটা আলাদা করে বলার কিছুই নেই। ২৫ মে ফোরামের সাংবাদিক বৈঠকে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন যে বকেয়া টাকা উদ্ধারের এই লড়াই কিন্তু শিল্পী ও টেকনিসিয়ান, সবার জন্যেই। তাই আগামী ৩ দিনের মধ্যে যদি রানা সরকার এনওসি জমা দেন তবে টেকনিসিয়ানদের পেমেন্টের জটও কেটে যাবে বলেই আশা করা যায়।