Actor Suman Dey of Zee Bangla serial Nakshikantha: 'নকশিকাঁথা' ধারাবাহিকে শুরু হতে চলেছে নতুন অধ্যায়-- যশ ও শবনমের বিয়ে। বছরখানেক আগে যখন শুরু হয় এই ধারাবাহিক, তখন গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এক হিন্দু ছেলে ও মুসলিম মেয়ের প্রেমের গল্প। ধর্ম যে দুটি মানুষের মনের মিলনে বাধা হতে পারে না, সেই কথা বলতে চেয়েই শুরু হয় এই ধারাবাহিক। কিন্তু চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ধারাবাহিকটি এমন ভাবেই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন যে শবনম (মানালি দে) যে অন্য ধর্মের, সেটা আর দর্শকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়, এমনটাই জানালেন ধারাবাহিকের নায়ক সুমন দে।
''মানুষ ত্রিকোণ প্রেমের গল্প হিসেবেই কিন্তু বেশি করে দেখছেন 'নকশিকাঁথা'-কে। দর্শক এখন মনে করে রোহিণীই হল যশ ও শবনমের মিলনের পথে বাধা, দুজন যে দুটো আলাদা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ, সেটা কিন্তু এখন দর্শকের মাথা থেকে সরে গিয়েছে। আমার মনে হয়, সেটাই হল এই ধারাবাহিকের সবচেয়ে বড় ইমপ্যাক্ট। যে দুটো মানুষের মধ্যে সম্পর্ক কেমন থাকবে বা তৈরি হবে কি না, সেটা অন্য অনেক কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করবে। কে কোন ধর্মের মানুষ, সেটা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবে না'', বলেন সুমন অর্থাৎ ধারাবাহিকের যশ।
আরও পড়ুন: মেগানায়কের প্রত্যাবর্তন! টেলিপর্দায় ফিরছেন জয় মুখোপাধ্যায়
ধারাবাহিকের গল্পের শুরুতে দেখা গিয়েছিল এক বিশেষ পরিস্থিতিতে শবনমের মাথায় সিঁদুর পরিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসতে বাধ্য হয় যশ। অথচ তার বিয়ে ঠিক হয়ে রয়েছে রোহিণীর সঙ্গে যে কি না যশের মায়ের অত্যন্ত প্রিয়। যশের মা শবনমকে কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। জোর করে রোহিণীর সঙ্গেই বিয়ে দেওয়া হয় যশের যদিও যশ রেজিস্ট্রি পেপার ছিঁড়ে ফেলে দেয়। দরিদ্র এবং রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে শবনমের স্বপ্ন ছিল ডাক্তারি পড়া। সেই স্বপ্নকে সফল করতে অনেকটা সাহায্য করে তাকে যশ।
''শবনমের বেশ কিছু গুণ রয়েছে, যেটা যশের ভালো লেগেছিল প্রথম থেকেই। রোহিণীকেও (স্নেহা চট্টোপাধ্যায়) যশ পছন্দ করত কিন্তু রোহিণার মধ্যে কিছু ব্যাপার ছিল যেগুলো যশের ভালো লাগত না। আর রোহিণীর প্রতি বিরক্তিটা বাড়তে লাগল যখন রোহিণী শবনমের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার শুরু করল। খুব বেশি পজেসিভ হয়ে উঠল যশের প্রতি। সেখান থেকেই সম্পর্কটা নষ্ট হল'', সুমন বলেন, ''রোহিণীর সঙ্গে রেজিস্ট্রির কাগজটা ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিল যশ, তবু যশের বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদা নিয়েই সে থাকত। শবনমকে যে অপছন্দ করত যশের মা তার কারণ কিন্তু এটা নয় যে সে মুসলিম। শবনম তাদের স্টেটাসের নয়, এটাই ছিল অপছন্দের মূল কারণ। তাই এখানেও ধর্মটা কিন্তু মূল ইস্যু নয়।''
ব্যক্তিগত জীবনেও ধর্ম-জাত-পাত-ভাষা-সংস্কৃতির বিভেদ ইত্যাদি একেবারেই মানেন না সুমন। তাঁর পরিবারের উদাহরণ দিয়েই বলেন, তাঁর বউদি উত্তরপ্রদেশের মেয়ে। দাদা-বউদির বিয়ে নিয়ে কোনওদিন কোনও বাধা ছিল না।
আরও পড়ুন: কর্পোরেট কেরিয়ার ছেড়ে কীভাবে হয়ে উঠলেন অভিনেতা, গল্প শোনালেন ‘দুর্গা দুর্গেশ্বরী’-নায়ক
রোহিণীর সঙ্গে আইনি বিবাহবিচ্ছেদের পরে আপাতত শবনমের সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছে যশ। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বররে এপিসোডে দেখা যাবে যশ ও শবনমের বিয়ে। সুমন বলেন, ''আমাদের ধারাবাহিক যে মানুষকে একটি চরিত্রের ধর্মকে ভুলিয়ে দিতে পেরেছে, এটাই আমার কাছে দারুণ ব্যাপার। 'নকশিকাঁথা' অবশ্যই হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির গল্প। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দর্শকের মাথা থেকে ধর্ম ব্যাপারটা সরে গিয়েছে। কারণ 'নকশিকাঁথা' এটাই বলতে চায় যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভালোবাসাটাই আসল কথা, ধর্ম নয়।''