Mandir-Mandal in Indian politics: তারপর থেকে কয়েক দশক পেরিয়ে গেছে। আজও যদি ভারতের কোনও সদ্য ১৮ পেরনো কাউকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এদেশের রাজনীতির মূল ধারা কী? ঘুরিয়ে ফিরিয়ে উত্তর আসবে- মন্দির আর মণ্ডল (সংরক্ষণ) রাজনীতি।
গতিপথ বদলায় জাতীয় রাজনীতি
১৯৮৯ সালের নির্বাচন। তারপর মাত্র একবছরের (৩৪৩ দিন) শাসনকাল। তার মধ্যেই মন্দির আর মণ্ডল রাজনীতির পত্তন। আর, তারই দৌলতে এদেশের রাজনীতির গতিপথই বদলে গিয়েছে। ওই একবছরের শাসনকাল যাঁর ছিল, তিনি ভারতের সপ্তম প্রধানমন্ত্রী। মান্দার অঞ্চলের ৪১তম মহারাজা, বিশ্বনাথপ্রতাপ সিং। ভারতীয় রাজনীতি যাঁকে এককথায় চেনে ভিপি সিং নামে।
রাজীবের পরাজয়
তার ঠিক পাঁচবছর আগের নির্বাচনে লোকসভায় ৪০০-এর বেশি আসন পাওয়া রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বাধীন শাসকদল কংগ্রেস, ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ে। দেশজুড়ে সেই সময় বিরোধীরা স্লোগান তুলেছিল, 'গলি গলি মে শোর হ্যায়, রাজীব গান্ধী চোর হ্যায়।' কারণ, সরকারের বিরুদ্ধে বফর্স কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। বফর্স একটা কামান। এই কামান সেনাবাহিনীর ব্যবহারের জন্য কেনা হয়েছিল।
বফর্স নিয়ে প্রচার
অভিযোগ উঠেছিল, বিদেশি বিক্রেতার থেকে কমিশন খেয়ে রাজীব গান্ধী তথা কেন্দ্রীয় সরকার বাজে কামান সেনাবাহিনীর জন্য কিনেছে। এককথায় কমিশনের জন্য দেশের সুরক্ষাকে বিক্রি করে দিয়েছে। আর, সেই প্রচারের কাছেই হেরে গিয়েছিল রাজীব গান্ধীর কংগ্রেস। ১২ বছরের মধ্যে সেটা ছিল লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের দ্বিতীয় পরাজয়। যদিও পরবর্তী ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীই বারবার বফর্স কামানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছে।
সরকার ফেলে দেওয়ায় মুখ্য ভূমিকা কংগ্রেসের
১৯৭৯ সালে মোরারজি দেশাইয়ের সরকারকে ফেলে কংগ্রেস যেভাবে চৌধুরি চরণ সিং-কে ক্ষমতায় এনেছিল, আর তাঁকেও ক্ষমতা থেকে ছেঁটে ফেলেছিল, সেভাবেই ভিপি সিংয়ের সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেস চন্দ্রশেখরকে সমর্থন করেছিল। আবার, তাঁকেও ক্ষমতা থেকে ফেলে দিয়েছিল। ফলে ১৯৮৯ এবং ১৯৯১-এর মধ্যে ১৯ মাসের ব্যবধানে দুটি লোকসভা নির্বাচন এবং দু'জন প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছিল ভারত।
আরও পড়ুন- বদলে গেছে জলবায়ু! তার জন্যই এত গরম, তাপপ্রবাহ, জানালেন বিজ্ঞানীরা
রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে ভিপি সিংয়ের ষড়যন্ত্র
ভিপি সিং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে কংগ্রেসে ছিলেন। রাজীব গান্ধীর সরকারে অর্থমন্ত্রী ছিলেন। সেখানে তিনি রাজীব ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেন। এরপর তাঁকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেখানে আবার তিনি রাজীব গান্ধীর অধীনে থাকা দফতরের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন। এভাবে ক্রমাগত রাজীব বিরোধিতা বা ষড়যন্ত্রের কারণে ভিপি সিং-কে কংগ্রেস ছাড়তে বাধ্য করা হয়। ১৯৮৭ সালের ১২ এপ্রিল, ভিপি সিং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন আর কংগ্রেসও ছাড়েন।