জেল থেকে বেরিয়েও নিস্তার নেই। প্রতিবেশীদের অভিযোগে নাকি ভাড়াবাড়ি থেকে উৎখাত করে দেওয়া হয়েছে পরিমণিকে (Pori Moni)। বনানী অ্যাপার্টমেন্টের ৬ তলায় ভাড়া থাকতেন অভিনেত্রী। কিন্তু প্রতিবেশীদের আপত্তির জন্যই এবার সেই সাজানো বাড়িও ছাড়তে হবে পরিমণীকে। ফ্ল্যাটের মালিকের কাছে ইতিমধ্যেই প্রচুর অভিযোগ জমা পড়েছে আশপাশ থেকে। জেল খাটা বিতর্কিত অভিনেত্রীকে কিছুতেই প্রতিবেশী করতে চান না বনানীর কেউ! আর সেই প্রেক্ষিতেই অভিনেত্রীকে অতি সত্ত্বর বাড়ি ছাড়তে হবে বলে জানা গিয়েছে। এবার সেই প্রসঙ্গেই ফের বিস্ফোরক লেখা পোস্ট করলেন তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)।
লেখিকা এর নেপথ্যে গভীর ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছেন। পরিমণির এই পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তসলিমার আক্ষেপ, তিনিও সমস্যায় ভুক্তভোগী। তিনিও পাশে পাননি কাউকে। যাঁদের দাঁড়ানোর প্রয়োজন ছিল, তাঁরাও নাকি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তসলিমার দিক থেকে।
বাংলাদেশ তেকে বিতাড়িত হওয়ার পর বাম জমানায় কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাতেও সেই সময় থেকে নিষিদ্ধ হয়ে যান তসলিমা। লেখিকার কথায়, নির্দেশ এসেছিল এক্কেবারে উপরমহল থেকে। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে। তখন বেশ অসহায় বোধ করেছিলেন লেখিকা। তাঁর আক্ষেপ, "ভালোবেসে এক বাঙালি লেখক বাংলায় বাস করছে, তাকে বাংলা থেকে বের করে দেওয়া, তাকে নিষিদ্ধ করা মানে তার লেখক সত্ত্বাকে ধ্বংস করে দেওয়া। তাই আমি অস্বীকার করেছিলাম রাজ্য ছাড়তে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যখন ফোন করে বললেন আমাকে রাজ্য ছাড়তেই হবে, বুঝলাম যাদের উচিত ছিল পাশে দাঁড়াবার, তারাই পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। কলকাতা তো দেখিয়ে দিয়েছে লেখকেরা কী করে আরেক লেখকের বই নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়, লেখকেরা কী করে আরেক লেখকের সর্বনাশ করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।"
<আরও পড়ুন: ‘মানি হাইস্ট’ দেখবেন কর্মীরা, গোটা দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা জয়পুরের সংস্থার>
তসলিমা লিখেছেন, "পরীমণি জেল থেকে বেরোল, বাড়িতে ঢুকলো, আর দেখল- তাঁকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়েছে বাড়িওয়ালা। এই ভয়ংকর দুঃসময়কে আমি খুব ভাল জানি। যেহেতু নিজের জীবনেই ঘটেছে এমন ঘটনা।" আর সেকথা বলতে গিয়েই কলকাতায় থাকাকালীন দুঃসময়ের কথা তুলে ধরলেন তাঁর পোস্টে। বললেন, "৭ নম্বর রওডন স্ট্রিটে ডাক্তার দেবল সেনের বাড়িতে আমি তখন ভাড়া থাকি। ২০০৭ সাল। পুলিশ কমিশনার এসে জানিয়ে যাচ্ছেন, আমাকে দেশ ছাড়তে বলছেন মূখ্যমন্ত্রী। দেশ যদি আপাতত নাও ছাড়ি, রাজ্য আমাকে আজ বা কালের মধ্যেই ছাড়তে হবে। দেশের দরজা বহুকাল বন্ধ। ইউরোপ ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে প্রাণের টানে আর ভাষার টানে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আর আমাকে কিনা এই আশ্রয়টিও ছাড়তে হবে, কোথাও তো আর ঘর-বাড়ি নেই আমার, যাব কোথায়?"
লেখিকার পোস্টেই স্পষ্ট যে, তিনি পরিমণির এই দুঃসময়কে বেশ উপলব্ধি করতে পারছেন। উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, এর আগেও বাংলাদেশি অভিনেত্রী পরিমণির সমর্থনে মুখ খুলেছিলেন তিনি। এবারও পরিমণিকে বাড়ি ছাড়া করার খবর রটতেই ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন লেখিকা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন