আজকের প্রজন্ম মোবাইল-টিভিতে কার্টুনের প্রতি অশক্ত। কমিক্সের গল্প নিয়ে সিনেমা তৈরি হলে কমিক্স পড়ার আগ্রহ জাগবে?
আমরাও ছোটবেলায় অনেক কার্টুন দেখতাম। কমিক্স আর কার্টুন দুটো সম্পূর্ণ আলাদা মিডিয়াম। ফিল্ম আবার একটা অন্য মিডিয়াম। ইদানিংকালের কিছু কার্টুন বাদে বাকি যেগুলো আমরা টিভিতে দেখি বা সিনেমা হয়েছে সেগুলোর শিকড় কিন্তু, কমিক্স। এমন তো নয় যে কমিক্স পড়ে কেউ বিরাট কিছু হয়ে গিয়েছে। আমাদের সময়ও যে সবার কমিক্স পড়ার প্রতি মারাত্মক আগ্রহ সেটাও দেখিনি। যাঁদের ভাল লাগে তাঁরা পড়ে, যাঁদের ভাল লাগে না তাঁরা পড়ে না। সিনেমা, এই মাধ্যমটা যেহেতু খুব পপুলার, খুব সহজে মানুষকে আকৃষ্ট করা যায়। তাই তখন অনেকের মনে কমিক্সের গল্পটা জানার একটা একটা ইচ্ছে তৈরি হয়।
ভারতে কমিক্সের চাহিদা কম বলেই আজকের প্রজন্ম কার্টুন নির্ভর?
বাংলা ভাষায় তুলনামূলকভাবে কমিক্স ইন্ডাস্ট্রিটা অত্যন্ত সীমিত। বাংলাদেশে কিন্তু, কমিক্সের একটা জনপ্রিয়তা আছে। ওখানে ঢাকা কমিক্স নামে একটা পাবলিকেশন আছে। ওদের কমিক্সের বিক্রি বেশ ভাল। অন্যদেশেো কিন্তু, কমিক্সের চাহিদা আছে। কোরিয়ায় কিন্তু, ওয়েব কমিক্স আছে। আমাদের এখানে ধীরে ধীরে হচ্ছে। একজনের বই বিক্রি দিয়ে তো সবটা হয় না। অন্য দেশের তুলনায় আমাদের এখানে কমিক্স বিক্রি বা পড়ার চলটা একটু কম। সিনেমা হলেই যে রাতারাতি সবার মধ্যে একটা কমিক্স পড়ার আগ্রহ জেগে উঠবে এমনটা নয়।
আপনার গল্প নিয়ে ছবি তৈরি হচ্ছে, খুব খুশি নিশ্চয়ই? রাপ্পা রায়ের কোনও গল্প নিয়ে আপনি সিনেমা বানাতে আগ্রহী?
এই উদ্যোগে তো অবশ্যই খুশি। আমার গল্প নিয়ে কাজ হচ্ছে। এটা তো সত্যিই ভাল লাগার মতোই একটা বিষয়। আমার নিজেরও কমিক্সের গল্প নিয়ে সিনেমা তৈরির ইচ্ছে ছিল। সেটা আমি এখনও ঠিক করিনি। নতুন কোনও গল্প নিয়েও করতে পারি। প্রত্যেক বছরই তো একটা করে রাপ্পা রায় বেরয়। সেখান থেকেও একটা গল্প নিয়ে করতে পারি। সেভাবে এখনও কিছু নিশ্চিত করিনি।
রাপ্পা রায়ের স্টার কাস্ট পছন্দ? আপনি যদি সিনেমা বানান ইন্ডাস্ট্রির কাদের সঙ্গে কাজ করতে চান?
যাঁরা অভিনয় করছেন প্রত্যেকেই ভাল। অর্পণকে আমার বেশ ভাল লাগল। থিয়েটার জগৎ থেকে উত্থান, বুদ্ধিদীপ্ত ছেলে। ভাল অভিনয় করে। রাপ্পার বাবার চরিত্রে যেমন শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় অভিনয় করছেন। উনি একজন বর্ষীয়ান-ট্যালেন্টেড অভিনেতা। নেগেটিভ চরিত্রে দেবাশিষও ভাল। রাপ্পা, টনি, রাপ্পার বাবাার মতো যেগুলো মূল চরিত্র সেখানে যাঁরা অভিনয় করছেন প্রত্যেকেই প্রতিভাবান শিল্পী। আমি ভবিষ্যতে কাজ করলে ওঁদের নিয়েও করতে পারি। শান্তিলাল দা তো ইন্ডাস্ট্রির বহু পুরনো অভিনেতা আর অনবদ্য অভিনয়। ওঁর কথা আলাদা করে বলার অপেক্ষাই রাখে না। টনির চরিত্রে দেবাশিষ রায়ের লুক দেখেছি। আমার পছন্দ হয়েছে।
চিত্রনাট্য নিয়ে পরিচালক আপনার সঙ্গে কথা বলেছেন? আপনার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
পরিচালকের সঙ্গে প্রাথমিক একটা কথাবার্তা হয়েছিল। চিত্রনাট্যের মধ্যেও আমার কিছুটা অবদান আছে। কমিক্সের গল্পটাই তো সিনেমায় পুরো তুলে ধরা সম্ভব নয়। কিছু পরিবর্তন আনতেই হয়। একটা মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে রূপান্তরিত করতে খানিক রদবদল করতেই হয়। এটা শুধু কমিক্সের ক্ষেত্রে নয়, উপন্যাসের গল্পও কখনও পুঙ্খানুপুঙ্খ চিত্রনাট্য করা অসম্ভব। যদি কেউ এইরকম প্রত্যাশা করে তাহলে সেটা ভুল। মিডিয়ামের ডিমান্ড অনুযায়ী অনেক কিছু পরিবর্তন করা অবশ্যক। রাপ্পা রায়ের যে গল্পটা নিয়ে ছবি হচ্ছে সেখানেও অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে। এই গল্পে কিন্তু, টনি নেই। আমি আর পরিচালক আলোচনা করেই টনি চরিত্রটাকে সিনেমায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
লেটেস্ট ট্রেন্ড ফলো করে হল ভিজিটের প্রস্তাব পেলে করবেন?
হল ভিজিট করতে আমার কোনও আপত্তি নেই। পরিচালক বা প্রোডাকশন যদি আমাকে বলে তাহলে নিশ্চয়ই যাব। দেখে আসব বড় পবর্দায় আমার গল্প দর্শক কতটা এনজয় করছে।