প্রসঙ্গ ‘চিনেবাদাম’ (Chinebadam)। ‘হু ইজ দিস ব্ল্যাক গাই?’ পরিচালকের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়েছিলেন যশ দাশগুপ্ত। সেকথা সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজেই জানান পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিক। আর একুশ শতকে দাঁড়িয়ে সিনেমার দৃশ্যে কৃষ্ণবর্ণের ব্যক্তিকে ব্যবহার করা নিয়ে একজন অভিনেতার এমন বর্ণবৈষম্যমূলক মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই নেটমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। যশকেও রূপঙ্কর বাগচির মতো 'সবক শেখানোর' পাঠ দেন অভিনেতা-বাচিকশিল্পী সুজয় চট্টোপাধ্যায়। এমনকী রিলিজের আগেই প্রযোজনা সংস্থা জারেক এন্টারটেইনমেন্টের চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে প্রচারেও মুখ দেখাননি অভিনেতা। সেই বিতর্ক এমন চরমে পৌঁছেছে যে এবার আইনি হুঁশিয়ারি ছুঁড়লেন যশ দাশগুপ্ত।
শিলাদিত্য মৌলিকের (Shieladitya Moulik) বেশ কিছু মন্তব্য নিয়ে আপত্তি তুলেছেন যশ। পরিচালক বলেছিলেন, "ঝাঁ চকচকে লোক নিইনি বলে প্রথম থেকে যশের একটা আপত্তি ছিল।" দ্বিতীয়ত, "কালো ছেলেকে কেন আমি কোনও দৃশ্যে নাচ করাবো, এসব নিয়ে যদি কারও আপত্তি থাকে, তাহলে আমার কিছু বলার নেই।" বিশেষ করে এই ২ নম্বর মন্তব্য নিয়েই শোরগোল শুরু হয়েছিল নেটপাড়ায়। যার জেরে নেটদুনিয়ার নীতিপুলিশদের কাছে সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয় অভিনেতাকে। এবার শেষমেশ, ‘চিনেবাদাম’ রিলিজের দিন মুখ খুললেন যশ। সোজাসাপ্টা আইনি পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিলেন এনা (Ena saha), শিলাদিত্যর বিরুদ্ধে।
যশের তরফে জানানো হয়েছে যে, "যে সমস্ত অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে, তা সর্বৈব মিথ্যে এবং ভুল। এর বিরুদ্ধে আমরা আইনি পথে হাঁটব। ইতিমধ্যএ আইনজীবীর সঙ্গে কথাও হয়ে গিয়েছে।" এছাড়াও পরিচালকের আরও দুটি মন্তব্যে চটেছেন যশ। প্রথমত, "২০২২ সালে এসে পিছন দিয়ে ধোঁয়া উড়বে, শ্যাম্পু করা চুল উড়বে, এমন ছবি বানানো আমার স্টাইল নয়, সেটা যশ জানতই।" দ্বিতীয়ত, "ছবির সঙ্গে কোনও আত্মিক যোগ নেই।"
<আরও পড়ুন: মাকে ছেড়ে স্কুলেই যেতে চায় না, মেয়েকে নিয়ে গর্বিত ক্যানসারজয়ী মহিমা চৌধুরি>
প্রসঙ্গত, এর আগে শিলাদিত্য মৌলিকের সঙ্গে যখন যোগাযোগ করেছিল ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা’, তখন তিনি জানান, “সিনেমার টাইটেল ট্র্যাক নিয়ে আপত্তি ছিল যশের। তবে হঠাৎ করে ক্রিয়েটিভ ডিফারেন্সের কথা উল্লেখ করায় আমি আকাশ থেকে পড়েছি। কারণ এর আগে তো ওঁর সঙ্গে ২টো সিনেমা করেছি, তখন কোনও ক্রিয়েটিভ ডিফারেন্স হয়নি! সিনেমা করার সময়ে অনেক বিষয়েই মতানৈক্য হয়েছে। সেটা হয়েই থাকে। কোনওটা হয়তো মেনে নিয়েছি। কোনওটা নিতে পারেনি। সেসবই ও জানে। বরং এসব বিষয় নিয়ে আমরা খুব ঠাট্টাও করেছি। কিন্তু এই ক্রিয়েটিভ ডিফারেন্সের কথাটা কেন বলল? জানি না। শেষ যখন কথা হয়েছিল, যশ চার নম্বর গানটা নিয়ে আপত্তি তুলে বলেছিল- এই গানটার কী দরকার ছিল?”
এপ্রসঙ্গে পাল্টা পরিচালক জানান, “চার নম্বর গানটা যেহেতু ‘চিনেবাদাম’-এর টাইটেল ট্র্যাক, তাই ওটা সিনেমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গানটা রেকর্ড আগেই করা ছিল। তবে যথাযথ ভিডিও ফুটেজ না থাকায় পরে শুট করেছি। সেই গান দেখেই যশ আপত্তি তুলে জিজ্ঞেস করেছিল- ব্যাকগ্রাউন্ডে কে এই কালো ছেলেটা নাচ করছে? তবে ওটাও ওর বেরিয়ে যাওয়ার কারণ নয় বলেই মনে করি।”
উল্লেখ্য, রবিবার যশ দাশগুপ্তর টুইটের পর একাধিকবার তাঁকে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন প্রযোজক তথা ‘চিনেবাদাম’ অভিনেত্রী এনা সাহা। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে প্রকাশ্যে কেঁদেও ফেলেন তিনি। পরিচালক শিলাদিত্যও যশের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তা অধরাই থেকে গিয়েছে। এবার সিনেমা রিলিজের দিন শুক্রবার আইনি পথে হাঁটার কথা বললেন যশ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন