এতদিন দর্শক টেলিপর্দায় দেখেছেন জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস। এবার সেই ছবি মুক্তি পেতে চলেছে প্রেক্ষাগৃহে। আগামী বছর গ্রীষ্মে আসছে বনি ও শ্রাবন্তী অভিনীত এবং রাজা চন্দ পরিচালিত জি বাংলা সিনেমা অরিজিনাল 'আজব প্রেমের গল্প'। বাংলা টেলিজগতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি ভিউয়ারশিপ রয়েছে জি বাংলা-র। ঠিক কোন ভাবনা থেকে এই নতুন উদ্যোগ এবং একটি করপোরেট চ্যানেল বাংলা ছবি প্রযোজনাতে এলে তা বাংলা ছবির জগতে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, এমনই নানাবিধ প্রশ্নের মুখোমুখি জি এন্টারটেইনমেন্ট এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড-এর ইস্ট ক্লাস্টার হেড সম্রাট ঘোষ।
অনেক বাংলা ছবি তৈরি হয় টিভি চ্যানেলগুলিকে স্যাটেলাইট রাইটস বিক্রি করার জন্য। আগে একটি সাক্ষাৎকারে আপনি বলেছিলেন যে এটা একটা ফল্টি বিজনেস মডেল। সেটাকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই কি চ্যানেলের এই নতুন পদক্ষেপ?
না, আমরা চ্যালেঞ্জ কাউকে করতে চাইছি না। এটা আমাদের নিজেদের টিমের দক্ষতা বাড়ানোর একটা প্রক্রিয়া। আমরা মার্কেট লিডার চ্যানেল, আমরা নতুন নতুন উদ্যোগ যদি না নিই তো কে নেবে? এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা দুটো জিনিস করতে চাইছি, এক, আমাদের টিমের কর্মদক্ষতা বাড়ানো এবং দুই, আরও একভাবে দর্শকের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া। আমরা যখন 'সারেগামা' বা 'দাদাগিরি'-র জন্য অডিশন নিই, তখন গ্রামে-গঞ্জে দরজায় দরজায় নক করি। ওখান থেকে প্রতিভা খুঁজে বার করি। সেখানে আমরা টেলিভিশনের মাধ্যমে দর্শকের কাছে পৌঁছে গিয়েছি। এবার আমরা চাইছি সিনেমা হলগুলির মাধ্যমেও যাতে দর্শকের কাছে পৌঁছতে পারি।
আরও পড়ুন: বাংলা ধারাবাহিকে এবার বাঘ-মানুষের প্রেমের গল্প
বাংলা ফিল্মজগৎ তো এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে 'ইন্ডাস্ট্রি' স্টেটাস পায়নি। জি বাংলা সিনেমা-র এই উদ্যোগ কি কোনওভাবে বাংলা ছবির জগৎকে ইন্ডাস্ট্রি হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় সাহায্য করবে?
এটা আমাদের একটা ছোট পদক্ষেপ বাংলা ফিল্মজগতে সামান্য কিছু অবদান রাখার ক্ষেত্রে। আমি মনে করি, দিনের শেষে যদি কনটেন্ট ভাল হয়, যদি তাৎপর্যপূর্ণ হয়, মানুষ যদি রিলেট করতে পারে তাহলে কিন্তু দর্শক পছন্দ করবে। আমরা ওই বিষয়টা মাথায় রেখে এগোনোর চেষ্টা করছি। আর বাংলা ছবির জগতেও এখন খুব ভাল ভাল কাজ হচ্ছে। এই যেমন সম্প্রতি আমরা 'পরিণীতা' দেখালাম। ছবিটা নিয়ে দর্শকের কাছ থেকে খুব ভাল ফিডব্যাক পেয়েছি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, আমাদের এই উদ্যোগ একটা ছোট পদক্ষেপ। কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি কিছু ভাল কাজ করার, সব মিলিয়ে যদি আমরা বাংলা ছবির জগতে কিছুটা অবদান রাখতে পারি।
এই ছবির ডিস্ট্রিবিউশনটা কি জি স্টুডিওজ-এর মাধ্যমে হচ্ছে?
না জি স্টুডিওজ ডিস্ট্রিবিউশন করছে না। ওরা এখনও এই মার্কেটে ঢোকেনি। পরবর্তীকালে যে ঢুকবে না, সেটা বলছি না। কিন্তু এই ছবির ক্ষেত্রে আমাদের ডিস্ট্রিবিউশনটা 'শ্যাডো ফিল্মস'-এর মাধ্যমে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: টেলিপর্দার সেরা ৫ নায়ক-অভিনেতা ২০১৯
বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ডিস্ট্রিবিউশন এই মুহূর্তে একটা সমস্যা। বিগত কয়েক বছরে অনেক হল কমে গেছে। আপনার কি মনে হয় এই উদ্যোগটা অদূর ভবিষ্যতে এই ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে কোনও প্রভাব ফেলবে? এরাজ্যে নতুন হল তৈরি হবে বা পরিত্যক্ত হলগুলির পুনরুদ্ধার হবে?
যেহেতু আমরা করপোরেট, আমরা চেষ্টা করি গোটা প্রক্রিয়াটার মধ্যে যতটা সম্ভব পেশাদারিত্ব নিয়ে আসার। সেটা কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে যেমন, তেমনই নিয়ন্ত্রিত বাজেটে ছবি বানানোর ক্ষেত্রেও। বাজেট বেশি হলেই যে ছবি হিট হবে, প্রচুর ব্যবসা করবে এমনটা একেবারেই নয়। তাই বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এই বিজনেস মডেলটা মাথায় রেখেই আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে একটা সীমিত বাজেটের মধ্যে আমরা ভাল কনটেন্ট দিতে পারি। আমরা চেষ্টা করছি ডিস্ট্রিবিউশন, ছবি মুক্তির সঠিক সময় এই সবকিছুতেই একটা পেশাদারিত্ব আনতে, যাতে এই ধরনের উদ্যোগের যা যা সম্ভাবনা রয়েছে তার সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা যায়।