Nakshi Kantha Zee Bangla Serial: পুজোর সময়টা এক একজনের এক এক রকম কাটে। কেউ ছোটবেলার অভ্যাসমতো আজও লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখতে ভালোবাসেন। আবার কেউ পুজোতেই একমাত্র বাড়ি যেতে পারেন। এই সব নিয়েই একদিন জমল আড্ডা টিম 'নকশিকাঁথা'-র সঙ্গে, জি বাংলা পরিবারের পুজো স্পেশাল এপিসোডের শুটিংয়ের ফাঁকে। আড্ডার শুরুটা করলেন রাজশ্রী ভৌমিক অর্থাৎ ধারাবাহিকের রঞ্জাবতী।
বড়বেলার পুজোর চেয়ে ছোটবেলার পুজো নিয়ে নস্টালজিক হতেই বেশি ভালোবাসেন তিনি। রাজশ্রী বলেন, ''পুজোর সময়টা দারুণ কাটত ছোটবেলায়। সকাল থেকেই বন্ধুদের সঙ্গে বেরনো, রাত অবধি ঘোরা, এই লাইসেন্সটা একমাত্র পুজোর সময়েই থাকত। আমাদের পাড়ায় একটা জায়গায় আচার বানানো হতো। আমরা পুজোর দিন সকালে সেখান থেকে চালতার আচার চুরি করে খেতাম। সারা মুখ, হাত, জামাকাপড়ে মাখিয়ে ফিরতাম আর পুজোর ওই সকালবেলা পিটুনি খেতামই খেতাম। এখন মনে হয় তখন কত ছোট ছোট জিনিসে আমরা আনন্দ পেতাম। এখন যেরকম অনেক কিছুই হয় কিন্তু ছোটবেলার সেই মজাটা আর নেই।''
আরও পড়ুন: টাটকা মাছের ঝালই মা দুর্গার ভোগ! অভিনেত্রী ত্বরিতার বাড়ির পুজোর গল্প
ছোটবেলার পুজোর মজা যিনি এখনও পুরোমাত্রায় বজায় রেখেছেন তিনি হলেন স্নেহা চট্টোপাধ্যায় বা ধারাবাহিকের রোহিণী। টেলিপর্দার এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী এখনও লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখতে ভালোবাসেন এবং এর জন্য তাঁর ভিআইপি পাস লাগে না। রাস্তায়, পুজো প্যান্ডেলে, ভিড়ে মবড হয়ে যাওয়ার ভয় পান না। প্রত্যেক পুজোয় এইভাবে ঠাকুর দেখাটা তাঁর মাস্ট।
''আমি লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখতে ভালোবাসি। ছোটবেলায় ভিআইপি পাস থাকত না। এখনও ভিআইপি পাস থাকুক আর না থাকুক, কিচ্ছু যায় আসে না। নতুন জামা পরে, জুতো পরে, পায়ে ফোস্কা নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখা আমার মাস্ট। এই ছোটবেলার একটা জায়গা এখনও আমি ধরে রাখতে পেরেছি। তাছাড়া তো ছোটবেলার পুজোর অনেক কিছু হারিয়ে গিয়েছে। প্রেম করেছি, প্রেম ভেঙেছে, বিয়ে করেছি, কত প্রেমিক চলে গেছে কিন্তু বর রয়ে গেছে'', হাসতে হাসতে বলেন স্নেহা, ''পুজোটা এখন আলাদা আলাদাই কাটে বেশিরভাগ। আগে মনে হতো সব সময় একসঙ্গে থাকি, একসঙ্গে ঘুরি। এখন দুজনের অনেক আলাদা আলাদা প্ল্যান হয়, কিন্তু প্যান্ডাল হপিংটা একসাথে।''
আরও পড়ুন: ছেলেকে নিয়ে পায়েল-দ্বৈপায়নের প্রথম বিদেশভ্রমণ এই পুজোতে
পুজোর সময়টা অনেকের কাছেই ঘরে ফেরার সময়। 'নকশিকাঁথা'-নায়ক সুমন দে-র বাড়ি শিলিগুড়িতে। কাজের সূত্রে তাঁকে কলকাতাতেই থাকতে হয় এবং মেগাসিরিয়ালে যেহেতু ছুটি পাওয়া যায় না তেমন, তাই শিলিগুড়ি যাওয়াও হয় না তাঁর। পুজোর সময় টেলিপাড়ার প্রায় সব ধারাবাহিকেই অন্ততপক্ষে ৫-৬ দিন ছুটি থাকে। ওই সময়টা তাই নিজের মা-বাবার কাছে যান সুমন (যশ)। ''একমাত্র পুজোর সময়তেই আমি আমার বাড়ি যাই শিলিগুড়িতে, আমার মা-বাবার কাছে। ওখানে সবার সঙ্গে দেখা হয়, আমার স্কুলের বন্ধুবান্ধবদের রিউনিয়ন হয়। তাই সারা বছর আমি ওয়েট করে থাকি কবে পুজো আসবে। কারণ আমি বছরে একবারই বাড়ি যাই আর পুজো বছরে একবারই আসে। পুজোর সময় একমাত্র আমি বাড়ি ফিরতে পারি'', বলেন সুমন।
পুজোয় এই লম্বা ছুটি পাওয়ার কারণেই অনেকে আবার এই সময়টাই বেছে নেন দেশবিদেশ ভ্রমণের জন্য। রাজন্যা মিত্র অর্থাৎ নকশিকাঁথা ধারাবাহিকের মহুয়া বোস জানালেন তিনি পুজোর প্রথম দুটো দিন কলকাতায় থেকে বেড়াতে চলে যান। তবে তিনিও মিস করেন ছোটবেলার পুজো যেখানে ভারি সুন্দর একটি স্মৃতি রয়েছে আর সামাজিক বার্তাও রয়েছে একটা। ''ষষ্ঠীর দিন পাড়ার অনেকের হাতে আমার ঠাকুমা নতুন জামা দিতেন, তাদের লুচি-আলুর চচ্চড়ি-বোঁদে খাওয়াতেন। এই সবার হাতে জামা-কাপড় আর জলখাবার দেওয়াটা আমার আর আমার জেঠতুতো দিদির দায়িত্ব ছিল। সকাল থেকে বাড়িতে লুচি হচ্ছে, বোঁদে বানানো হচ্ছে... তার মধ্যে আমাদের মধ্যে কম্পিটিশন হতো কে কটা লুচি খেতে পারবে। ওটা একটা দারুণ এক্সাইটমেন্ট ছিল যেটা এখন মিস করি। তবে পুজোয় না হলেও এখনও আমার মেয়ের জন্মদিনে চেষ্টা করি ওইভাবে একটু মানুষের হাতে কিছু তুলে দেওয়ার'', বলেন রাজন্যা।